ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পোকার নকল করে অপারেশনের সরঞ্জাম

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ১৮ জুলাই ২০১৮

পোকার নকল করে অপারেশনের সরঞ্জাম

প্রাণীদের অনেকগুণ মানুষ নকল করার চেষ্টা করে। এক জার্মান বিজ্ঞানী পোকাদের কিছু অসাধারণ ক্ষমতা চিকিৎসাবিদ্যার উন্নতির কাজে প্রয়োগ করার অভিনব প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। স্টুটগার্টের জীবতত্ত্ব মিউজিয়ামের অসাধারণ সংগ্রহ দেখলে প্রাণিজগতের বিবর্তন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্ময় আরও বেড়ে যায়। ছোট বয়সেই অলিভার এই মিউজিয়ামে এসে মুগ্ধ হতেন। তারপর প্রশিক্ষণের এক সুযোগ পেয়ে তিনি পর্দার আড়ালেও উঁকি মারার সুযোগ পেলেন। বিশেষ করে পোকাদের সূক্ষ্ম শারীরিক গঠন সম্পর্কে তার আগ্রহ বেড়ে গেল। অলিভার বলেন, ‘অবাক করার বিষয় হলো, আকারে ছোট হওয়া সত্ত্বেও পোকাদের বিশাল শক্তি রয়েছে’। তারা খাওয়াদাওয়া, বংশবৃদ্ধি, প্রতিরক্ষাসহ নানা রকম কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ও প্রায় নিখুঁত সব সরঞ্জাম গড়ে তুলেছে। লাখ লাখ বছর ধরে পোকারা কাটাকুটি, তরল পদার্থ ছিটানো, হুল ফোটানোর মতো কাজে পারদর্শী হয়ে উঠেছে। অলিভার বলেন, ‘একসময় উপলব্ধি হলো, যে পোকার এই সব ক্ষমতা চিকিৎসাবিদ্যার ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয়। বিশেষ করে এন্ডোস্কোপির ক্ষেত্রে একই মাপে সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে’। তখন তিনি জীবতত্ত্ব গবেষক থেকে চিকিৎসাবিদ্যা বায়োনিক্স বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছেন। জীববিদ্যার কৌশল প্রযুক্তিগত সমাধানসূত্রে রূপান্তরিত করাই তার কাজ। জায়ান্ট ইচনিউমন প্রজাতির বোলতার ওভিস্ক্যাপ্ট বা দাঁড়া তাকে সবচেয়ে বেশি বিস্মিত করেছে। অতি সূক্ষ্ম হওয়া সত্ত্বেও সেটি কাজে লাগিয়ে এই পোকা ডিম রাখতে কাঠের মধ্যে এক সেন্টিমিটার গভীর পর্যন্ত গর্ত করতে পারে। স্টুটগার্টের ফ্রাউনহোফার ইনস্টিটিউটে এক গবেষক দলের সঙ্গে তিনি সেই দাঁড়ার বড় আকারের নকল তৈরি করেছেন। এ ভাবে তিনি রহস্যের সমাধান করতে পেরেছেন। অলিভার বলেন, ‘এই পোকার খোঁড়ার ক্ষমতার রহস্য হলো, সেটি মোটেই প্রচলিত পদ্ধতিতে ড্রিলিং করে না অর্থাৎ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নয়। পেন্ডুলামের মতো ওপর-নিচ সঞ্চালনের মাধ্যমে গর্ত খালি করে এটি’। এই প্রক্রিয়ার সুবিধা হলো, এ ভাবে যে কোন ক্রস সেকশনের গর্ত তৈরি করা সম্ভব। শুধু গোল নয়, চৌকো অথবা তিনকোনা গর্তও কোন সমস্যা নয়। সে কারণেই শরীরে কিছু নকল অঙ্গ বসানোর ক্ষেত্রে রাস্প ড্রিল আদর্শ যন্ত্র হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। যেমন হিপ জয়েন্ট বসানোর সময় তা ঘুরে গেলে চলবে না। নকল দাঁত বসানোর সময়ও সেটা জরুরী। অলিভার এমনই এক যন্ত্রের প্রাথমিক রূপ দেবার কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘এর আয়তন কমিয়ে সুচের আকারে কমিয়ে আনাই আসল চ্যালেঞ্জ’। তাই ধীরে ধীরে সেদিকে এগোতে হবে।-ডয়চে ভেলে
×