ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

স্টেটসম্যানের বিশ্লেষণ

ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক কে হলেন লাভবান

প্রকাশিত: ০৪:৩৮, ২২ জুলাই ২০১৮

ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক কে হলেন লাভবান

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ নেতা ভøাদিমির পুতিনের মধ্যে গত সপ্তাহে হেলসিঙ্কিতে যে শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো তার লাভক্ষতি নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এখনও চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। এই দুই শীর্ষ নেতাদের মধ্যে আলোচনায় কে কতটুকু লাভবান হলোÑ বিশ্বই বা কতটুকু উপকৃত হলো এ নিয়ে রাজনীতি সচেতন মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। নিউ স্টেটসম্যান। ট্রাম্প নিজে বৈঠকের সাফল্য নিয়ে তার টুইট বার্তায় দারুণ আশাবাদী বক্তব্য প্রকাশ করেছেন। তার ওভাল অফিস মুখপাত্র সারা হাকাবে স্যান্ডার্স ও তার কথার প্রতিধ্বনি করে বলেছেন০ ‘সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হলো’- সেই সঙ্গে তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের বরাত দিয়ে ঘোষণা করা হয়েছে যে, ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে যুক্তরাষ্ট্র সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, কোন সহকারী বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার উপস্থিতি ও এজেন্ডা ছাড়াই পুতিনের সঙ্গে একান্ত বৈঠক যার কোন দলিল যুক্তরাষ্ট্রের হাতে নেই- কিন্তু রুশ পক্ষের কাছে থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। সব কিছু নিয়ে শুধু ডেমোক্র্যাটরা নয়, রিপাবলিকানরাও সমালোচনা মুখর হয়েছে। এতদসত্ত্বেও ট্রাম্প, জন বোল্টন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও পুতিনের সঙ্গে বৈঠককে বেশ ফলপ্রসূ বলে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু বিশ্বের রাজনীতি সচেতন মহল এটিকে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত কূটনৈতিক প্রচেষ্টার খামখেয়ালিপূর্ণ প্রকাশ বলে বর্ণনা করেছেন। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের খুব একটা অর্জন হয়নিÑ বরং রুশ নেতা ভøাদিমির পুতিনের কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক বিজয় অর্জিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে নিউ স্টেটসম্যানে, ইউনভার্সিটি অব বার্মিং হামের রিসার্চ ফেলো এসটার সিমন তার এক নিবন্ধে বলেন, জন এফ কেনেডি, নিক্সন, জিমি কার্টার, জর্জ বুশ এবং বিল ক্লিনটনসহ অনেকেই নিজস্ব রাজনৈতিক স্বার্থে তাদের পররাষ্ট্রনীতিকে ব্যবহার করেছেনÑ কিন্তু ট্রাম্পের মতো কেউ এত আনাড়িপনা করেননি। ট্রাম্পের অনুসৃত পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে দীর্ঘদিনের মিত্র দেশসমূহকে অবজ্ঞা, হুমকি ও বাহুবল প্রদর্শন করেছেন। ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর উদ্দেশে তিনি রীতিমতো তাচ্ছিল্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন। গত সপ্তাহে ট্রাম্প সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে এই মর্মে হুমকি দেন যে, তারা যদি ন্যাটোতে সামরিক বরাদ্দ না বাড়ায় তবে যুক্তরাষ্ট্র জোট থেকে তার নাম প্রত্যাহার করতে পারে। এতে সত্তর বছর ধরে কার্যকর এই জোটের ভাঙ্গন সন্নিকটে বলে অনেকের আশঙ্কা। ন্যাটো জোট মূলত সম্ভাব্য রুশ হামলা মোকাবেলার জন্য গঠিত হয়। ইউরোপীয় ভূখণ্ড রক্ষার কাজে এই জোট কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে বলে ধারণা করা হয়। এই জোটের পিছনে সবচেয়ে বেশি সামরিক রসদ যোগান দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এখন নিজ দেশের স্বার্থরক্ষার কথা বলে যুক্তরাষ্ট্র যদি জোট থেকে সরে আসে- তার সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে রাশিয়া।
×