ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজউইকের বিশ্লেষণ

ইসরাইলী হামলায় হুমকির মুখে সিরিয়ার শান্তি-উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ২৩ জুলাই ২০১৮

  ইসরাইলী হামলায় হুমকির মুখে  সিরিয়ার শান্তি-উদ্যোগ

সিরীয় সামরিক বাহিনী রাশিয়ার সহযোগিতায় এক আক্রমণ অভিযানে বিদ্রোহীদের কাছ থেকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সফলতার সঙ্গে পুনরুদ্ধার করেছে। সিরিয়ার অন্য এক সহযোগী ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিবেশী ইসরাইলের আক্রমণ অভিযান প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে পারে এমন একটি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করতে সম্মতি প্রকাশ করেছে। -নিউজউইক। সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর দ্রুত পতন হয়েছে এবং দেশের চূড়ান্ত বিদ্রোহী অধিকৃত ঘাঁটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ দারা ও কুনিত্রার যে কোন একটিতে সিরীয় সৈন্যদের অভিযানে গুণগত অগ্রগতি হয়েছে বলে শুক্রবার ঘোষণা করেছে সিরীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এ জয়ে সিরীয় সামরিক বাহিনী ইসরাইল-অধিকৃত গোলান মালভূমিসংলগ্ন ডি ফ্যাক্টো সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে। ইসরাইল ও কয়েকটি আরব দেশের মধ্যে ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে এ মালভূমি দখল করে নেয় তেলআবিব। ইসরাইল ও সিরিয়া বাস্তবত এখনও যুদ্ধে জড়িত। পারস্পরিক পার্টনার রাশিয়া ১৯৭৪ সালের যুদ্ধবিরতি তত্ত্বাবধানের মধ্য দিয়ে তাদের মধ্যে নতুন করে সংঘাত সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা লাঘবের চেষ্টা করেছে। ইসরাইল পরবর্তীতে সিরীয় গৃহযুদ্ধে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার দাবি করেছে। কিন্তু রিপোর্ট অনুসারে ইসরাইল কয়েকটি বিদ্রোহী গ্রুপের প্রতি সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে এবং ইরানও এর সহযোগীদের সংশ্লিষ্ট সিরীয় সামরিক অবস্থানের বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করেছে। দুপক্ষের বিমান বাহিনীর সদস্যদের পারস্পরিক হস্তক্ষেপ ছাড়া তাদের সংশ্লিষ্ট রেখা মেনে চলার অনুমতি দেয়া হবে। ইসরাইল ও প্রতিদ্বন্দ¦ী আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ১৯৭৩ সালের যুদ্ধই হচ্ছে সর্বশেষ বড় যুদ্ধ। ইসরাইলী সামিরক বাহিনী ১৯৮০ সালের পার্শ্ববর্তী লেবাননে চলমান গৃহযুদ্ধে জড়িত হয় এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চল অধিকার করে নেয়। এর প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে দাঁড়ায় এক নতুন শক্তিশালী শত্রু হিজবুল্লাহ। লেবাননের ১৫ বছরের গোষ্ঠীগত সংঘাতের অন্যতম গোষ্ঠী শিয়া মুসলিম আন্দোলনের প্রতিষ্ঠা হয় ইরানের সমর্থনে। এ গোষ্ঠী ইসরাইলী বাহিনীকে উচ্ছেদ করার চেষ্টার পুরোভাগে রয়েছে এবং ২১ শতকেও ইসরাইলের সঙ্গে সংঘাত অব্যাহত রেখেছে। ইসরাইল লেবাননে ব্যাপকভাবে সশস্ত্র হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের হস্তক্ষেপ যুক্তিসঙ্গত করার জন্য জাতীয় নিরাপত্তার কথা বলে এবং ২০০৭ সালে একটি সন্দেহজনক সিরীয় পরমাণু চুল্লির ওপর বিমান হামলা চালায়। ২০১১ সালে বিদ্রোহের পর সিরিয়ায় ক্রমবর্ধমানভাবে জড়িত হয়ে পড়ে ইসরাইল। রাশিয়া ২০১৫ সালে হস্তক্ষেপ করার মধ্য দিয়ে এ সংঘাতকে উল্টো দিকে বইতে সহায়তা করেছে এবং তখন বিশেষভাবে জড়িত হয় ইসরাইল। ইসরাইল ইরান, হিজবুল্লাহ বা অন্য ইরান সমর্থিত গ্রুপগুলোর অধিকৃত অঞ্চলগুলোয় বোমাবর্ষণ শুরু করে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এ হামলা বৃদ্ধি ও ব্যাপকতা পায়। রাশিয়ান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা দু’পক্ষের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে উভয় পক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করেছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন হেলসিংকিতে সোমবার তাদের প্রথম পুরো দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর তারা সিরিয়ার ওপর তাদের সংশ্লিষ্ট অবস্থানে গুরুত্বপূর্ণ অভিন্ন ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন বলে দৃশ্যত মনে হয়েছে। সন্দেহজনক সিরীয় ড্রোন গত সপ্তাহে ইসরাইল নিয়ন্ত্রিত ভূমিতে প্রবেশের পর বিমানটি গুলি করে ভূপাতিত করা হয়। ইসরাইল প্রত্যন্ত উত্তরে আলেপ্পোতে আরও বিমান হামলা চালায়। অধিকৃত গোলান মালভূমি সাম্প্রতিক উত্তেজনার উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে রাশান এ্যারোস্পেস ফোর্সেস সমর্থিত সিরীয় সরকারী সৈন্যরা সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে দেশের অবশিষ্টাংশ মুক্ত করছে। রুশ ফেডারেশন সমর্থিত সিরীয় কর্তৃপক্ষ তার অঞ্চলগুলোতে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে এবং অবকাঠামো গড়ে তুলছে। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মিখাইল মিজিনটশেভ শুক্রবার সিরিয়ার দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের পরিস্থিতি ব্রিফিংয়ের সময় বলেছেন, রুশ সামরিক পুলিশ নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করছে।
×