ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির দিন ধার্য

তারেক মাসুদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের রায় স্থগিত করেনি চেম্বার জজ

প্রকাশিত: ০৪:৫৩, ২৩ জুলাই ২০১৮

তারেক মাসুদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের রায় স্থগিত করেনি চেম্বার জজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মানিকগঞ্জে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ও পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেনি আপীল বিভাগের চেম্বারজজ আদালত। ফলে ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রায় বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। একই সঙ্গে বিষয়টি শুনানির জন্য আপীল বিভাগের নিয়মিত ও পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়েছেন চেম্বারজজ আদালত। আগামী ৮ অক্টোবর বিষয়টি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে বাস মালিক কর্তৃপক্ষের করা আপীল আবেদনের শুনানি রবিবার আপীল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর চেম্বারজজ আদালতে অনুষ্ঠিত হয়। আদালতে বাসমালিকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। নিহত তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সারাহ হোসেন। রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিকী। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঘিওর উপজেলার পুখরিয়ায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। ওই দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ ও এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিশুক মুনীরকে বহনকারী মাইক্রোবাসের সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স পরিবহনের একটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীরসহ ৫ জনের প্রাণহানি ঘটে। আহত হন ওই মাইক্রোবাসে থাকা তারেকের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, চিত্রশিল্পী ঢালী আল-মামুন ও তার স্ত্রী দিলারা বেগম জলি এবং তারেকের প্রোডাকশন ইউনিটের সহকারী সাইদুল ইসলাম। ২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জের ওই সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে তারেক মাসুদের পরিবারকে চার কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫২ টাকা দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। রায়ের কপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়। এর মধ্যে বাসের (চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স) তিন মালিক দেবেন চার কোটি ৩০ লাখ ৮৫ হাজার ৪৫২ টাকা, বাসচালক জমির উদ্দিন দেবেন ৩০ লাখ টাকা এবং রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি দেবে ৮০ হাজার টাকা। তিন মালিক সমান হারে টাকা দেবেন। ওই টাকা ক্যাথরিন মাসুদ, নিহতের ছেলে নিষাদ মাসুদ ও বৃদ্ধা মা নুরুন নাহার পাবেন বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। হাইকোর্টের বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি কাজী মোঃ ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রায়টি দেন। ২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নিহতদের পরিবারের সদস্যরা মানিকগঞ্জ জেলা জজ আদালতে মোটরযান অর্ডিন্যান্সের ১২৮ ধারায় বাসমালিক, চালক ও ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন। পরবর্তীতে সংবিধানের ১১০ অনুচ্ছেদ অনুসারে মামলা দুটি হাইকোর্টে বদলির নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেন বাদীরা। নিম্ন আদালত থেকে মামলা দুটি স্থানান্তরে সংবিধানের ১১০ অনুচ্ছেদ অনুসারে হাইকোর্টে ওই আবেদন দুটি করা হয়। তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ এবং মিশুক মুনীরের স্ত্রী কানিজ এফ কাজী ও তাদের ছেলে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর হাইকোর্টে ওই দুটি আবেদন করেন। যার প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ৩ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে সংবিধানের ১১০ অনুচ্ছেদ অনুসারে মামলা দুটি কেন উচ্চ আদালতে বদলি করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। পাশাপাশি মামলা দুটির নথি তলব করা হয়।
×