ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাঁধ মেরামত বন্ধ

কলাপাড়ায় জোয়ারে ডুবছে ১২ গ্রাম

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ১৬ জুলাই ২০১৮

কলাপাড়ায় জোয়ারে ডুবছে ১২ গ্রাম

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১৫ জুলাই ॥ অস্বাভাবিক জোয়ারের চাপে নিজকাটা আট ভেন্টের বিধ্বস্ত স্লুইসটির বাঁধ ভেসে এখন ভেতরে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হচ্ছে জনপদ। শনিবারের জলোচ্ছ্বাসের ঝাপটা পুরোটা ঠেকাতে পারেনি মানুষ। কিন্তু রবিবার সকাল থেকে স্থানীয় মানুষ নিজেদের শ্রম ও অন্য জায়গা দিয়ে মাটি এনে কোনমতে প্রতিরোধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ভেতরে পানি প্রবেশ পুরোটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। ফলে সবজিসহ একাধিক ধানের ফলন পাওয়া জনপদ নীলগঞ্জের অন্তত ১২টি গ্রামের তিন হাজার কৃষক পরিবারের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তাদের বাড়িঘর, ফসলাদিসহ কৃষিজমি সব পানিতে ভেসে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নিজকাটা, চাঁদপাশা, মকিমপুর, টুঙ্গিবাড়িয়া, গুটাবাছা, নবীপুর, হোসেনপুর, পশ্চিম সোনাতলাসহ ১২টি গ্রামের কৃষক পরিবারে এখন সব হারানো আতঙ্ক বিরাজ করছে। অহিদ মাঝি জানান, এই স্লুইসটি ৭/৮ বছর আগে থেকে নষ্ট হতে থাকে। চার বছর আগে দেবে যায়। এরপর দুই বছর আগে ভেঙ্গে গেছে। কোনমতে মাটি ভরাট করে তারা খালে বাঁধ দিয়ে নোনা পানির প্রবেশ ঠেকিয়েছেন। অনেক দেন-দরবার করার পরে এক মাস আগে কনট্রাক্টর মেরামতের কাজ শুরু করে। তাও মূল ভাল বেড়িবাঁধের মাটি কেটে দেয় ভাঙ্গন এলাকায়। কিন্তু এখন সাত দিন ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে স্থানীয়রা এখন চরম সঙ্কটে পড়েছেন। তারা অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় চরম শঙ্কিত হয়ে আছেন। জলোচ্ছ্বাস ঠেকাতে শনিবার ৪০-৫০ জন লেবার নিয়ে স্থানীয়রা কাজ করেছেন। ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। রবিবারও অন্তত ত্রিশ হাজার টাকা ধার করে মাটি সংগ্রহ করে জোয়ারে ঝাপটা ঠেকানোর কাজ করছেন গ্রামবাসী। অহিদ মাঝি জানান ইতোপূর্বে প্রত্যেক জোতে তার গড়ে ছয়-সাত হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে পানির প্লাবন থেকে জনপদ রক্ষায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবুল খায়ের জানান, ছয় লাখ টাকা ব্যয়-বরাদ্দে একজন ঠিকাদার বিধ্বস্ত স্লুইসসহ বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করেছে। যা চলমান রয়েছে। তবে কাজ বন্ধের বিষয় তিনি খবর নিচ্ছেন বলেও জানান। . আমতলীতে ১০ গ্রাম নিজস্ব সংবাদদাতা আমতলী বরগুনা থেকে জানান, অমাবস্যার জোর প্রভাবে পায়রা নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলীয় আমতলী ও তালতলীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তেঁতুলবাড়িয়া ও বালিয়াতলীর বাঁধ ভেঙ্গে ১০ গ্রাম তলিয়ে গেছে। কৃষককদের আমন মৌসুমের বীজতলা পানিতে তলিয়ে পচে যাচ্ছে। জানা গেছে, অমবস্যার জো প্রভাবে পায়রা নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলীয় আমতলী ও তালতলীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরের বসবাসরত মানুষের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। তারা কষ্টে জীবনযাপন করছে। তালতলীর নিশানবাড়িয়া, ফকির হাট, সোনাকাটা, নিদ্রাসকিনা, তেঁতুলবাড়িয়া, আশার চর, নলবুনিয়া, তালুকদারপাড়া, চরপাড়া, গাবতলী, মৌপাড়া, ছোটবগী, জয়ালভাঙ্গা,পচাকোড়ালিয়া ও আমতলীর ঘোপখালী, বালিয়াতলী, পশুরবুনিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া, পশ্চিম আমতলী, ফেরিঘাট, পুরাতন লঞ্চঘাট, আমুয়ার চর, পানি উন্নয়ন বোর্ড, আঙ্গুরকাটা, গুলিশাখালী ও হরিদ্রবাড়িয়া নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ সকল এলাকার মানুষের ঘর বাড়ি জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। তালতলীর তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের নজরুল হাওলাদার বলেন জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে সেলিম চৌকিদারের বাড়ির নিকট থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৫০ মিটার বাঁধ ভেঙ্গে ভিতরে পানি প্রবেশ করে তেঁতুলবাড়িয়া ও নলবুনিয়া গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বরগুনা পানি উন্নয়র বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মশিউর রহমান বলেন স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
×