স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা পরবর্তীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক অগ্রাধিকারমূলক উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। কিন্তু ১৯৭৫ পরবর্তী নানা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয় এবং বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠীর মদদে প্রায় দুই যুগ সশস্ত্র সংঘাত চলতে থাকে। পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় কোন তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যা দেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে। ঐতিহাসিক এই শান্তি চুক্তিই পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি, সম্প্রীতি আর উন্নয়নের মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। রবিবার সিরডাপ মিলনায়তনে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোঃ নূরুল আমিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, সাবেক সচিব কাজী গোলাম রহমান ও মাসুদ আহমেদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে এইচটি ইমাম আরো বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর ১৯৯৮ সালের ১৫ জুলাই পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ গঠনের মাধ্যমে এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়। ইতোমধ্যে এ অঞ্চলের তিন জেলা পরিষদকে পুনর্গঠন, ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স গঠন, স্থানীয় ও প্রথাগত প্রশাসনিক কাঠামো শক্তিশালী করাসহ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিদ্যুত, যোগাযোগসহ ভৌত অবকাঠামোগত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তির মোট ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি সম্পূর্ণ, ১৫টির আংশিক ও ৯টি ধারার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তাছাড়া ৩৩টি সরকারী বিভাগ/বিষয়ের মধ্যে অধিকাংশ বিভাগই বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পার্বত্যবাসীর জীবনমান উন্নয়নে বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চলতি অর্থ বছরে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য ২১টি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত ল্যান্ডস্লাইড ইন চিটাগাং হিল ট্র্যাক্টস : কজেজ এ্যান্ড মিটিগেশনস নামক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।