ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের আগাম জামিন নিয়ে প্রশ্ন

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২০ জুলাই ২০১৮

সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের আগাম জামিন নিয়ে প্রশ্ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মোঃ জয়নুল আবেদীনকে উচ্চ আদালতের দেয়া আগাম জামিন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ বিষয়ে জয়নুল আবেদীনের আইনজীবীকে ব্যাখ্যা দিতে বলে মামলায় রায় ঘোষণার জন্য পুনরায় ২৩ জুলাই দিন ধার্য করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ থাকলেও বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি ড. কেএম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি এ্যার্টনি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। এ সময় আদালত তার আইনজীবীর কাছে জানতে চান মামলা ছাড়া আগাম জামিন হয়েছে এমন নজির আছে কি না? অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মোঃ জয়নুল আবেদীনের আগাম জামিন নিয়ে জারি করা রুল খারিজের ওপর রায় না দিয়ে বৃহস্পতিবার এমন প্রশ্ন করেন হাইকোর্ট। এর আগে গত ১০ জুলাই মামলাটিতে উভয়পক্ষের রুল শুনানি শেষ হয়। শুনানি শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য গত বৃহস্পতিবার দিন নির্ধারণ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় (কজলিস্ট) ৩ নম্বর ক্রমিকে রাখা ছিল। কিন্তু রায় ঘোষণার দিন নির্ধারিত থাকলেও সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের আগাম জামিন নেয়া রুল খারিজের বিষয়ে কোন রায় দেননি আদালত। তবে আদালত সাবেক বিচারপতির আইনজীবী ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের কাছে জানতে চান, ‘মামলা ছাড়া আগাম জামিন হয়েছে, এমন নজির আছে কি না? আদালতের প্রশ্নের জবাবে কোন উত্তর দেননি ওই আইনজীবী। দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আদালতকে বলেন, ‘তার (সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীন) বিরুদ্ধে রেগুলার কোন মামলা নেই। মামলা না থাকলে জামিন কীভাবে হয়?’ এ সময় ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন আদালতকে বলেন, ‘মামলা না থাকলে আগাম জামিনে আদালতের কোন নজির আছে কি না, তা খুঁজে দেখার জন্য সময় চাই।’ এরপর আদালত এ মামলায় সময় মঞ্জুর করে আগামী ২৩ জুলাই রায়ের জন্য পুনরায় দিন ধার্য করেন। ওইদিন মামলাটি রায়ের জন্য কার্যতালিকায় (কজলিস্ট) প্রথমে থাকবে বলে আদালত জানান। প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ১৮ জুলাই সম্পদের হিসাব চেয়ে সাবেক এই বিচারপতিকে নোটিস দেয় দুদক। পরে দুদকের দেয়া নোটিসের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তিনি ওই বছরের ২৫ জুলাই হাইকোর্টে একটি রিট করেন। রিটটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ হয়ে যায়। এরপর ২০১০ সালের ২৫ অক্টোবর বিচারপতি জয়নুল আবেদীনকে আরও একটি নোটিস দেয় দুদক। পরে ওই বছরের ৩ নবেম্বর তিনি এ বিষয়ে দুদকে তথ্য জমা দেন। দীর্ঘদিন পরে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে তার কাছে সম্পদের ব্যাপারে ব্যাখ্যা চায় দুদক। এরপর তিনি ব্যাখ্যা দেন। ওই বছরের জুনে একটি পত্রিকায় ওই বিচারপতির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরবর্তী সময়ে তিনি গ্রেফতার ও হয়রানির আশঙ্কা থেকে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। এরপর ২০১৭ সালের ১০ জুলাই হাইকোর্ট তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত জামিন দেন। একইসঙ্গে কেন তাকে স্থায়ী জামিন দেয়া হবে না, তা জানতে রুল জারি করেন। জারি করা ওই রুলের বিরুদ্ধে দুদক আপীল বিভাগে আবেদন করে। আপীল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের জারি করা রুল দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বলেন। আদেশ অনুযায়ী রুল শুনানি শুরু হয়।
×