মালয়েশিয়ায় তিন মাস আগে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে (৯ মে) প্রবীণ রাজনীতিবিদ ডক্টর মাহাথির বিন মোহাম্মদ বিপুল ভোটে জিতে ফের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। নির্বাচনের বেশ কিছু তাৎপর্য রয়েছে। প্রথমত. মাহাথিরের পূর্বসূরি প্রধানমন্ত্রী নজিব রাজাক ছিলেন তারই আশির্বাদপুষ্ট। তার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়ে মাহাথির কারারুদ্ধ সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে হাত মেলান। অথচ এই আনোয়ার ইব্রাহিমকে তিনিই (মাহাথির) ক্ষমতায় থাকাকালে কারাগারে পাঠান। মাহাথিরের বর্তমান বয়স ৯৩ বছর। পৃথিবীর সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা হিসেবে এখনও তার কর্মক্ষমতা সকলকে বিস্মিত করে। এ নিয়ে আল জাজিরা চলতি সপ্তাহে বিভিন্ন প্রশ্ন নিয়ে নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর মুখোমুখি হয়। এ সব প্রশ্নের মধ্যে আনোয়ার ইব্রাহিমের দলের সঙ্গে তার বিতর্কিত জোট গঠন নজিব রাজাক প্রসঙ্গ এবং মালয়েশিয়ার ভবিষ্যত অর্থনৈতিক কাঠামোসহ অন্যান্য বিষয় স্থান পায়। মাহাথির মোহাম্মদ প্রধানমন্ত্রী পদে ক্ষমতাসীন হওয়ার পরপরই নজিব রাজাকের আত্মসাতকৃত ধনরত্নের সন্ধানে পুলিশী অভিযান পরিচালিত হয়। এতে নজিব ও তার স্ত্রীর নামে গচ্ছিত বিপুল পরিমাণ ধনরতœ ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া যায়। পরে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে নজিব জামিনে রয়েছেন। তবে তাদের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি মাহাথির মোহাম্মদকে কটাক্ষ করে তাকে মালয়েশিয়ার এক নম্বর অভিনেতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এ প্রসঙ্গে আল জাজিরাকে মাহাথির বলেন, রাজাকের মতো নানা ধরনের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া একটি লোককে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য শত্রু-মিত্র, পক্ষ-বিপক্ষের সবাইকে নিয়ে জোটবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল। অভিযোগ আছে রাজাক বিপুল পরিমাণ রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাত করেছেন। তিনি যে কয়েক বিলিয়ন রিঙ্গিত সরকারী কোষাগার থেকে সরিয়ে ফেলেছেন তার প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট দিয়েছে। তাই ‘কিছুই হয়নি’ বলে আমরা এসব উপেক্ষা করতে পারি না। কারণ সমগ্র বিশ্ব এটিই বিশ্বাস করে। তাই এসব অভিযোগের কোন ভিত্তি আছে কী না সে বিষয়ে আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা আমার জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছে।