ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ওয়ানডে আজ

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৫ জুলাই ২০১৮

বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ওয়ানডে আজ

মিথুন আশরাফ ॥ গায়ানায় খেলা মানেই যেন বাংলাদেশের ঝুলিতে সাফল্য লুটিয়ে পড়ে। তাহলে কী আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচেও সাফল্য মিলবে? তা মিললেই তো হয়ে গেল, বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজটা আজই জিতে নেবে। আজ দুই দলের মধ্যকার দ্বিতীয় ওয়ানডেটি গায়ানার প্রোভিডেন্ট স্টেডিয়ামে হবে। বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় ম্যাচটি শুরু হবে। ম্যাচটি জিতলেই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় হয়ে যাবে বাংলাদেশের। প্রথম ওয়ানডেতে জিতে যে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে ২০০৭ সালে বাংলাদেশ ইতিহাস গড়েছিল। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে (সুপার এইট) খেলে। দ্বিতীয় রাউন্ডে গায়ানার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারায় বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর স্বাদ পায়। এরপর ১১ বছর পর আবার গায়ানার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে খেলতে নামে বাংলাদেশ। তাতেও মিলে সাফল্য। এবার স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৬৭ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪৮ রানে হারিয়েছে। টেস্ট সিরিজ বাজেভাবে হারের পর যে দুঃসহ স্মৃতির ভূত বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল তা থেকে মুক্তি মিলে। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার মতো জয় মিলে। হারিয়ে ফেলা আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবার মতো জয় মিলে। মানসিক শক্তিও বাড়ে। চাঙ্গা হয়ে ওঠেন দলের ক্রিকেটাররা। এখন এই আত্মবিশ্বাস, মানসিক দৃঢ়তা নিয়ে আজকের ম্যাচটি জিতে গেলেই হয়। না জিতলেও সিরিজ জেতার সুযোগ থেকেই যাবে। প্রথম ওয়ানডে জিতে যে সেই সুযোগ করে রেখেছে বাংলাদেশ। আজ মাশরাফিবাহিনী জিতলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় হবে। হারলে সিরিজের আসবে ১-১ সমতা। তখন শনিবার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে হয়ে উঠবে সিরিজ ফয়সালার ম্যাচ। সেই ম্যাচটি জিতলে তখন সিরিজ জয় হবে। তবে আজকের ম্যাচটি জিতেই সিরিজ নিজেদের দখলে করে নিতে চায় বাংলাদেশ। তা সম্ভবও। যেভাবে দলের ব্যাটসম্যান ও বোলাররা টেস্ট সিরিজ হারের ক্ষত দূর করে প্রথম ওয়ানডেতে নিজেদের মেলে ধরেছেন, তাতে আত্মবিশ্বাস আছে তুঙ্গে। গায়ানার উইকেটে রান তোলা কঠিন। কিন্তু কিভাবে রান তুলতে হয়, তা তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহীম দেখিয়েছেন। এরপর বল হাতে যেভাবে মাশরাফি ও মুস্তাফিজুর রহমান জৌলুস ছড়িয়েছেন তাতে আজও জেতা সম্ভব। পরিকল্পনা ঠিকমতো কাজে লাগলেই হলো। প্রথম ওয়ানডেতে তামিম মন্থর গতিতে ব্যাটিং করেছেন। সাকিবও তাই। তবে তাদের এই ব্যাটিংই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ফল এনে দিয়েছে। তামিম শেষ পর্যন্ত ১৬০ বল খেলে ১৩০ রানে অপরাজিত থেকে ওয়ানডেতে দশম সেঞ্চুরি করে ম্যাচের নায়কও বনেছেন। সাকিবের আক্ষেপ। ৩ রানের জন্য সেঞ্চুরি হয়নি। তবে দুইজন মিলে দ্বিতীয় উইকেটে ২০৭ রানের জুটি গড়েই দলের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছেন। দ্বিতীয় উইকেটে দুইজন মিলে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েছেন। এরপর মুশফিক এসে ১১ বলে ৩০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলাতে শেষ পর্যন্ত দলের স্কোর ২৭৯ রানে গিয়ে দাঁড়ায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর। মাশরাফি জানতেন, যদি ২৮০ রান ব্যাটিং করার মতো এমন কঠিন উইকেটে করা যায়, তাহলেই জয় আসবে। ক্রিস গেইলের মতো হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান যখন অনেক কষ্টে ৬০ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলেন তখনই বোঝা হয়ে যায়; ব্যাটিং করা গায়ানার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে কত কঠিন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের জন্য আরও কঠিন হয়ে ওঠে মাশরাফি (৪/৩৭) ও মুস্তাফিজের (২/৩৫) অসাধারণ বোলিংয়ে। শেষ পর্যন্ত ২৩১ রানের বেশি করতেই পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আজও যদি এমন খেলা দেখাতে পারেন বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যান-বোলাররা তাহলে সিরিজ জেতা নিশ্চিতই হয়ে যাবে। তাছাড়া গায়ানায় সাফল্যের ইতিহাস তো সঙ্গে আছেই। সিরিজ জয় কী তাহলে আজই হয়ে যাবে?
×