এবার ‘সাদা’ বলের মিশন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে নাজেহাল হয়েছে বাংলাদেশ। এবার ওয়ানডে সিরিজের মিশন শুরু করার পালা। ‘সাদা’ বলে নিজেদের দক্ষতা দেখানোর পালা। ২২ জুলাই প্রথম ওয়ানডে দিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হবে। মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে এই সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর পালা বাংলাদেশের। পারবে বাংলাদেশ তা করতে? ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গায়ানায় ২২ জুলাই প্রথম, ২৬ জুলাই দ্বিতীয় ও সেন্ট কিটসে ২৮ জুলাই তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ও তৃতীয় ওয়ানডে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে সাতটায় ও দ্বিতীয় ওয়ানডে রাত সাড়ে ১২টায় শুরু হবে। এ সিরিজে ঘুরে দাঁড়াতে চায় বাংলাদেশ। টেস্ট সিরিজের দুঃসহ স্মৃতি ভুলে ওয়ানডে সিরিজে নিজেদের মেলে ধরতে চায় বাংলাদেশ। টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর সাকিব আল হাসানই যেমন বলেছেন, ‘অবশ্যই সিরিজটি ছিল হতাশার। আগেও বলেছি যে আমরা জানতাম সিরিজটি কঠিন হবে। তবে আমাদের আশা ছিল, আমরা আরও ভাল খেলব। সেটি হয়নি। এখন আমাদের সাদা বলের ক্রিকেটে তাকাতে হবে। সাদা বলে আমরা খুব ভাল করছি। এখানেও আশা করছি ভাল কিছুর।’ ওয়ানডে দলের ক্রিকেটাররা এখন ‘সাদা’ বলের সিরিজের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, এনামুল হক বিজয়, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাজমুল হোসেন শান্ত, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নাজমুল ইসলাম অপু, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, আবু জায়েদ রাহী ও আবু হায়দার রনি অনুশীলনে ব্যস্ত। নিজেদের প্রস্তুত করছেন। শুরুতে স্ত্রীর অসুস্থতার জন্য সফরে মাশরাফির যাওয়া অনিশ্চিত থাকলেও শেষ পর্যন্ত গেছেন। তার নেতৃত্বেই ওয়ানডে সিরিজ খেলতে নামবে বাংলাদেশ দল। এনামুল হক বিজয় যেমন ঘুরে দাঁড়ানোর কথাই বলেছেন। জানিয়েছেন, ‘টেস্ট সিরিজ শেষ হয়ে গেছে। ওয়ানডে সিরিজ নতুন করে শুরু হবে। আমাদের প্রস্তুতি ঠিকমতো হলে আমরা ভাল কিছু করতে পারব। দলের সবাই চেষ্টা করছে, আরও চেষ্টা করবে ভাল মতো ঘুরে দাঁড়াতে। এখন সাদা বলের খেলা। ওয়ানডেতে আমরা দীর্ঘদিন ধরেই ভাল খেলছি। এবারও ভাল কিছুর আশা করছি।’ বাংলাদেশ সর্বশেষ ওয়ানডে খেলে এ বছর জানুয়ারিতে। দেশের মাটিতে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুইয়েকে নিয়ে হয় ত্রিদেশীয় সিরিজ। সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি ও জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ জিতে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আরেকটি ম্যাচে হারে। ফাইনালেও হার হয়। এর আগে গত বছর অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রোটিয়াদের সঙ্গে টানা তিন ম্যাচেই হারে বাংলাদেশ। জুনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজেও নিউজিল্যান্ডকে একটি ম্যাচে হারায়। গত বছর মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে এক ম্যাচ জিতে। আরেক ম্যাচ হারে। হার-জিতের মধ্য দিয়েই চলছে। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কেমন করে বাংলাদেশ সেদিকেই সবার নজর থাকছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ২৮টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ৭টিতে জিতে বাংলাদেশ। হারে ১৯টি ম্যাচে। দুটি ম্যাচের রেজাল্ট হয়নি। দুই দল পরস্পরের বিপক্ষে সর্বশেষ ২০১৪ সালে ওয়ানডে খেলে। প্রায় চার বছর হয়ে গেছে। সর্বশেষ সিরিজটি ওয়েস্ট ইন্ডিজে হয়েছিল। তিন ম্যাচের সিরিজের সবকটি ম্যাচে হেরেছিল বাংলাদেশ। দুই দল যখন আবার মুখোমুখি হচ্ছে সেই সিরিজটিও ওয়েস্ট ইন্ডিজেই হবে। টেস্ট সিরিজে যে অবস্থা হয়েছে, ওয়ানডে সিরিজেও যে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন এখান থেকে নিজেদের সামলে নিয়ে ভাল কিছু করে দেখাতে পারলেই হয়।