ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চলতি অর্থবছর থেকে বাধ্যতামূলক করেছে ডিএসসিসি

ঘরে বসেই ই-ট্রেড লাইসেন্স নিতে পারবেন ব্যবসায়ী

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ১৪ জুলাই ২০১৮

ঘরে বসেই ই-ট্রেড লাইসেন্স নিতে পারবেন ব্যবসায়ী

মশিউর রহমান খান ॥ ডিজিটাল পদ্ধতিতে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে ব্যবসায়ীদের জন্য ই-ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়ন কার্যক্রম ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকেই বাধ্যতামূলক করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে প্রাথমিকভাবে বর্তমানের ট্রেড লাইসেন্স পদ্ধতিও বহাল রাখা হবে বলে জানিয়েছে ডিএসসিসি। চলতি জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন ধরনের সারচার্জ ফি ছাড়াই সব নতুন পুরনো গ্রাহক এই সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। পরবর্তীতে সব লাইসেন্সে সারচার্জ প্রদান করতে হবে। যে কোন নাগরিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার জন্য ডিএসসিসির নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান ও বিভিন্ন শর্তাবলী পূরণ সাপেক্ষে ঘরে বসেই ই-ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করতে ও পুনরায় তা নবায়ন করতে পারবেন। যা বাংলাদেশে এই প্রথম। তবে এর জন্য ক্যাটাগরিভিত্তিক নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হবে। যা সরাসরি সিটি কর্পোরেশনের তহবিলে জমা হবে। ডিএসসিসি সূত্র জানায়, বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রম বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এই ই-ট্রেড লাইসেন্স প্রদান কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সংস্থাটি তাদের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বাড়াতে ও কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনতেই এই পদ্ধতি চালু করেছে বলে জানা গেছে। এর ফলে ট্রেড লাইসেন্স সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের চলমান নানা সমস্যা এড়াতে ম্যানুয়াল বা হাতে লেখা ট্রেড লাইসেন্স পদ্ধতি প্রদান ও নবায়ন কার্যক্রম বাতিল করে এই পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। তবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন কার্যক্রমের ফলে ব্যবসা পরিচালনায় কোন ব্যবসায়ী যাতে বাধাপ্রাপ্ত না হন সেজন্যই পুরাতন পদ্ধতি আরও কিছুদিন রাখা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে নতুন সব ব্যবসায়ী ই-ট্রেড লাইসেন্স বা ডিজিটাল ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে। ডিএসসিসি সূত্র জানায়, বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি এলাকায় ট্রেডলাইসেন্সভুক্ত ব্যবসায়ীর সংখ্যা প্রায় ২ লাখ। এর বাইরে আরও লক্ষাধিক ব্যবসায়ী ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই ছোটবড় নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। যা সম্পূর্ণ অবৈধ। আবার এদের মধ্যে অনেক ব্যবসায়ী লাইসেন্স গ্রহণ করলেও অনেকেই নিয়মিত ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে চান না। ফলে সংস্থাটি রাজস্ব আদায় হতে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকা। ফলে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও শুধু রাজস্ব আয় সেই তুলনায় বৃদ্ধি না পাওয়ায় জনস্বার্থে ডিএসসিসির কর্তৃক গৃহীত নানা সুন্দর উদ্যোগও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। যার ফলে সরাসরি নাগরিকগণকে দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। এছাড়া রাজস্ব আদায় কার্যক্রমে শত শত কোটি টাকা বকেয়া থাকায় পুরো সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রমে ব্যাহত হয়। ই-ট্রেড লাইসেন্স কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা গেলে লাইসেন্স গ্রহণ ও প্রদানে কিংবা নবায়ন কার্যক্রমে বর্তমানের তুলনায় সময় অনেক কমে আসবে। এছাড়া ট্রেড লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন করতে ডিএসসিসির লাইসেন্স শাখার কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার অভিযোগ রয়েছে। যা অনেকাংশে কমে আসবে। ডিএসসিসি সূত্র জানায়, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে ব্যবসা, বৃত্তি ও পেশা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করা হবে। নতুন ট্রেড লাইসেন্সের যে কোন তথ্য পেতে ও প্রয়োজনীয় সহায়তা করতে ডিএসসিসির ৫টি আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি করে ই-ট্রেড লাইসেন্স সংক্রান্ত হেল্প ডেস্ক চালু করেছে সংস্থাটি। এসব ডেস্কে অতি কম সময়ে ই-ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করতে পারবেন যে কোন গ্রহীতা। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ টু আই প্রজেক্টের মাধ্যমে প্রায় ২৫ লাখ টাকা অর্থ প্রদান করা হয় ডিএসসিসিকে। একইসঙ্গে এ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারী, কম্পিউটার অপারেটরসহ সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
×