ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘বুদ্ধিজীবী সমাবেশ’ করতে পারেনি বিএনপি

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১৫ জুলাই ২০১৮

 ‘বুদ্ধিজীবী সমাবেশ’ করতে পারেনি বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে ন্যূনতম গণতান্ত্রিক স্পেসও নেই বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার বেলা এগারোটার দিকে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে জিয়া পরিষদের পূর্ব ঘোষিত ‘বুদ্ধিজীবী সমাবেশ’ পুলিশ করতে না দিলে তার প্রতিক্রিয়ায় তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন। ফখরুল বলেন, দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে কোন রাজনৈতিক সমাবেশ ছিল না, সেটিও সরকার করতে দেয়নি। আমি এর নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। তিনি বলেন, এটা খুবই পরিতাপের কথা, ক্ষোভের কথা, দুর্ভাগ্যের কথা যে, পুলিশ একটা ভয়ঙ্কর দুঃশাসনের পক্ষ হয়ে কাজ করছে, অত্যাচার-নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। সকাল সাড়ে দশটায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সেমিনার কক্ষে এই ‘বুদ্ধিজীবী সমাবেশ’ শুরু হওয়ার কথা ছিল। সেভাবেই সবকিছু আয়োজন করা হয়, ব্যানারও টানানো হয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেটসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষকরাও ‘বুদ্ধিজীবী সমাবেশ’ এ অংশ নিতে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। পুলিশ সকাল সোয়া দশটার দিকে অনুমতি নেই জানিয়ে অনুষ্ঠানটি করা যাবে না বলে আয়োজকদের জানায়। জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান কবীর মুরাদ সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ এসে বলল, আপনারা সমাবেশ করতে পারবেন না। সমাবেশ করার কোন অনুমতি নেই। বাধ্য হয়ে আমরা অনুষ্ঠানটি বাতিল করেছি। যদিও আমরা অনুষ্ঠান করার জন্য পুলিশের মৌখিক অনুমতি নিয়েছিলাম। বেলা পৌনে এগারোটার দিকে সমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে আসেন। গাড়ি থেকে নেমে তিনি এ ঘটনা শোনার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বারবার বলে আসছি এই সরকার দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করে দিয়েছে। সারা দেশে কথা বলার, সভা-সমাবেশ করার কোন গণতান্ত্রিক অধিকার যে নেই তারই প্রমাণ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের অনুষ্ঠান করতে না দেয়া। এ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বিরোধী দলের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। কোথাও ন্যূনতম কথা বলার পরিবেশ নেই। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার জনগণের বুকের ওপর পাথরের মতো চেপে বসেছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের শুধু গ্রেফতার-নির্যাতন করেই ক্ষান্ত হয়নি, সভা-সমাবেশের রাজনৈতিক অধিকারও হরণ করেছে। এর মাধ্যমে সরকার একটি ভয়ানক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়ে ভারতসহ বন্ধুরাষ্ট্রগুলো একমত- মওদুদ ॥ অংশগ্রহণমূলক জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে ভারতসহ বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্রগুলো একমত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, বিএনপি ছাড়া অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হবে না। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে কারাবন্দী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার সুচিকিৎসার দাবিতে ‘জিয়া আদর্শ একাডেমি’ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে বর্তমান সরকার যতই ষড়যন্ত্রের নীলনক্সা তৈরি করুক আমরা তা সফল হতে দেব না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সকল রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা হবে। এর মাধ্যমে বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারকে দমন করতে হবে। সেই সঙ্গে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে বাধ্য করতে হবে। মওদুদ বলেন, আমাদের গভীরভাবে চিন্তা করে দেখতে হবে যে, খালেদা জিয়াকে জেলখানায় রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারব কি পারব না। সরকারকে আমাদের শর্তগুলো মানতে হবে। সরকারকে বাধ্য করা হবে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে নির্দলীয় ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে। তাহলে এই দেশে আবার সুষ্ঠু গণতন্ত্র ফিরে আসবে। মওদুদ বলেন, আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের পরামর্শ দিলেও বর্তমান সরকার বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মামলা দিয়ে জেলে আটকে রেখেছে। তারা আবারও ক্ষমতায় আসতে নীলনক্সা তৈরি করে ফেলেছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। মওদুদ বলেন, নির্বাচনের আর মাত্র আড়াই মাস সময় রয়েছে। তার আগেই খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্তি দিতে হবে, বিচার বিভাগ ও আইন বিভাগের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে হবে এবং বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন পরিবর্তন করে নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিতে হবে। তবেই বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আজম খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, দলের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ সলিম ভুঁইয়া, কাদের গনি চৌধুরী ও কাজী আবুল বাশার।
×