ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

উদ্বোধনী দিনেই হজে গেছেন সাড়ে তিন হাজার হজযাত্রী

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ১৫ জুলাই ২০১৮

 উদ্বোধনী দিনেই হজে গেছেন সাড়ে তিন হাজার হজযাত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উদ্বোধনী দিনেই হজে গেছেন প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হজযাত্রী। তারা সবাই নিরাপদে জেদ্দায় পৌঁছেন। সেখান থেকে তালবিয়া পড়তে পড়তে মক্কা শরীফে তশরিফ নেন। আল্লাহর মেহমানরা ওমরাহ পালনের মধ্য দিয়ে নিজ নিজ হোটেলে পৌঁছে বিশ্রামে যান। এর আগে শনিবার নির্ধারিত সময় সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে বায়তুল্লাহর ৪১৯ জন মেহমান নিয়ে আকাশে উড়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রথম হজ ফ্লাইট বিজি-১০১১। একইদিন হজ ফ্লাইট বিজি-৩০১১ সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে, বিজি-৫০১১ বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে এবং শিডিউল ফ্লাইট বিজি-০০৩৫ রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ে। নির্ধারিত সময়ে, নির্বিঘ্নে হজ ফ্লাইট পরিচালনার সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। চট্টগ্রাম এবং সিলেট থেকেও এ বছর যথাক্রমে নয়টি ও তিনটি হজ ফ্লাইট পরিচালিত হবে। উদ্বোধনী ফ্লাইটের আনুষ্ঠানিকতায় ছিলেন- বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল, ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি বজলুল হক হারুণ, বিমান পরিচালনা পর্ষদ চেয়ারম্যান ইনামুল বারী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ ও হাব মহাসচিব শাহাদত হোসাইন তসলিম উপস্থিত ছিলেন। তারা সবাই উড়োজাহাজে গিয়ে হজ যাত্রীদের বিদায় জানান। এ বছর হজ ফ্লাইট ও শিডিউল ফ্লাইটে মোট ৬৩ হাজার ৫৯৯ (ব্যালটি ও নন-ব্যালটি) জন ধর্মপ্রাণ মুসলমান হজ পালনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে জেদ্দা যাবেন। এসব হজযাত্রীর জন্য ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে পরিবহনের জন্য বিমানের ৪টি নিজস্ব বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর উড়োজাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ সময় বিমানমন্ত্রী একে এম শাহজাহান কামাল বলেন- ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বিমানের নিয়মিত শিডিউল ফ্লাইটেও হজযাত্রীরা পবিত্র ভূমিতে যাবেন। পবিত্র হজের গুরুত্ব ও ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স একটি সর্বাঙ্গ-সুন্দর হজ কার্যক্রম পরিচালনায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এ বছর সৌদি সরকার নির্ধারিত বরাদ্দকৃত সøটের বাইরে অতিরিক্ত কোন ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি প্রদান করবে না বলে অবহিত করেছে। বাংলাদেশ থেকে এ বছর প্রায় এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যাবেন। এ বছর বিমানে যাবেন মোট ৬৩ হাজার ৫৯৯ জন, এর মধ্যে সরকারী ব্যবস্থাপনায় যাবেন সাত হাজার ১৯৮ জন। অবশিষ্ট ৫৬ হাজার ৪০১ জন যাবেন বেসরকারী ব্যবস্থাপনায়। প্রথমবারের মতো হজ যাত্রীদের টিকিট ক্রয় করার পর যাত্রার তারিখ পরিবর্তনে ১০০ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ টাকা এবং যাত্রা বাতিলের ক্ষেত্রে ২০০ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ টাকার বাড়তি মাসুল আদায়ের বিধান চালু করা হয়েছে। ঢাকা থেকে জেদ্দা প্রতি ফ্লাইটের উড্ডয়নকাল হবে আনুমানিক ৭ ঘণ্টা। দুই মাসব্যাপী হজ ফ্লাইট পরিচালনায় শিডিউল ফ্লাইটসহ মোট ৩৫৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে, যার মধ্যে ২৯৮ ‘ডেডিকেটেড’ এবং ৬১টি শিডিউল ফ্লাইট। ১৪ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ‘প্রি-হজ’-এ মোট ১৮৭টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে (ডেডিকেটেড-১৫৫ এবং শিডিউল -৩২)। পোস্ট-হজে ১৭২টি ফ্লাইট চলবে ২৭ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত (ডেডিকেটেড-১৪৩ এবং শিডিউল-২৯)। হজ-ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঢাকা-জেদ্দা উভয়স্থানেই বিশেষ ব্যবস্থার আয়োজন করেছে। প্রত্যেক হজযাত্রী বিনামূল্যে সর্বাধিক ২ পিস ৪৬ কেজি মালামাল বিমানে এবং কেবিন ব্যাগেজে ৭ কেজি মালামাল সঙ্গে নিতে পারবেন। কোন অবস্থাতেই প্রতি পিস ব্যাগেজের ওজন ২৩ কেজির বেশি হবে না। প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য ৫ লিটার জমজমের পানি ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট নিয়ে আসা হবে এবং ফেরার সময় প্রত্যেক হাজীকে তা প্রদান করা হবে। কোন অবস্থাতেই হাজীরা সঙ্গে করে বিমানে পানি বহন করতে পারবেন না। যে কোন ধারালো বস্তু যেমন ছুরি, কাঁচি, নেইল কাটার, ধাতব নির্মিত দাঁত খিলান, কান পরিষ্কারক, তাবিজ ও গ্যাসজাতীয় বস্তু যেমন এ্যারোসল এবং ১০০ (এমএল)-এর বেশি তরল পদার্থ হ্যান্ড ব্যাগেজে বহন করা যাবে না এবং কোন প্রকার খাদ্য সামগ্রী সঙ্গে নেয়া যাবে না। বিমান পরিচালিত ডেডিকেটেড হজ-ফ্লাইটসমূহের চেক-ইন, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতা প্রতিবারের ন্যায় এবারও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন আশকোনা হজ ক্যাম্পেই সম্পন্ন করা হবে। বিমান জানিয়েছে, ১৯৭৩ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ৯ লাখ ৯৭ হাজার ৬৪৮ জন হজযাত্রী বহন করেছে বিমান।
×