ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় ভারি যান চলাচলে সড়ক বেহাল

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ২৫ জুলাই ২০১৮

কলাপাড়ায় ভারি যান চলাচলে সড়ক বেহাল

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২৪ জুলাই ॥ সলিমপুর থেকে নবীপুর পর্যন্ত বেড়িবাঁধ সড়কটি দীর্ঘ দুই কিলোমিটার। এলজিইডি এই সড়কটির অর্ধেক পাকা (সিলকোট) করেছে দুই বছর আগে। বাকিটা আরও আগে। সরকারী অর্থায়নে করা এ সড়কটি এখন পাকা না কাঁচা তা বোঝার উপায় নেই। শতকরা ৯০ ভাগ কার্পেটিং উঠে এখন হাঁটু সমান কাদার সড়কে পরিণত হয়েছে। এলজিইডির হিসেবে দুই কিমি সড়কের উন্নয়নে অন্তত দেড় কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। অথচ তা এখন ব্যবহার অনুপযোগী। মানুষ খালি পায়েও চলাচল করতে পারে না। অবৈধ, ছয় চাকার দৈত্যাকৃতির যান ট্রলি কিংবা হামজা ওই সড়ক দিয়ে ইটসহ ভারী মালামাল নিয়ে চলাচলে সড়কের এমন বেহাল হয়েছে। অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্গম হয়ে গেছে। পটুয়াখালীর উপকূলীয় জনপদ কলাপাড়া উপজেলা নীলগঞ্জ ইউনিয়নে এ সড়কটির অবস্থান। সেখানকার ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন মাহমুদ জানান, নবীপুর, নিজকাটা, উমেদপুর, লস্করপুর, হলদিবাড়িয়া এলাকারসহ তার ইউনিয়নের অন্তত চার কিলোমিটার পাকা সড়ক ছয় চাকার এই ট্রলিতে ইট বোঝাই করে চলাচলে ভেঙ্গে একাকার করে দিয়েছে। আর কাঁচা মাটির সড়ক তো শেষ করে দিয়েছে। তার কথায় সরকারের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা অবৈধ এই যানের কারণে এখন চলাচল অনুপযোগী হয়ে গেছে। নীলগঞ্জে অন্তত ১০টি ইটভাঁটি রয়েছে। এসব ইটভাঁটির মালিকরা সরকারের যোগাযোগ ব্যবস্থার অপূরণীয় ক্ষতি করায় সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে সাধারণ মানুষের কাছে। অন্তত ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কয়েকটি সড়কের সর্বনাশ করা হয়েছে। টিয়াখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শিমু জানান, কলাপাড়া পৌরসভা থেকে টিয়াখালী-লোন্দা সেতু পর্যন্ত পাকা সড়কটি ছয় চাকার ট্রলি (হামজা) চলাচল করায় এখন ভেঙ্গে একাকার হয়ে গেছে। কার্পেটিং তো দূরের কথা। কাদা মাটি বেরিয়ে গেছে। এখন কোন যানবাহন চলাচলের উপযোগিতা নেই। চেয়ারম্যান রিয়াজ তালুকদার জানান, ধানখালীর নোমরহাট থেকে কলেজবাজার হয়ে লোন্দা খেয়াঘাট পর্যন্ত দুই দিক থেকে প্রায় ১৯ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ পাকা সড়ক অবৈধ ট্রলিসহ ভারী যানবাহন চলাচলে এখন এটি আর সড়কের পর্যায়ে নেই। এলজিইডি কর্তৃপক্ষ জানান, এই ছয় চাকার অবৈধ (হামজা) যানের কারণে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে করা সড়কগুলো নষ্ট হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তানভীর রহমান জানান, এসব অবৈধ যান চলাচল বন্ধে কলাপাড়ার পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া রয়েছে। চৌহালীতে গাড়ি চলে হেলেদুলে সংবাদদাতা বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ থেকে জানান, রাস্তায় ভাল মানুষ চলাচল করলেও রোগী হয়ে যাবে। কারণ সড়ক জুড়ে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। গাড়ি চলে হেলেদুলে। কিছু স্থানে গাড়ি থেকে নেমে ওই অংশ পার হতে হয় যাত্রীদের। এর মধ্যে যদি সামান্য একটু বৃষ্টি হয় তাহলে তো দুর্ভোগের সীমাই থাকে না অথচ এ দুরবস্থা যেন কেউ দেখার নেই। কথাগুলো আক্ষেপের সঙ্গে জানালেন খাষপুখুরিয়া মহল্লার বাসিন্দা হাসমত আলী (৩৬)। তিনি আরও জানান, বিশেষ করে মোকার ভাঙ্গা সংলগ্ন বেইলি সেতুর দু পাশে মাটি না থাকায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে শিক্ষার্থী ও পথচারীদের। দীর্ঘদিনের এ দুর্ভোগ লাঘবে কেউ এগিয়ে আসেনি। এ দুরবস্থার চিত্র যমুনা বিধ্বস্ত চৌহালী উপজেলার বাবলাতলা থেকে মিটুয়ানী সড়কের একমাত্র বেইলি সেতুর দু পাড়ের। এলাকার নিয়মিত চলাচলকারী ভুক্তভোগীরা জানান, সড়কটি নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। বাঘুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাহহার সিদ্দিকী বলেন, এ সড়ক দিয়ে চরনাকালিয়া, বিনানই, চরছলিমাবাদ, ঘুশুরিয়া, চৌবাড়িয়া, হাটাইল ও উমারপুর ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ উপজেলা সদরে নিয়মিত চলাচল করে। এ সেতুর দু পাড়ের অবস্থা খুবই নাজুক। যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন সড়কটি উন্নয়ন নেই। বেইলি সেতুটি অপসারণ করে একটি গার্ডার ব্রিজ স্থাপনে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দ্রুত বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করা হবে।
×