ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি উৎসবের মাধ্যমে তারুণ্যের আবাহন

প্রকাশিত: ০৬:১০, ২০ জুলাই ২০১৮

সংস্কৃতি উৎসবের মাধ্যমে তারুণ্যের আবাহন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের কিশোর ও তরুণ সমাজকে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক করে গড়ে তুলতে নানমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। তারা যাতে মাদকাসক্ত ও জঙ্গীবাদ থেকে দূরে থেকে নিজেকে সম্পন্ন মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যেতে পারে, তাদের মধ্যে সুকুমারবৃত্তির অনুশীলনসহ সাভাবিক জীবন গড়ার উপাদান চালিকাশক্তি হিসেবে প্রতীয়মান হয়- এ জন্য তাদের সংস্কৃতিবান করে গড়ে তুলতে সরকার বদ্ধপরিকর। শিক্ষার্থীদের মধ্যে একদিকে দেশপ্রেম, মানবতাবোধ, ন্যায়পরায়ণতা, সৎ আচরণ ও সহমর্মিতাসহ মানবিক গুণাবলি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিকাশ এবং অপরদিকে মানবদক্ষতা সৃষ্টির লক্ষ্যেও নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। কিশোর ও তরুণদের সংস্কৃতিমনস্ক করে গড়ে তুলতে এই প্রথম দেশব্যাপী শুরু হচ্ছে সাংস্কৃতিক উৎসব। এর মধ্যে রয়েছে দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে সংস্কৃতিচর্চা কার্যক্রম পরিচালনা, সর্বস্তরের জনগণের মাঝে সাংস্কৃতিক জাগরণ সৃষ্টি, ধারণ, লালন ও সম্প্রসারণ। এ লক্ষ্যে দেশের ৬৪টি জেলায় একযোগে সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী এ উৎসব। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ উৎসব সহযোগিতায় রয়েছে জেলা প্রশাসন, শিল্পকলা একাডেমি ও জেলা তথ্য অফিস। সাভার কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণে আজ শুক্রবার বিকেল ৪টায় ‘সৃজনে উন্নয়নে বাংলাদেশ’ শীর্ষক সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজন কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সব জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। স্থানীয় শিল্পী, কবি ও সাহিত্যিকদের অংশগ্রহণে এই উৎসব হচ্ছে। যেসব জেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক চর্চা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে সেসব বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ নেয়া ছাত্রছাত্রীদের এই অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার সুযোগ রয়েছে। উৎসবে স্থানীয় শিল্পীরা রবীন্দ্র ও নজরুল সঙ্গীত, আধুনিক ও দেশাত্মবোধক গান, কবিতা আবৃত্তি, একক অভিনয়, পল্লীগীতি, লালনগীতি, লোকগীতি, জারি, সারি ও মুর্শিদী গান ছাড়াও আঞ্চলিক গান পরিবেশন করবেন। এছাড়া স্থানীয় সংস্কৃতিকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং ফুটিয়ে তোলে, এমন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে উৎসবে প্রাধান্য দিয়ে পরিবেশনের চেষ্টা করা হবে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালীন সরকারের জনকল্যাণমূলক ও উন্নয়ন কর্মকা-ের ওপর নির্মিত বিভিন্ন ভিডিও তথ্যচিত্র প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হবে। এ সাংস্কৃতিক উৎসব সফলভাবে আয়োজনের মাধ্যমে দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড আরও বিকশিত হবে এবং কিশোর-তরুণ সমাজসহ সর্বস্তরের জনগণ বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হবে। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে সরকারের জনকল্যাণমূলক ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কেও জনগণকে অবহিত করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদমুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনের লক্ষ্যে ভবিষ্যত প্রজন্মকে সংস্কৃতিমনস্ক মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে এ আয়োজন। ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে দেশে সুস্থ সংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে দেশের সকল জেলায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি নির্মাণ, দেশবরেণ্য কবি সাহিত্যিকদের নামে স্মৃতি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রভৃতি। এছাড়া সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় উপজেলা পর্যায়ে শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা, মুক্তমঞ্চ স্থাপন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে কেন্দ্র করে সাংস্কৃতিক বলয় প্রতিষ্ঠা ও প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে হাতিরঝিলে ঢাকা অপেরা হাউজ (ঢাকা সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স) নির্মাণের পরিকল্পনাসহ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। বর্তমান সরকার রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের সন্নিকটে অবস্থান করছে। উন্নত বাংলাদেশ গড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানবিক বাংলাদেশে বিনির্মাণও জরুরি। সেজন্য প্রয়োজন দেশব্যাপী সুস্থ সংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশ। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এ উদ্যোগ উক্ত প্রচেষ্টারই অংশ।
×