ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তোফা-তহুরা আবার ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৯ জুলাই ২০১৮

তোফা-তহুরা আবার ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যমজ দুই বোন তোফা-তহুরাকে আবারও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) দুপুরে তাদের কেবিনে ভর্তি করা হয়। এর আগে দুইদিন তারা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিল। তারও আগে গত ১১ জুলাই তাদের দেশের বাড়ি গাইবান্ধা থেকে ঢাকায় এনে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আত্মীয়ের বাসায় নিয়ে রাখা হয়। মূলত তোফা-তহুরার নির্দিষ্ট পায়খানার রাস্তা তৈরি করা হবে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে। তারপরে এই রাস্তাটি স্বাভাবিক হয়ে আসলে পূর্বের বিকল্প পায়খানার রাস্তা বন্ধ করা হবে। আর এজন্যই তোফা-তহুরাকে ঢাকায় আনা হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালের পুরাতন ভবনের ৬০ নম্বর কেবিনে ভর্তি আছে তারা। তোফা-তহুরার মা সাহিদা জনকণ্ঠকে বলেন, চিকিৎসকদের নির্দেশে তোফা-তহুরাকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এখন বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। রিপোর্ট হাতে পেলে চিকিৎসকরা তাদের আবার অস্ত্রোপচার করতে পারেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমার সন্তানদের বয়স হয়েছে ২২ মাস। এ সময়ে যে রকম কথা বলার দরকার সে রকমই কথা বলে তারা। তবে তোফা কিছুটা হাঁটতে পারলেও তহুরা হাঁটতে পারে না। কোন কিছুতে ভর দিয়ে দাঁড়াতে পারে। এমনিতে তারা ভাল আছে। ঢামেক হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ শাহনূর ইসলাম প্রথম থেকেই তোফা ও তহুরার তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, ‘নিয়মিত ফলোআপের কারণে তাদের খবর দিয়ে হাসপাতালে আনা হয়েছে। কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। আরও কিছু বাকি আছে। পরে ওদের অবস্থা দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রিপোর্ট পেলে যদি দেখা যায় তারা প্রস্তুত, তাহলে তাদের অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে। নির্দিষ্ট পায়খানার রাস্তাটি তৈরি করা হতে পারে। পরে বিকল্প রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হবে। তবে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি কিছু। তোফা-তহুরা যেভাবে জোড়া লাগানো ছিল, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ‘পাইগোপেগাস’। শিশু সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকেরা জানান, বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘পাইগোপেগাস’ শিশু আলাদা করার ঘটনা এটি প্রথম। এর আগে অন্যান্য হাসপাতালে তিন জোড়া শিশুকে অস্ত্রোপচার করে আলাদা করা হয়েছে, তাদের ধরন ছিল আলাদা। জন্মের পর থেকে ১০ মাস তোফা ও তহুরা একসঙ্গে বড় হয়েছে। পিঠের কাছ থেকে কোমরের নিচ পর্যন্ত তারা পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। দুজনের পায়খানার রাস্তা ছিল একটি। তবে মাথা-হাত-পা ছিল আলাদা। গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের ঝিনিয়া গ্রামের রাজু মিয়ার স্ত্রী সাহিদা বেগম নিজ বাড়িতে জোড়া লাগা দুই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। কোমরের কাছে জোড়া লাগানো শিশু দু’টির সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গই আলাদা। শুধু পায়ুপথ একটি। গত বছরের ৮ অক্টোবর ঢামেকে অপারেশনের মাধ্যমে তাদের পায়ুপথ আলাদা করা হয়। গত ১ আগস্ট তাদের শরীর আলাদা করা হয়।
×