ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

টেরেসা মের ব্রেক্সিট পরিকল্পনার সমালোচনায় ট্রাম্প

মুক্তবাণিজ্য চুক্তি হবে না

প্রকাশিত: ০৪:৫৮, ১৪ জুলাই ২০১৮

মুক্তবাণিজ্য চুক্তি হবে না

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্য সানকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ব্রেক্সিট পরিকল্পনা যদি তার এগিয়ে যায় তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হবে না। স্বাক্ষাতকারটি শুক্রবার প্রকাশিত হয়। ট্রাম্প এখন ব্রিটেন সফরে রয়েছেন। ট্রাম্পের সফর বাতিলের দাবিতে ব্রিটেন জুড়ে গণবিক্ষোভ হয়েছে।-খবর এএফপি ও বিবিসির। ট্রাম্প বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনাটি সম্ভবত চুক্তিটিকে শেষ করে দিচ্ছে। এর অর্থ হলো যুক্তরাষ্ট্রকে ব্রিটেনের পরিবর্তে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। যদিও ট্রাম্পের মন্তব্যের বিষয়ে ডাউনিং স্টিট কোন প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সফরকালে তার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে চেষ্টা অব্যাহত রাখবেন। মে বলেন, ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ব্রেক্সিট একটি বাণিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ। ট্রাম্প বলেন, সাবেক ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন একজন চমৎকার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন। সাক্ষাতকারে তিনি গত বছর রাজধানী লন্ডনে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে মেয়র সাদিক খানের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, মেয়র সাদিক ভয়ানক কাজ করেছেন। শুক্রবার পার্লামেন্টের বাইরে বেবি ট্রাম্প বেলুন উড়িয়ে বিক্ষোভ আয়োজন করে তিনি ভয়ানক অপরাধ করেছেন বলেও মন্তব্য করেন। অক্সফোর্ডশায়ারের ব্লেনহ্যাম প্যালেসে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্পকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। পরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্টলেডির সম্মানে ব্ল্যাক টাই ডিনারের আয়োজন করেন। পত্রিকায় প্রকাশিত সাক্ষাতকারটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন ব্রাসেলসে ছিলেন তখন দিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্টের সাক্ষাতকার পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর হোয়াইট হাউস মুখপাত্র সারা স্যান্ডার্স বেলন, প্রেসিডেন্ট ব্রিটিশ প্রধামন্ত্রীকে বেশ পছন্দ করেন এবং খুবই সম্মান করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে খারাপ কিছু বলেননি। ট্রাম্প দ্য সানকে বলেন, ইইউর সঙ্গে ব্রিটেনের ব্রেক্সিট পরবর্তী সম্পর্ক নিয়ে করা পরিকল্পনাটি একটি ব্লুপ্রিন্ট। জনগণ ভোট দিয়েছে আরও অনেক বেশি আলাদা চুক্তির জন্য। গত সপ্তাহে ব্রেক্সিট প্রস্তাবগুলো নিয়ে মে ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের মতবিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে। যা স্পষ্টভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যে প্রভাব ফেলবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য সম্পর্কে যথেষ্ট জটিলতা রয়েছে। মের পরিকল্পনায় সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বড় ধরনের বাণিজ্য সম্পর্ক শেষ হয়ে যাবে। ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি মেকে কিভাবে ব্রেক্সিট চুক্তি করতে হবে তা জানিয়েছেন তবে মে তার সঙ্গে একমত নন। মে তার কথা শোনেননি। তিনি বলেন, আমি তাকে পরামর্শ দিয়েছিলাম কিভাবে এটি করতে হবে। তিনি তার দিক থেকে করেছেন। তিনি চেয়েছেন একটি ভিন্ন পথে চলতে। ইইউ ভেঙ্গে যাক এটি আমি চাই। কেননা তারা যুক্তরাষ্ট্রকে এই বাণিজ্য সুবিধায় রাখেনি। বিবিসির রাজনৈতিক সম্পাদক লরা কুয়েন্সবার্গ বলেন, ট্রাম্পের সাক্ষাতকারটি মের দাবির ওপর প্রচ- আঘাত হেনেছে। মে দাবি করেছিলেন, ইইউর নিয়ম মেনে চললে ব্রিটেন বিস্তৃত বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্য সুবিধা পেতে সক্ষম হবে। ট্রাম্পের সাক্ষাতকারটি তীব্র প্রতিক্রিয়া উস্কে দিয়েছে। কনজারভেটিভ মেম্বার অব পার্লামেন্ট (এমপি) সারা ওলাসটোন ট্রাম্পের বক্তব্যকে বিভক্তিমূলক বলে অভিহিত করেছেন। যদি ট্রাম্পের ইচ্ছানুযায়ী চুক্তি করা হয় এ জন্য মাসুল গুনতে হবে। লেবার পার্টির এমপি ফিল উইলসন পিপলস ভোট প্রচারাভিযানের সমর্থক তিনি চূড়ান্ত ব্রেক্সিট চুক্তিতে পাবলিক ভোটের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বিশৃঙ্খল ব্রেক্সিট প্রস্তাবটি ঘণ্টায় ঘণ্টায় খারাপের দিকে যাচ্ছে। যারা ব্রেক্সিট নিয়ে কোন চুক্তি করতে চান না এমন লোকদের ট্রাম্প সমর্থন দিচ্ছেন। যেদিন ব্রিটিশ সরকার ইইউর সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদী সম্পর্কের বিষয়ে প্রস্তাব প্রকাশ করেছে সেদিনই ট্রাম্পের বক্তব্য প্রকাশিত হলো। দীর্ঘ প্রত্যাশিত পরিকল্পনার লক্ষ্য হচ্ছে, বাণিজ্য সহযেগিতা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি উত্তর আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে কঠোর সীমানা না থাকা এবং ব্রিটেনের জন্য বৈশ্বিক বাণিজ্য চুক্তির সুযোগ রাখা। এক সপ্তাহ আগে নেতৃস্থানীয় হার্ড ব্রেক্সিটের সমর্থক বরিস জনসন ও ডেভিড ডেভিস ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে চুক্তিতে পৌঁছানো নিয়ে মতবিরোধের জেরে পদত্যাগ করেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আগের এক প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় মে বলেছিলেন, ব্রিটিশ জনগণ এ জন্য ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দেয়নি। তিনি বলেন, আমরা প্রস্তাবিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রস্তাবের ওপর একটি চুক্তিতে এসেছি। যেজন্য আমরা ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দিয়েছি।
×