ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অংশ নেন নেতৃবৃন্দ। মাদক শনাক্তের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি হস্তান্তর

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ১৭ জুলাই ২০১৮

 অংশ নেন নেতৃবৃন্দ। মাদক শনাক্তের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি হস্তান্তর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেহের যেখানেই লুকানো থাকুক মাদক, মুহূর্তেই তা শনাক্ত করে দেবে বিশেষ যন্ত্র। শুধু তাই নয়-আপনার শরীর বা গাড়িতে চব্বিশ ঘণ্টা আগেও যদি কোন মাদক বহন করে থাকেন- সেটাও ধরা পড়ে যাবে ওই যন্ত্রে। এমন সব অত্যাধুনিক বেশ কিছু যন্ত্রপাতি পেয়েছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। মাদক শনাক্তে এমন যন্ত্রের দীঘদিনের দাবি ছিল সংস্থাটির। এতে চলমান মাদক অভিযান আরও গতিশীল ও ফলদায়ক হবে বলে জানিয়েছেন মাদক বিশেষজ্ঞরা। সোমবার রাজধানীর তেজগাঁও লাভ রোডের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এসব যন্ত্র হস্তান্তর করেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ‘আই ড্রিম ইট’ নামে একটি প্রজেক্টকে এসব দেয়া হয়। কোরিয়ার কোয়কা নামে একটি প্রতিষ্ঠান এতে সহযোগিতা করেছে। মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনার জন্য অধিদফতরকে ৫টি নতুন গাড়িও দেয়া হয়েছে। এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যেখানেই মাদকের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে আমরা সেখানেই অভিযান অব্যাহত রেখেছি। এভাবেই একদিন বাংলাদেশ থেকে মাদক নির্মূল হবে। আমরা এখন মাদকবিহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। ২০২১ সালের আমাদের যে লক্ষ্য সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করছি। মাদক নির্মূল হলে আমরা ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের দিকে এগোব। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘আই ড্রিম ইট’ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ সর্বপ্রথম মাদকদ্রব্য শনাক্তকরণ যন্ত্র পেল। এই যন্ত্রের মাধ্যমে মাদকবিরোধী অভিযানে মাদকদ্রব্য ধরার কাজটি আরও সহজ হবে। প্রজেক্টের আওতায় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে তিনটি পিকআপ ও দুটি মাইক্রো, ২৯ ধরনের যন্ত্রপাতি ও ১৫০টি কম্পিউটার সরবরাহ করা হয়। প্রায় চার মিলিয়ন ডলারের প্রকল্পটির কাজ আগামী ২০১৯ সালের মধ্যে শেষ হবে। রবিবার পাঁচটি গাড়ির চাবি হস্তান্তর করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থা কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি ( কৈকা) ও বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের যৌথ উদ্যোগ এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। কায়কা যে গাড়িগুলো প্রদান করেছে- তা মাদক নির্মূলে বেশ কাজে লাগবে। যদিও এই প্রজেক্টে ৩৭টি গাড়ির কথা বলা হয়েছে। আমরা ধীরে ধীরে বাকি গাড়িগুলোও দেব। তিনি বলেন, মাদকবিরোধী অবস্থানে বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নেয়া হবে। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মাদকমুক্ত ঘোষণা করা হবে। সে লক্ষ্যে যেখানে মাদকের সন্ধান মিলবে সেখানেই চলবে অভিযান। সরকার মাদকের বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। মাদকনিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কাজকে আরও গতিশীল করতে আজকের এ উদ্যোগ ফলপসূ হবে। বাংলাদেশের জন্য মাদক একটি বড় সমস্যা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে যেটি বড় সমস্যা সেটি নিয়ে আমরা সবাই কাজ করছি। কোয়কা যে যন্ত্র প্রদান করেছে তার মাধ্যমে মাদক বিক্রেতা বা ক্রেতা যেই হোক না কেন তাদের সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব হবে। যন্ত্রের পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেই ধরা পড়বে কার কাছে মাদক আছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে আমরা মাদকবিহীন বাংলাদেশে পৌঁছাতে পারব। অনুষ্ঠানে কৈকার কান্ট্রি ডিরেক্টর জো হান-গু বলেন, ‘আই ড্রিম ইট’ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের মাদকনিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে যেসব যন্ত্রপাতি ও কম্পিউটার সরবরাহ করা হলো তা দিয়ে মাদক নির্মূলের পথ সহজ হবে। জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মাদক শনাক্তে সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে পেরে আমরা আনন্দিত। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ জামাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘এই প্রজেক্টের মাধ্যমে যে যন্ত্র পাওয়া গেছে তা দিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ৩৭টি সেবা প্রদান সহজ হবে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের রাসায়নিক পরীক্ষাগার আধুনিক করা হবে। এই প্রজেক্টের বাজেট ৪ মিলিয়ন ডলার, যা আগামী ২০১৯ সালের মধ্যে শেষ হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মাদকমুক্ত ঘোষণার যে প্রত্যয় তা বাস্তবায়নে এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
×