ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

হজযাত্রী বদলের সুযোগ চায় এজেন্সিগুলো

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ১৯ জুলাই ২০১৮

হজযাত্রী বদলের সুযোগ চায় এজেন্সিগুলো

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হজ ব্যবস্থাপনা ও যৌক্তিক কারণেই ২০১৯ সালে নিবন্ধিত হজ গমনেচ্ছু যাত্রীদের মধ্যে থেকে যাচাই-বাছাই করে বিভিন্ন এজেন্সির হজযাত্রী রিপ্লেসমেন্টের সুযোগ দেয়া উচিত। রিপ্লেসমেন্ট (একজনের পরিবর্তে আরেকজন) সুযোগ না দিলে শুধু এজেন্সিগুলোই নয়, সরকারও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে সৌদি সরকারের কোন বাধা নেই। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ত্বরিত সিদ্ধান্ত না হলে চলমান সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা বাধাগ্রস্ত হবে। বেসরকারী হজ এজেন্সিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) মহাসচিব শাহাদাত হোসাইন তছলিম হজ রিপ্লেসমেন্ট নিয়ে চলমান সমস্যা সম্পর্কে আশকোনা হজ ক্যাম্পে বসে সাংবাদিকদের এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই নীতিমালা অনুসারে শতকরা ৪ ভাগ হারে হজযাত্রী রিপ্লেসমেন্টের সুযোগ দিয়েছে। এজেন্সিগুলোও তা মেনে নিয়েও হজযাত্রীদের পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন এজেন্সি সৌদি আরবে মোয়াল্লেম নিয়োগ, বাড়ি ভাড়া, যাতায়াত ও খাবার বাবদ টাকা পরিশোধ করেছে। হজযাত্রার প্রাক্কালে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের অনেকেই অসুস্থতা ও পারিবারিক সমস্যায় যেতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। উদাহারণস্বরূপ তিনি বলেন, বাংলাদেশ বেসরকারী পর্যায়ে সর্বোচ্চ সুনামের সঙ্গে যে কয়েকটি এজেন্সি কাজ করছে তার মধ্যে চট্টগ্রামের মরহুম মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর হজ কাফেলা অন্যতম। তাদের মাধ্যমে ১৯৭ জন হজে যাওয়া নিশ্চিত থাকলেও শেষ পর্যন্ত ১২ জন হজে যেতে পারছেন না। এ ধরনের সমস্যার কারণে অনেক এজেন্সির হজযাত্রী চূড়ান্তভাবে ড্রপ পড়ছে। বিশেষ কারণেই তারা হজযাত্রী রিপ্লেসমেন্টের দাবি করছেন। এ পর্যন্ত কতগুলো এজেন্সির কত সংখ্যক হজযাত্রী রিপ্লেসমেন্ট চাইছে তা জানতে চাইলে হাব মহাসচিব বলেন, হজ এজেন্সি ও যাত্রীর সঠিক সংখ্যা জানা নেই। একেক এজেন্সি ৮/১০ জন করে হজযাত্রী রিপ্লেসমেন্ট চাইছে। এ ব্যাপারে ধর্ম মন্ত্রণালয় এজেন্সিগুলোর কাছে হিসাব চাইলে এজেন্সিগুলো তা জমা দেবে। এদিকে ধর্ম মন্ত্রণালয় হজযাত্রী রিপ্লেসমেন্ট না দেয়ার ব্যাপারে এখনও অনড় অবস্থানে রয়েছে। সোমবার সচিবালয়ে নিবন্ধিত হজযাত্রীর বিমান টিকেট নিশ্চিতে পে-অর্ডার ইস্যু না করা ৫৬টি এজেন্সির সঙ্গে বৈঠকে ধর্ম সচিব আনিছুর রহমান বলেন, অস্তিত্বহীন নিবন্ধনের বিপরীতে হজ এজেন্সি মালিকরা এখন হজযাত্রী রিপ্লেসমেন্ট চাচ্ছেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাব মহাসচিব। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, হজ এজেন্সিগুলো সুকৌশলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার বাণিজ্য করতেই হজযাত্রী রিপ্লেসমেন্টের সুযোগ চাইছে। তারা রিপ্লেসমেন্টের সুযোগ পেলে যাদের পাঠাবেন তাদের কাছ থেকে সরকার ঘোষিত নির্ধারিত হজ প্যাকেজের বাইরেও অতিরিক্ত ১/২ লাখ টাকা নিয়ে ব্যবসা করবে। কাদের রিপ্লেসমেন্টে চাওয়া হচ্ছে, তাদের বয়স কত, তারা আদৌ অসুস্থ কি-না, তারা নিজেরা টাকা দিয়ে প্রাক নিবন্ধন ও নিবন্ধন করেছিলেন কিনা ইত্যাদি খতিয়ে দেখলে তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন ওই কর্মকর্তা। যে হজ রিপ্লেসমেন্ট নিয়ে হাব ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলোচনা চলছে সে রিপ্লেসমেন্টে হজযাত্রীর সঠিক সংখ্যা কত এ হিসাবও কারও কাছে নেই। কেউ বলছে ৫ হাজার কেউ বলছে ৭ হাজার আবার কেউবা বলছে ১০ হাজারের বেশি। হাব মহাসচিব শাহাদাত হোসাইন তছলিম এ অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অমূলক বলে জানান।
×