ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এম এইচ উল্লাহ

ফুটপাথে মৃত্যুদূত!

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ১৯ জুলাই ২০১৮

ফুটপাথে মৃত্যুদূত!

বাংলায় একটা কথা আছে ‘গরজ বড় বালাই।’ রাস্তায় হাঁটতে নামলে কথাটির যথার্থ প্রমাণ পাওয়া যায়। ফুটপাথের ওপর দিয়ে বেপরোয়াভাবে মোটর সাইকেল চালিয়ে যেতে দেখা যায় একশ্রেণীর মোটরসাইকেল চালককে। ফুটপাথ পথচারীদের হাঁটা-চলার জন্য, অথচ বেপরোয়া সর্বনাশা মোটারসাইকেল চালকদের দৌরাত্ব্যে সে ফুটপাথে এখন আর হাঁটা যায় না- নিজেও জানতে পারবেন না পেছন থেকে কখন আপনাকে ধাক্কা দিয়ে ভূপাতিত করে ফেলবে কিংবা একেবারেই পরপারে পাঠিয়ে দিবে। ট্রাফিক আইন মেনে চললে এমনটি তো হওয়ার কথা নয়, কিন্তু ট্রাফিক আইন অমান্য করে যারা ফুটপাথে বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালিয়ে জান-মালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া অতিব জরুরী। এটা ঠিক, ঢাকা মহানগরীতে লোকসংখ্যা বেড়েছে- সরকারী যানবাহনের সংখ্যা মানুষ বাড়ার তুলনায় না বাড়লেও ব্যক্তিগত মালিকানাধীনে মোটরগাড়ি ও মোটরসাইকেলের সংখ্যা অনেক গুণ বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন নয়, বাণিজ্যিকভাবে আরোহী তোলার মানে রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেলের সংখ্যা। রাস্তাঘাটের উন্নতি হলেও যানবাহনের তুলনায় রাস্তাঘাটের সংখ্যা বাড়েনি। স্থানে স্থানে কিছু ‘ফ্লাই ওভার’ হয়েছে এগুলো কিন্তু যানবাহনের চলাচলের জন্য যথেষ্ট নয়। তবুও নিয়ম-শৃঙ্খলা অর্থাৎ ট্রাফিক আইন মেনে চললে বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর জন্য যেসব দুর্ঘটনা ঘটে সেইগুলি অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব। বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনা ঘটালে যে শাস্তি হওয়া উচিতÑ সে শাস্তির ব্যবস্থা এখনো বলবৎ করা যায়নি- ফলে চালকদের একগুয়েমী আর সহিংসতার কাছে সাধারণ পথযাত্রীকে হার মানতে হচ্ছে। অনেক সময় পথচারীদের ভুল আর অবহেলার জন্য রাস্তায় অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। বছর দুই এক আগে গাড়ি চালকদের অবহেলার কারণে কোন মানুষ মারা গেলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের বিধান রেখে আইন করা হয়েছিল। কিন্তু চালকদের ধর্মঘট আর উশৃঙ্খলতার কারণে আইনটি বলবত করা যায় নি- ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমানো যায়নি। সরকার অনেক চেষ্টা করেও চালকদের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক আইনটি বলবত রাখতে পারেননি। ফুটপাথে মোটরসাইকেল চালানো নিষিদ্ধ করে আইন প্রণয়ণ করে কঠোর শাস্তি বিধানের ব্যবস্থা নিলে বেআইনী ভাবে ফুটপাত দিয়ে মোটরসাইকেল চালানো যাবে না- ফলে ফুটপাথগুলো নিরাপদ পথে পরিণত হবে। ট্রাফিক আইন পরিমার্জন করে ফুটপাত দিয়ে যাতে কেউ মোটরসাইকেল চালাতে না পারে এই মর্মে ত্বরিত ব্যবস্থা নেয়া অতিব জরুরী। ট্রাফিক পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকলে এই ব্যাপারে সুতীক্ষè দৃষ্টি দিলে ফুটপাথে জনদুর্ভোগ কমবে বলে আশা করা যায়। ফুটপাথগুলো অবৈধ দখলদালের কবল থেকে উদ্ধার করা একান্ত প্রয়োজন। শুধু অবৈধ মোটরসাইকেল চালক কেন, অনেক জায়গায় এগুলো হকারদের দখলে রয়েছে। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে জনসাধারণের হাঁটার ও চলার পথ নিশ্চিত করা একান্ত প্রয়োজন। এই কাজে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা যেমন- প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের দায়িত্ব অনেক বেশি। তা ছাড়াও পৌর কর্তৃপক্ষ, সকল সচেতন জনসমাজকে ফুটপাত দখলমুক্ত করার জন্য একযোগে এগিয়ে আসতে হবে। কলাবাগান, ঢাকা থেকে
×