ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তৈরি পোশাকের দাম বাড়ান, বিদেশী ক্রেতাদের তোফায়েল

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৮ জুলাই ২০১৮

তৈরি পোশাকের দাম বাড়ান, বিদেশী ক্রেতাদের তোফায়েল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ তৈরি পোশাকের দাম বাড়ানোর জন্য বিদেশী ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, তৈরি পোশাক খাতকে নিরাপদ ও কর্মবান্ধব করে গড়ে তুলেছে বাংলাদেশ। শ্রম আইন সংশোধন করে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। বিপুল অর্থ বিনিয়োগে আধুনিক করা হয়েছে তৈরি পোশাক কারখানাগুলো। ফ্যাক্টরিতে এখন বিশ্বমানের পোশাক তৈরি হচ্ছে। কিন্তু বিদেশী ক্রেতারা পোশাকের দাম বাড়াচ্ছেন না। এ খাতের আরও উন্নয়নে পোশাকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হওয়া সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব রিমেডিয়েশন কো-অর্ডিনেশন সেল (আরসিসি) আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক, সচিব আফরোজা খানম, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইএ সভাপতি মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও নরওয়ের রাষ্ট্রদূত, এ্যাকর্ড, এ্যালায়েন্স, বিকেএমইএ এবং শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কারখানাগুলো তদারকির জন্য এ্যাকর্ড এবং এ্যালায়েন্সের আর কোন প্রয়োজন নেই। তাদের ৫ বছরের জন্য দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল। গত ৭ মে তাদের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়ার জন্য ৬ মাস মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আর কোন সময় বৃদ্ধি করা হবে না। এখন রিমেডিয়েশন কো-অর্ডিনেশন সেল (আরসিসি) বা সংস্কার সমন্বয়ক সেল তৈরি পোশাক কারখানাগুলো কাঠামো, অগ্নি ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দায়িত্ব পালন করবে। তিনি বলেন, সরকার ও কারখানার মালিকরা সম্মিলিতভাবে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশে আর কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি। ইতোমধ্যে দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হয়েছে। অত্যাধুনিক গ্রিন ফ্যাক্টরি নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত সাসটেইনেবিলিটি কম্প্যাক্টের চতুর্থ পর্যালোচনা সভায় এ্যাকর্ড ও এ্যালায়েন্সের কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। আমরা জানিয়ে দিয়েছি, বাংলাদেশ নিজেই এ কাজ করতে এখন সক্ষম। আরসিসিকে দক্ষ জনবল দিয়ে সাজানো হয়েছে। তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর কাঠামো, অগ্নি ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত সংখ্যক ইঞ্জিনিয়ারকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও) সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ৭৫৫টি পোশাক কারখানার সংস্কারকাজ শেষ করতে সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে শেষ না করলে কারখানাগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। তিনি বলেন, রিমেডিয়েশন কো-অর্ডিনেশন বা সংস্কারকাজ সমন্বয় সেলের (আরসিসি) কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে ৩০টির বেশি সভা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৭৫৫টি কারখানার সংস্কারকাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। তাদের চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে সংস্কারকাজ সম্পন্ন না করলে তাদের কারখানা বন্ধ করে দেয়া হবে। মুজিবুল হক বলেন, আন্তর্জাতিক ক্রেতাজোট এ্যাকর্ড ও এ্যালায়েন্সের মেয়াদ শেষ হয়েছে। কারখানা সংস্কার তদারকিতে তাদের ছয় মাস সময় দেয়া হয়েছে। তারা নতুন করে সময় চাচ্ছে। কিন্তু আমরা আর তাদের সময় বাড়াব না। আরসিসি গঠন করা হয়েছে। এখন আমরাই পরবর্তীতে কারখানা সংস্কারকাজের তদারকি করতে পারব। কারণ এ্যাকর্ড ও এ্যালায়েন্স আমাদের প্রকৌশলী দিয়েই কাজ করিয়েছে।
×