ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আলোচনা অনুষ্ঠানে চুমকি

শিশুদের মাদক ব্যবসায় যুক্তকারীদের কঠোর শাস্তি দেয়া হবে

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৯ জুলাই ২০১৮

শিশুদের মাদক ব্যবসায় যুক্তকারীদের কঠোর শাস্তি দেয়া হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, শিশুর সার্বিক অধিকার সুরক্ষায় শিশু অধিদফতর প্রতিষ্ঠার কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আশা করছি, এটা করতে পারব। বুধবার ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন : শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠায় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। এ সময় তিনি ভিক্ষাবৃত্তি ও মাদক ব্যবসায়ে শিশুদের যুক্তকারীর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান। বেসরকারী সংস্থা এ্যাকশন ফর সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি) ও দৈনিক ইত্তেফাক যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এএসডির প্রকল্প ব্যবস্থাপক ইউ কে এম ফারহানা সুলতানা। দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বরিশাল-৫ আসনের সংসদ সদস্য জেবুন্নেসা আফরোজ, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি ও কামরুন নাহার, সিনিয়র সচিব ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খোন্দকার মোস্তান হোসেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে ইউ কে এম ফারহানা সুলতানা বলেন, বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ২ হাজার ৩৩ শিশু সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তিনি বলেন, নির্যাতন বন্ধে সরকারকে আরও উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাদেশের কাঠামোগত একটি দুর্বলতা হচ্ছে শিশুদের জন্য আলাদা কোন দায়িত্বশীল অধিদফতর না থাকা। মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন সর্বদিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশে দারিদ্র্যের হার কমে আসছে। দেশে ভিক্ষুকের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। আগে দেশে বাল্যবিবাহ ছিল অগণিত। বাল্যবিবাহ ঠেকাতে কিশোর-কিশোরী ক্লাব গঠন করে দেয়া হয়েছে। সরকারের কার্যকর ভূমিকার কারণে বাল্যবিবাহ এখন উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে। কোথাও কোন শিশু নির্যাতনের ঘটনা নজরে এলে সে বিষয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দুই কোটি নারীকে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। গর্ভবতী মাকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে। নারীদের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার করা হয়েছে। দরিদ্র শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত হয়ে যাচ্ছে। এই ঝুঁকিপূর্ণ শিশু শ্রম নিরসনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কর্মসূচী ও প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনুসন্ধানে দেখা গেছে একটি চক্র শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তি এবং মাদক ব্যবসায় ব্যবহার করে। অনেক ক্ষেত্রে বাবা-মাও শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তিতে ব্যবহার করে থাকে। এই ক্ষেত্রে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। যারা এ ধরনের জঘন্য কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, শিশুবান্ধব সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এ সময় প্রতিমন্ত্রী সমাজের বিত্তবানদের পথশিশু ও হতদরিদ্র শিশুদের মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানান। ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি এমপি বলেন, আমরা সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জন করেছি এবং পুরস্কৃত হয়েছি। এখন আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) করতে হবে। এক কথায় শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা না হলে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব নয়। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম বলেন, শিশুর প্রতি রাষ্ট্রের আগ্রহের ঘাটতি নেই। তিনি দারিদ্র্য কমানোর জন্য যার যার জায়গা থেকে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের সামাজিক সুরক্ষা খাতে ব্যয় আরও বাড়াতে হবে। এএসডির উপনির্বাহী পরিচালক মোজাম্মেল হক বলেন, গৃহকর্মীদের মধ্যে বেশিরভাগ হলো শিশু। তাই গৃহকর্মী সুরক্ষা নীতিমালা দ্রুত আইনে পরিণত করতে হবে।
×