সুজন হাজারীর দুটি কবিতা
আঁধারে আলোয় শব্দের ফুল
চলতি পথে সাঁতার হাত পা দাপাদাপি গাছ পাতা কাঁপে।
ফসলের মাঠে কারুময় সতরঞ্জি দোলে সবুজের বুক
চিরে ছুটেছে নদী নালা। জলবাসরে জলকণ্যা মাছেরা
গোঁয়ার বানের উজানে উছলায়।
অরণ্য আঁধারে শব্দদানা তসবিহ গোনা এবাদতে
মশগুল কবি। নদী চরাটে গাই বাছুর চরে, বনের
পক্ষীকুল বেসুরে কোরাস গায়। উঠোনে কাক শালিক
দোয়েল লাল ঝুটি মোরগ রুটিনে ডাকে পোল্ট্রি খামারে।
কবিতা বালিকার দৌড়ে সকাল দুপুর গড়িয়ে সাবিত্রী
সন্ধ্যায় ছন্দের মাতম। সপ্তর্ষি নক্ষত্রে জ্বলে জলবসন্ত
সাদা মেঘের ভেলায় সতী বেহুলার পাশে লখিন্দর ।
ঈশ্বরের জাদুকাঠির ছোঁয়ায় নিসর্গের সৌন্দর্য কেড়ে
হরিনাথ ঠাকুমার ঝুলি ভরে। কালবেলায় প্রসবের
যন্ত্রণায় শিল্পীরা ছটফট কাতরায়।
বোধের কারফ্যু ভেঙ্গে ¯্রােতের ঢল নামে।
রজস্বলা প্রসূতির জরায়ু ছিঁড়ে রক্তপাত
আঁধারে আলোয় শব্দের ফুল ফোটে।
** স্লোগানের গান
যাত্রীরা ট্রেনের দীর্ঘ অপেক্ষায়
হুইশেল বাজে ট্রেন প্লাটফর্ম ছাড়ে
তৃতীয় বিশ্বের সদাগর সরকারে
আসে আর যায়
যীশুর ক্রশে বিদ্ধ শ্রেণিহীন আমৃত্যু কাতরায়।
জসীম ম-লের জীবনের রেলগাড়ি চড়ে
শ্রমিক মজুর কৃষকের ঢেরায় পৌঁছাই
উৎপাদন বেড়েছে ঢের
মহাজনের ভা-ারে মজুদ উথলায়।
অন্নভাবে ভাঁড়ার খালি ক্ষুধিতের চিৎকারে
আকাশ বাতাস থমথমে ভারি
নাংটা শিশুরা রাস্তায় মিছিলে উঠছে দাবি
অন্ন বস্ত্র শিক্ষা চিকিৎসা বাসস্থান চাই।
স্লোগানের গান মুখেমুখে ফিরে
মুক্তি যুদ্ধে চেতনা ঘিরে
এসো বন্ধুরা মিছিলে যাই।
কোরাসে সুর মিলে মুক্তির গান গাই
শোষণ শাসনের অবসান চাই
শ্রেণি শত্রুর বিনাশে পরিত্রাণ পাই।
** নীল রক্তদাতা
আতাতুর্ক কামাল পাশা
নীল রক্ত বয়ে যায় প্রশান্ত সাগরে
আজীবন সংঘর্ষ ওদের দুজনে দুজনে তবু
জানা আছে জানা আছে র্যমেসিস জন্মলগ্ন থেকে
প্রতিদিন সুপ্রভাতে অসমাপ্ত খাতা খুলে বের করে আনা
মানচিত্র দেখে ফের অশ্বারোহী ছোটে গিরিখাতে
থেমে নেই থেমে নেই চলে পথ চলা
দিনের পথের শেষে পামীর ছাদেতে
সারারাত ধুপ ধুনা জ্বেলে
দূর পাহাড়ের বুকে প্যাগোডায় তোলে ডিঙ ডঙ
নীল রক্ত বয়ে যায় প্রশান্ত সাগরে
তবু তার দেখা নেই কোন মেরু কোন বালুচরে
কখনো ঝটিকা ধুলো যদি খুলে ফেলে দেয় কাঁচুলি তাহার
অপরূপা পরী দেখে খেয়ালি চিবুক তুলে সক্রেটিস যুবা
উঠে বসে পানসীতে চেয়ে থাকে নীলনদী বুকে
প্রশান্ত সে হাসি
এখনো আনন্দ ফুটপাথ ধরে র্যমেসিস যুবা
হেঁটে হেঁটে চলে যায় পেপারে বিজ্ঞপ্তি খোঁজে নীল রক্তদাতা
** উপহার
নাসির আহমেদ দুর্জয়
বুকের মধ্যে একশ বুলেটের ক্ষত
উপরে আমার মিহি সুঁতোর কারুকাজ
স্্েরাত থেমেছে রক্তনালীতে
সময় এখন নিখোঁজ হবার
আহ! বৃথাই খুঁজতে যেও না আবার
একশ বুলেটই তোমার উপহার
শীর্ষ সংবাদ: