ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

সুন্দরের আবাহনে শুরু জাতীয় নৃত্য প্রতিযোগিতা

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ২২ জুলাই ২০১৮

সুন্দরের আবাহনে শুরু জাতীয় নৃত্য প্রতিযোগিতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাজছে নূপুরের নিক্কন। নানা রঙ্গের পোশাকে হাজির হয়েছে আগামী দিনের নৃত্যশিল্পীরা। মিউজিকের সঙ্গে তাল রেখে মেলে ধরছে নানা আঙ্গিকের নৃত্যশৈলী। প্রখ্যাত ও প্রতিষ্ঠিত নৃত্যশিল্পীদের সামনে শিশু-কিশোররা পরিবেশন করছে রকমারি ধারার নাচ। কেউ বা পরিবেশন করছে শাস্ত্রীয় আঙ্গিকের কত্থকনৃত্য, কেউ বা আবার উপস্থাপন করছে দেশজ ধারার লোকনৃত্য। খুদে শিল্পীরা উজাড় করে দিচ্ছে নিজের সবটুকু শেখাকে। শনিবার এমন সুন্দর দৃশ্যকল্পের দেখা মেলে শিল্পকলা একাডেমির এক ও দুই নম্বর মহড়া কক্ষে। উপলক্ষ্য ছিল বয়স ও বিষয়ভিত্তিক জাতীয় নৃত্য প্রতিযোগিতা। সারা দেশের শিশু-কিশোর ও তরুণ নৃত্যশিল্পীদের নিয়ে যৌথভাবে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থা ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। ছয় দিন ধরে চলবে প্রতিযোগিতার প্রাথমিক বাছাই ও চূড়ান্ত পর্ব। শনিবার সকালে একাডেমির মহড়া কক্ষের সামনের লবিতে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন হয়। ফুলের মালা কেটে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী লায়লা হাসান, জিনাত বরকতউল্লাহ, আমানুল হক ও গোলাম মোস্তফা খান। তাদের সঙ্গে ছিলেন নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মিনু হকসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। উদ্বোধনী পর্বে নৃত্যগুরু রাহিজা খানম ঝুনর প্রতিকৃতিতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয় গওহর জামিলসহ প্রয়াত বরেণ্য নৃত্যশিল্পীদের। সংস্থার সভাপতি নৃত্যশিল্পী মিনু হক বলেন, এ বছর প্রতিষ্ঠার ৪০ বছরে পদার্পণ করেছে নৃত্যশিল্পী সংস্থা। এ উপলক্ষে বছরব্যাপী চলমান কর্মসূচীর মাঝে আমাদের নিয়মিত আয়োজন এই নৃত্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সে কারণে প্রতিযোগিতাটি হয়ে উঠেছে আরও বর্ণিল। আর নৃত্যচর্চার সঙ্গে সম্পৃক্ত নবীন শিল্পীদের জন্য এই প্রতিযোগিতা একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। সারা দেশের প্রতিযোগীরা এতে অংশ নেয়ার সুযোগ পায়। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের সামনে তারা নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ পায়। সারা বছর চর্চা করা নাচকে উপস্থাপন করে গুরুদের সামনে। নতুন এই পরিবেশটি জমা হয় তাদের অভিজ্ঞতার ঝুলিতে। ঘটে আত্মোন্নয়ন। এভাবেই নতুনদের জন্য ট্রায়াল হিসেবে কাজ করে এই প্রতিযোগিতা। এ বিষয়ে প্রতিযোগীরা খুব সিরিয়াস থাকলেও আমরা চাই স্বাভাবিকভাবে অনেকটা খেলাচ্ছলেই যেন এগিয়ে যায় প্রতিযোগিতাটি। প্রতিযোগিতাটি আয়োজনের পরিচালনায় রয়েছেন নৃত্যশিল্পী নিলুফার ওয়াহিদ পাপড়ি। তিনি জানান, ঢাকা বিভাগের পাশাপাশি সংস্থার শাখার মাধ্যমে একযোগে সারা দেশে চলছে প্রতিযোগিতা। ৬ থেকে ২৫ বছরের শিল্পীদের তিনটি গ্রুপে ভাগ করে একক ও দলীয়ভিত্তিতে মোট আটটি বিষয়ের ওপর অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রতিযোগিতা। একক পরিবেশনার বিষয়ের মধ্যে রয়েছেÑ লোকনৃত্য, সৃজনশীল নৃত্য, মনিপুরী, কত্থক, ভরতনাট্য ও ওড়িশি। দলীয়ভিত্তিক প্রতিযোগিতায় রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক পরিবেশনা ও দলীয় লোকনৃত্য। ২৩ জুলাই পর্যন্ত চলবে প্রাথমিক বাছাই পর্ব। প্রাথমিকভাবে প্রতিটি বিষয় থেকে পাঁচজন নির্বাচিত হবে। এরপর সারা দেশের প্রাথমিক পর্যায়ের নির্বাচিত শিল্পীদের নিয়ে ২৬ থেকে ২৮ জুলাই শিল্পকলার মহড়া কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে চূড়ান্ত বাছাই পর্ব। এ পর্বে প্রতিটি বিষয় থেকে দশজন নির্বাচিত হবে। নিবন্ধনের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের নিয়ে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চলবে প্রতিযোগিতা। ২৯ জুলাই আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত দশজনকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। হিজড়া সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ॥ সরকার স্বীকৃতি দিলেও যে সমাজে বসবাস করতে হয়, সে সমাজের মানুষের দ্বারা বৈষম্য ও নির্যাতনের স্বীকার হয় তৃতীয় লিঙ্গের মানুষগুলো। তাই হিজড়া সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে, সাধারণ মানুষের মানসিকতা পরিবর্তনের পাশাপাশি প্রয়োজন হিজড়া জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন প্রতিভার মূল্যায়ন। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গ্রীন রোডের রি-থিংকের নিজস্ব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সাংস্কৃতিক পরিশেনায় নিজেদের প্রতিভার স্বাক্ষর খবেন হিজড়া সম্প্রদায়ের শিল্পীরা। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সমাজ সেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক গাজী নূরুল কবির। উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক মঈনুল আহসান সাবের, মোস্তফা কামাল এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সংগীতা ইমাম। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রি-থিংকের পরিচালক লুলু-আল-মারজান।
×