ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শিল্পকলার নাট্যশালায় গুজরাটি লোকনৃত্য পরিবেশনা

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ১৬ জুলাই ২০১৮

 শিল্পকলার নাট্যশালায় গুজরাটি লোকনৃত্য পরিবেশনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আঞ্চলিক গানের সুরে আখ্যানের ব্যাখা করে যাচ্ছেন গায়েন। লোকজ সেই গানের সুরে চলছে নাচ। রঙিলা পোশাকের নারী-পুরুষের দলটি আখ্যানের উপস্থাপনা মেলে ধরে নাচের তালে। রবিবার সন্ধ্যায় এভাবেই সুরে সুরে পরিবেশিত হলো ভারতের গুজরাটি লোকনৃত্য। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (আইজিসিসি) নৃত্যানুষ্ঠানটির আয়োজন করে। গুজরাটি এ নৃত্যসন্ধ্যায় অংশ নেন গুজরাটের যমুনাঘরের পুলিশ রাস ম-ল দলের বারো সদস্য। আঞ্চলিকতা আশ্রয়ী গানের সুরে পরিবেশনাটি উপভোগ্য হয়ে ধরা দেয় নৃত্যরসিকদের কাছে। দলের নামের সঙ্গে পুলিশ যুক্ত থাকলেও, নৃত্যশিল্পীদের কেউই পুলিশের সদস্য না। দলটি ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে নৃত্য পরিবেশনার পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নৃত্য পরিবেশনায় অংশ নিয়েছে। গুজরাটি ভাষার গানের সুরে হয় নৃত্য পরিবেশনা। প্রথম পরিবেশনাটি ছিল রাস নৃত্য। যে রাসনৃত্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার গোপিনীদের নিয়ে বৃন্দাবনে ও গোকুলে পরিবেশন করতেন। ভারতে মূলত নবরাত্রির রাতে; মানে দুর্গাপূজার নবমী রাতে এ নৃত্য পরিবেশনা খুবই জনপ্রিয়। পুলিশ রাস ম-লের শিল্পীদের পরিবেশনাটি ছিল দুই পর্বে বিভক্ত। শুরুতেই তারা পরিবেশন করেন গার্বা নৃত্য। ‘হাম দিল দে চুকে সানম’ চলচ্চিত্রে ঐশ্বরিয়া রায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে এ নৃত্য খুবই জনপ্রিয়। পুলিশ রাস ম-লের শিল্পীরা এ নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে শুরুতেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বন্দনা করেন। এরপর ছিল ডান্ডিয়া নৃত্য। জমকালো পোশাকের সঙ্গে লাঠি আর পায়ের ছন্দে অনবদ্য এ নৃত্যও মন জয় করে দর্শকদের। এর পর তারা একে একে পরিবেশন করেন টিপ্পনী রাস, এ্যানসিয়ান্ট রাস ও সোর্ড রাস। সবশেষে গোপগালন রাস পরিবেশনার মধ্য দিয়ে নিজেদের পরিবেশনা শেষ করে দলটি। চিত্রশালায় শিল্পকর্ম প্রদর্শনী ‘জীর্ণতায় সুন্দর’ ॥ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার ৬নং গ্যালারিতে শুরু হলো ‘জীর্ণতায় সুন্দর’ শীর্ষক যৌথ শিল্পকর্ম প্রদর্শনী। শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় সপ্তাহব্যাপী এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে গৃহস্থালী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন পর্ষদ। রবিবার বিকেলে একাডেমির চিত্রশালা প্লাজার মিলনায়তনে প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতায় প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলপ্তগীন তুষার। বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিব শাহজাহান আলম সাজুর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক সংগঠনের পরিচালক সুরাইয়া আক্তার চিশ্তী রিমা। আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ভালবাসা থেকেই সৃষ্টিকর্মের সূচনা ঘটে। যে পৃথিবী ও এর প্রকৃতিকে হৃদয় দিয়ে ভালবাসে, তার পক্ষেই সুন্দর ও নান্দনিক সৃষ্টিকর্মের সৃজন করা সম্ভব। এ পৃথিবীতে কোন কিছুই ফেলনা নয়। মানুষ যদি তার সৃজনক্ষমতা, ইচ্ছা ও কল্পনাশক্তিকে কাজে লাগায়, তাহলে এ পৃথিবীকে সুন্দর করে গড়ে তোলা অসম্ভব নয়। সুরাইয়া আক্তার চিশ্তী রিমা জানান, প্রদর্শনীতে ঠাঁটাইপ্রাপ্ত শিল্পকর্মের বেশিরভাগই ফেলে দেয়া বর্জ্য থেকে তৈরি করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পাথরকুচি, কাচের গুঁড়া, মাছের আঁশ, কাঁঠের টুকরা, ডিমের খোসা ইত্যাদি। তিনি আরও জানান, প্রদর্শনীর জন্য প্রায় ১৫০ শিল্পীর সহস্রাধিক শিল্পকর্ম জমা পড়েছিল। সেগুলো থেকে ৪০ জন শিল্পীর বাছাইকৃত ১৩০টি শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে চিত্রকর্ম, ভাস্কর্য, ট্যাপেস্ট্রি, আলোকচিত্র। আগামী ২১ জুলাই পর্যন্ত চলবে এ প্রদর্শনীটি। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
×