ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাস্তার লাট ভাই;###;গোলাম মোর্তুজা আলিম

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ বেপরোয়া মোটরসাইকেল!

প্রকাশিত: ০৪:৪০, ১৯ জুলাই ২০১৮

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ বেপরোয়া মোটরসাইকেল!

কটা দিন আগে এক মোটর সাইকেল চালক আমাকে সালাম দিলেন। আমি সালামের উত্তর দিলাম। কুশলাদি বিনিময় হল। আমার গন্তব্যে আসার ঠিক ত্রিশ মিনিট পর খবর পেলাম সে (মোটর সাইকেল চালক) আরেক মোটরসাইকেল চালকের সাথে মুখোমুখী সংঘর্ষে নিহত হয়েছে। বেপরোয়াভাবে বাইক চালানো এখন এক স্টাইলে পরিণত হয়েছে। এটা কেমন স্টাইল, যে স্টাইলে জীবন দান করতে হয়! দ্রুত গাড়ি চালানো, অযথা হর্ণ বাজানো, যাচেচ্ছতাইভাবে গাড়ি পার্কিং করা এখন ফ্যাশন। আর এই ফ্যাশানের বেড়াজালে পড়ে কত-শত জীবনের কলরব নিস্তব্ধ হয়ে গেল। আজ হয়তো সেই সে পরিবার শুধু স্মৃতির মিনারে দাঁড়িয়ে চোখের তপ্ত জল ফেলছেন। আমি সতর্ক আছি, কিন্তু অন্যজন সতর্ক নেই, তাহলেই যত অনর্থ। অনেকেই বলেন,‘দুর্ঘটনা বলে-কয়ে আসে না।’ আমি বলি অন্য কথা, ‘দুর্ঘটনা বলে-কয়েই আসে।’ আপনি যদি সতর্ক ও দূরদর্শী হন তাহলে যে দুর্ঘটনা ঘটবে না এমন কথা জোর গলায় বলা যায় না। তবে একথা বলা যায়, আপনি এবং অন্যজন যদি সতর্ক ও সচেতন হন তাহলে দুর্ঘটনা এড়ানো অসম্ভব নয়। লাল সবুজের এদেশ যেমন একদিকে ব্যাপক সম্ভাবনার দেশ, তেমনি অন্যদিকে হাজার হাজার আইনেরও দেশ। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, আইন প্রয়োগের ব্যাপারে ঢিমেতাল- আবার লাল ফিতার দৌরাত্মের কারণে অনেকেই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায়, যা কাম্য হতে পারে না। এই জায়গাটা আমাদের কংক্রিটের ন্যায় শক্ত করতে হবে। ট্রাফিক আইন যখনই অমান্য, তখনই শাস্তি। ‘দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন’- হলেই বেপরোয়া শুধু মোটরসাইকেল চালক কেন, সব চালকই তখন ভুলগুলো শুধরে আইনের ছায়াতলে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে নেবে- আর আমাদের দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর মিছিল আস্তে আস্তে ছোট হতে থাকবে। কঠোরভাবে আইন প্রয়োগের সাথে সাথে জনসচেতনতাও বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারসহ আমজনতার এগিয়ে আসা জরুরি। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন মিডিয়াকে স্বউদ্যোগে উদ্যোগী হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। মিডিয়াতে প্রতিদিন কোনো না কোনো সময়ে নাটক, টকশো প্রভৃতি প্রচার করতে হবে। প্রিন্ট মিডিয়াকেও এ বিষয়ে বেশি বেশি লেখা ছাপাতে হবে। স্থানীয় উদ্যোগে প্রতিটি গ্রামে-গঞ্জে, পাড়ায়-মহল্লায় এমনকি শহরেও সেমিনার-সিম্পোজিয়াম করা গেলে মন্দ হয় না! এদেশে মোটর সাইকেল চালানো শেখানোর কোনো সেন্টার নেই। বড় গাড়ি চালানো শেখানোর কিছু ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে। রাস্তায় অবিবেচকের মতো গাড়ি চালনায় কোনো কৃতিত্ব নেই। দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে সারাজীবনের কান্নার মধ্যে কাউকে ফেলে রাখা নিশ্চয়ই কোনো বিবেবকবান মানুষের পক্ষে সমীচীন নয়। এ বিষয়ে তাই সকলেরই রয়েছে কিছু না কিছু করণীয়। মাসকাটাদীঘি স্কুল এন্ড কলেজ, রাজশাহী থেকে
×