ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পিজিসিবি’র অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করবে গ্রামীণফোন

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ১৮ জুলাই ২০১৮

পিজিসিবি’র অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করবে গ্রামীণফোন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবার বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিড লাইনের ওপর স্থাপিত অপটিক্যাল ফাইবারের একাংশ গ্রামীণফোনকে লিজ দিয়েছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি)। এ লিজের আওতায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১৪৯ কিলোমিটার দীর্ঘ অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করবে গ্রামীণফোন। গত সোমবার পিজিসিবি প্রধান কার্যালয়ে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে এ লিজ দেয়া হয়। এর আগে গ্রামীনফোন বাংলাদেশ রেলওয়ের কেবল নিজ নিয়েছে। দেশজুড়ে বিস্তৃত পিজিসিবি’র অপটিক্যাল ফাইবার ওভারহেড লাইনের ওপরে থাকায় স্থানীয় প্রেক্ষাপটে অধিকতর নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মাটি খোড়াখুড়িসহ অন্যান্য কারণে এ লাইন কাটা পড়ার বিড়ম্বনা নেই। ফলে ডিজিটাল যোগাযোগের ক্ষেত্রে অন্যান্য অপটিক্যাল সংযোগের তুলনায় অপেক্ষাকৃত নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিতে পারে পিজিসিবি’র অপটিক্যাল ফাইবার। এ কার্যক্রম পরিচালনায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-এর কাছ থেকে এনটিটিএন লাইসেন্স নিয়েছে পিজিসিবি। গ্রামীণফোনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সোমবারের চুক্তিতে বলা হয়েছে, গ্রামীণফোন হাটহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১৪৯ কিলোমিটার এক জোড়া অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহারের ভাড়া বাবদ পিজিসিবিকে বাৎসরিক এক কোটি সাত লাখ টাকা পরিশোধ করবে গ্রামীণফোন। পিজিসিবি’র পক্ষে কোম্পানি সচিব মোঃ আশরাফ হোসেন এবং গ্রামীণফোনের পক্ষে চীফ প্রকিউরমেন্ট অফিসার আবুল কাশেম মহিউদ্দিন আল-আমীন চুক্তিপত্রে সই করেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে কর্মকর্তারা জানান, উভয়পক্ষের এ চুক্তির ফলে ইন্টারনেটে ডাটা বিনিময়, ভিডিও কনফারেন্সিং, ভয়েস কমিউনিকেশন সহ সব ধরণের ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক বেশি স্থিতিশীল হবে। ২০০৮ সালে পিজিসিবি গ্রামীণফোনকে প্রথমবার অপটিক্যাল ফাইবার ভাড়া দেয়, যা ২০১৬ সাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। বর্তমানে লিজের রেট পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে চুক্তি করা হয়েছে। ২০১৬ সালের মে মাস থেকে কার্যকর হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরপর্বে পিজিসিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম-আলবেরুনী, নির্বাহী পরিচালক মোঃ এমদাদুল ইসলাম, মোঃ শাফায়েত হোসেন ও খোন্দকার মোঃ আব্দুল হাই, পরিচালক (ওপিজিডব্লিও) মোঃ আশরাফ হোসেন, গ্রামীণফোনের মহাব্যবস্থাপক হীরক কুমার পালসহ উভয়পক্ষে উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, রেলওয়ের কেবল লিজ নিয়ে গ্রামীণফোন মামলা করে টাকা দিচ্ছে না। ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক রেলওয়ের। অথচ অবৈধভাবে সেই নেটওয়ার্ক ভাড়া দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বেসরকারী মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন। তাদের সঙ্গে রেলওয়ের চুক্তি অনুযায়ী নিজেরা ব্যবহার করা ছাড়া এই ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক কারও কাছে তারা ভাড়া দিতে পারবে না। অথচ বহু প্রতিষ্ঠানের কাছে এটি ভাড়া দিচ্ছে গ্রামীণফোন। গত ৭ বছর ধরে মামলার ফাঁদে ফেলে রেলওয়েকেও কোন টাকা পরিশোধ করছে না। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী, তাদের পাওনা ৩শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। চুক্তির অযুহাতে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প ইনফো সরকারেও সংযোগ দিতে বাধা দিচ্ছে গ্রামীণফোন। পিজিসিবির সঙ্গেও কি গ্রামীনফোন রেলওয়ের মতো করবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পিজিসিবির এক কর্মকর্তা বলেন, এই চুক্তিতে কোন প্রকার ফাঁক রাখা হয়নি। রেলওয়ের চুক্তির মধ্যে হয়ত কোন ফাঁক ফোকর থাকতে পারে। আমরা সচেতনভাবে গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তি করেছি।
×