ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক কিন্তু এখনও সমস্যার সমাধান হয়নি অনেক বিষয়ের, তারপরও আশাবাদী ফিফা

রাশিয়ার পর আলোচনায় কাতার

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ২০ জুলাই ২০১৮

রাশিয়ার পর আলোচনায় কাতার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফুটবল দুনিয়াকে স্বপ্নের মতো এক বিশ্বকাপ উপহার দিয়ে গেল রাশিয়া। গ্রুপ পর্ব থেকে শুরু করে শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল শেষ চার কিংবা সেমিফাইনাল। প্রতিটি ম্যাচেই রোমাঞ্চ ছিল এবার। খোদ ফিফার সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্টিনোও বলেছেন, এটাই ইতিহাসের সেরা বিশ্বকাপ। গতানুগতিক ধারার বাইরে এসে দারুণ সাফল্যের সঙ্গেই বিশ্বকাপের একুশতম আসরকে বিশ্ববাসীর কাছে উপস্থাপন করেছে লেনিন-স্ট্যালিনের দেশ। তবে ২০১৮ বিশ্বকাপ এখন অতীত। ইতোমধ্যেই আলোচনায় চার বছর পরের বিশ্বকাপ। কেমন করবে কাতার? সাফল্যের এই ধারাবাহিকতা ২০২২ বিশ্বকাপ কী ধরে রাখতে পারবে? এসব নিয়েই শুরু হয়ে গেছে জল্পনা-কল্পনা। তবে কাতার বিশ্বকাপকে সামনে রেখে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার। সম্প্রতি এ বিষয়ে ফিফার প্রেসিডেন্ট ইনফান্টিনো জানান, আগামী বিশ্বকাপ নিয়ে আয়োজক দেশ কাতারের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা হচ্ছে তাদের। যেখানে ঐতিহ্যবাহী ৩২ দলের ফরম্যাট থেকে বেরিয়ে ৪৮ দল ফুটবল বিশ্বকাপকে আরও প্রসারিত করার পরিকল্পনা রয়েছে ফিফার। ফিফার প্রধান আরও আগেই ২০২২ সালের টুর্নামেন্টের দিন-তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। যেখানে ২১ নবেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক মাসেরও কম সময়ে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। ফুটবলের অতীত রীতিকে ভেঙ্গে প্রথমবারের মতো জুন-জুলাইয়ের পরিবর্তে নবেম্বর-ডিসেম্বরে হবে বিশ্বকাপ। কাতারের পরের বিশ্বকাপের আয়োজক তিন দেশ। যৌথভাবে আট বছর পরের বিশ্বকাপ আয়োজন করবে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো এবং কানাডা। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপকে ফিফা আগেই ৪৮ দলের অনুমোদন দিয়ে রেখেছে। তবে কাতার কী ৩২ দলের বাইরে আরও ১৬ দলের বোঝার ভার বহন করতে পারবে? এক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। কেননা তাদের দেশটি তুলনামূলক ছোট। ৪৮ দলের খেলা হলে ১৬টি ম্যাচ বেড়ে যাবে। টুর্নামেন্টে ৬৪ ম্যাচের পরিবর্তে হবে ৮০টি। কাতার অবশ্য ফিফার আগেই ৪৮ দলের অংশগ্রহণের ব্যাপারটিতে সায় দিয়েছে। তবে ফুটবল বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন আয়োজক দল হিসেবে তরী ডুবাবে কাতার বিশ্বকাপ। স্বাগতিক হিসেবে কোন বাছাইপর্ব ছাড়াই সরাসরি বিশ্বকাপে অংশ নেবে কাতার। কিন্তু কাতারের ফিফা র?্যাঙ্ককিং এখন ৯৭! আরও ভয়াবহ হলো, এখন পর্যন্ত কখনোই বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে খেলার সুযোগ পায়নি কাতার। ইতিহাস বলে, বিশ্বকাপের স্বাগতিকদের প্রথম রাউন্ডে বিদায় নিতে হয়েছে মাত্র একবার। সেটি ছিল ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার। কিন্তু তাও, বাফানারা ফ্রান্সকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল। মেক্সিকোর সঙ্গে প্রথম ম্যাচে পেয়েছিল ড্রয়ের দেখা। এদিকে, কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করছেন অনেকেই। যারা বলছেন, ইউরোপের অন্যতম সেরা দল ইতালি ফিরবে ২০২২ বিশ্বকাপে। ব্রাজিলের পর এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে সবচেয়ে সফল দলটির নাম ইতালি। জার্মানির মতো চার বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আজ্জুরিরাও। তারাই কিনা ছিল না এবারের বিশ্বকাপে! সিনিয়র প্লেয়ারদের অবসরের কারণে ঘর গোছাতে ভালই বেগ পেতে হয়েছে তাদের। কিন্তু কাতারের টিকেট পেতে অবশ্যই ভুল করবে না রবার্তো মানচিনির দল! বিশ্বকাপ দেখবে ইতালিয়ান প্রত্যাবর্তন। একই কথা প্রযোজ্য হল্যান্ডের ক্ষেত্রেও। ইয়োহান ক্রুইফের উত্তরসূরিরাও চাইবে না কিছুতেই আরও একটি বিশ্বকাপের মঞ্চকে কমলা রঙে রাঙ্গানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে। শেষ টানা দুইবার কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন চিলিও হয়তো ফিরবে কাতারে। সেই বিশ্বকাপে নিজেকে ছাড়িয়ে যাবেন এমবাপে! ১৯ বছর বয়সেই ফ্রান্সকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন তরুণ প্রতিভাবান এই ফুটবলার। নিজে পেয়েছেন সেরা উদীয়মানের স্বীকৃতি। কাতারে যখন যাবেন, কিশোর এমবাপে তখন থাকবেন ২৩ বছরের টগবগে তরুণ। ফুটবল ইতিহাসে নিজেকে অমর করে রাখার জন্য ওটাই তার সবচেয়ে বড় সুযোগ হবে বলে মনে করছেন ফুটবলবোদ্ধাদের অনেকে। এছাড়াও কাতারে জ্বলে উঠবে আফ্রিকান দলগুলো। আফ্রিকানদের জন্য রাশিয়া বিশ্বকাপ ছিল হতাশায় মোড়ানো। ৫টি দলের কোনটিই গ্রুপ পর্বের বাধা পার হতে পারেনি।
×