ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নবম-দশম শ্রেণির হিসাববিজ্ঞান

প্রকাশিত: ০৮:১১, ২৫ জুলাই ২০১৮

নবম-দশম শ্রেণির হিসাববিজ্ঞান

শিক্ষক, ধানমন্ডি আইডিয়াল স্কুল জিগাতলা, ঢাকা-১২০৯। মোবাইলঃ ০১৬৮০৫৫১৬৫৪ ই-মেইলঃ [email protected] বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম শিক্ষার্থী বন্ধুরা শুভেচ্ছা রইল, আজ তোমাদের জন্য থাকছে দ্বিতীয় অধ্যায় হতে হিসাব সমীকরণের উপর আলোচনা। হিসাব সমীকরণ জানতে হলে প্রথমে হিসাব সম্পর্কে ধারনা থাকতে হবে। তাই হিসাব কী তা শুরুতে জেনে রাখ। কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে সংঘটিত আর্থিক লেনদেন সমূহ যখন উপযুক্ত শিরোনামের অধীনে রাখা হয়, তখন তাকে হিসাব বলে। যেমন বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে পন্য ক্রয় করা হলে তা ক্রয় শিরোনামে, ব্যবসায়ে ব্যবহারের জন্য চেয়ার টেবিল ইত্যাদি ক্রয় করা হলে আসবাবপত্র শিরোনামে, কাগজ, কালি, কলম ক্রয় করা হলে মনিহারি শিরোনামে লেখা হয়। এখানে ক্রয়, আসবাবপত্র, মনিহারি ইত্যাদিকে এক একটি হিসাব বলে এবং লেখার সময় ক্রয় হিসাব, আসবাবপত্র হিসাব, মনিহারি হিসাবে লিখতে হয়। এখন জেনে রাখ হিসাব সমীকরণ কি? কোন নির্দিষ্ট সময় শেষে একটি প্রতিষ্ঠানের মোট সম্পদের পরিমান উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাস্বত্ব ও বর্হিদায়ের সমান হবে। যে সমীকরণের সাহায্যে এই সত্যতা প্রমাণ করা হয় তাকে হিসাব সমীকরণ বলে। হিসাব সমীকরণের মূল উপাদান তিনটি, যথাঃ- সম্পদ, দায় ও মালিকানাস্বত্ব। সম্পদ : সম্পদ বলতে ঐ সকল পরিসম্পদ কে বুঝায় যার আর্থিক মূল্য রয়েছে এবং যা প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন। সম্পদ কে ইংরেজিতে অংংবঃং বা সংক্ষেপে অ বলা হয়। যেমনঃ- আসবাবপত্র, দালানকোঠা, মেশিন, দেনাদার ইত্যাদি সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। দায় : প্রতিষ্ঠানের সম্পদের উপর তৃতীয় পক্ষের যে অধিকার বা দাবি তাকে দায় বলে। দায় কে ইংরেজিতে খরধনরষরঃরবং আর সংক্ষেপে “খ” বলা হয়। যেমনঃ- ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহন। মালিকানাস্বত্ব : প্রতিষ্ঠানের সম্পদের উপর মালিক পক্ষের যে অধিকার বা দাবি তাকে মালিকানাস্বত্ব বলে। মালিকানাস্বত্বকে ইংরেজিতে ঙহিবৎ’ং ঊয়ঁরঃু বা ঊয়ঁরঃু বা সংক্ষেপে “ঙঊ/ঊ” বলা হয়। মালিকানাস্বত্ত্বের চারটি উপাদান রয়েছে, যথা ঃ- মূলধন, আয়, ব্যয় ও উত্তোলন। মূলধন : প্রতিষ্ঠানের মালিক নিজ তহবিল থেকে যা কিছু ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করেন তাই মূলধন। যেমন মালিক ব্যবসায়ে নগদ টাকা বিনিয়োগ করলেন। মূলধনকে ইংরেজিতে ঈধঢ়রঃধষ বা সংক্ষেপে “ঈ” বলা হয়। আয় : যে সকল খাত হতে প্রতিনিয়ত ব্যবসায়ের অর্থ উর্পাজিত হয় তাকে আয় বলে। যেমন পন্য বা সেবা বিক্রয়, বিনিয়োগের সুদ প্রাপ্তি, কমিশন প্রাপ্তি, শিক্ষানবীশ সেলামি ইত্যাদি। আয়কে ইংরেজিতে ওহপড়সব বা সংক্ষেপে‘ও’ বলা হয়। ব্যয় : প্রতিনিয়ত যে সকল খাতে ব্যবসায়ে অর্থ খরচ হয় তাকে ব্যয় বলে। যেমনÑ বেতন হিসাব, মজুরি হিসাব, ভাড়া প্রদান ইত্যাদি। ব্যয়কে ইংরেজিতে ঊীঢ়বহংবং বা সংক্ষেপে“‘ঊী’ বলা হয়। উত্তোলন হিসাব : মালিক তার নিজ প্রয়োজনে যা কিছু ব্যবসায় হতে গ্রহণ করে তাকেই উত্তোলন বলে। উত্তোলন হিসাবকে ইংরেজিতে উৎধরিহমং বা সংক্ষেপে “উ” বলা হয়। যেমন মালিক কর্তৃক ব্যবসায় হতে নগদ টাকা, পন্য উত্তোলন। হিসাব সমীকরণটি নিন্মরূপ : অ=খ+ঊ (ঈ+জ-ঊী-উ) অ=অংংবঃং (সম্পদ সমূহ) খ=খরধনরষরঃরবং (দায় সমূহ) ঙঊ= ঙহিবৎ’ং ঊয়ঁরঃু (মালিকানাস্বত্ব) ঈ= ঈধঢ়রঃধষ (মূলধন) জ=জবাবহঁব (আয়) ঊ=ঊীঢ়বহংবং (ব্যয়) উ=উৎধরিহমং (উত্তোলন) নিম্নে উদাহরণের মাধ্যমে সমীকরণের উপর প্রভাব দেখানো হলো। মি. শোভন আহমেদ ২০১৭ ইং সালের ১লা মার্চ নগদ ১,০০,০০০ টাকা ও ৫০,০০০ টাকার আসবাবপত্র নিয়ে ব্যবসায় শুরু করলেন। এই লেনদেনটির সমীকরণের প্রভাব দেখানোর পূর্বে প্রথমে পক্ষ সমূহ চিহ্নিত করে পক্ষগুলো কোনটি কোন হিসাব তা ঠিক করে নিতে হবে। তারপর সেই অনুযায়ী সমীকরণের উপর প্রভাব দেখাতে হবে। উপরের লেনদেনটি বিশ্লেষন করলে আমরা যে পক্ষ পাই তা হলো নগদান হিসাব, আসবাবপত্র হিসাব ও মূলধন হিসাব। নগদান হিসাব হলো সম্পদ হিসাব এবং উক্ত লেনদেনের ফলে সম্পদ ( নগদ অর্থ ) বৃদ্ধি পাবে, আসবাবপত্র হিসাব হলো সম্পদ হিসাব এবং উক্ত লেনদেনের ফলে সম্পদ ( আসবাবপত্র ) বৃদ্ধি পাবে । অপর দিকে মূলধন হলো মালিকানাস্বত্ব হিসাব এবং এর ফলে মূলধন বৃদ্ধি পাবে।
×