ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমারকে তৎপর হতে বলল নিরাপত্তা পরিষদ

প্রকাশিত: ০৮:২৬, ২৫ জুলাই ২০১৮

মিয়ানমারকে তৎপর হতে বলল নিরাপত্তা পরিষদ

বিডিনিউজ ॥ সহিংসতা থেকে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা যাতে নির্ভয়ে নিজেদের বসতভিটায় ফিরতে পারে তার অনুকূল পরিবেশ তৈরির জন্যে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। সোমবার নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক নতুন বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্র্যানার বুরগেনার সম্প্রতি মিয়ানমার সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। মিয়ানমার পরিস্থিতির প্রথম প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের সামনে বক্তব্য তুলে ধরেন তিনি। সেখানে বিদ্যমান সংকট এবং পূর্বাপর পরিস্থিতির বিবরণ দেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সহকারী হাই কমিশনার ভলকার টার্ক। ইউএনডিপির এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সমন্বয়কারী এবং কান্ট্রি অফিসের লিয়াজোঁ সংক্রান্ত পরিচালক ক্লেয়ার ভ্যান ডারভিরেনও তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। বিদ্যমান সংকট এবং তার ভয়াবহতা উপলব্ধিতে নিয়ে জাতিসংঘের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা হয় সেখানে। বৈঠক শেষে নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি সুইডেনের প্রতিনিধি ওলোফ স্কুজ ও ক্রিস্টিন শ্র্যানার বুরগেনার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। বৈঠকের আলোচনা লে ধরার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তারা। স্কুজ জানান, নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপি এবং মিয়ানমারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লংঘনসহ নৃশংসতার যে অভিযোগ রয়েছে সে বিষয়ে স্বাধীন এবং স্বচ্ছ তদন্তের ওপরও জোর দেন নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা। তারা একমত হন যে, রাখাইনে বর্বরোচিত হামলায় গৃহত্যাগে বাধ্য হওয়া লোকজনসহ দেশত্যাগী রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে নিজেদের বসতিতে ফিরতে আগ্রহী হন, তেমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে মিয়ানমারকে। একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তা নিশ্চিত করার বিষয়েও নিরাপত্তা পরিষদ সদস্যরা একমত পোষণ করেন বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। রোহিঙ্গাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথ সুগম করার ক্ষেত্রেও মিয়ানমারকে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে বলে মন্তব্য করেন তারা। বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্র্যানার বুরগেনার বলেন, “মিয়ানমারের নেতারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আগ্রহী। তবে রাখাইন প্রদেশে শুধু রোহিঙ্গা এবং সরকারের মধ্যেই বিরোধ নয়, সংখ্যালঘিষ্ট এই মুসলিম জনগোষ্ঠীর সঙ্গে রাখাইন বৌদ্ধদের বিরোধ রয়েছে।” মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাশে দাঁড়ানোয় বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রশংসা করেন তিনি।
×