নিজস্ব সংবাদদাতা, মানিকগঞ্জ, ১৩ জুলাই ॥ গণধোলাইয়ের হাত থেকে বেঁচে গেল সিঙ্গাইর থানার দুই পুলিশ সদস্য। বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাইর উপজেলার ছোট কালিয়াকৈর বাজার এলাকায় ইয়াবা দিয়ে হাসেম আলী নামের এক দিনমজুরকে ফাঁসিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে গেলে গ্রামবাসী ওই দুই পুলিশ সদস্যকে ঘিরে ফেলে মারধর করার চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে থানা থেকে পুলিশ গিয়ে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সিঙ্গাইর থানার এসআই মানিক এবং কনস্টেবল জাহিদ মোটরসাইকেলযোগে রাত আটটার দিকে বলধরা ইউনিয়নের ছোট কালিয়াকৈর নতুন বাজার এলাকায় যায়। ওই বাজারের কহিনুর ইসলামের কসমেটিকের দোকানের সামনে থেকে সাদা শার্ট ও লুঙ্গি পরা দিনমজুর হাসেম আলীকে ধরে তার পকেটে দুটি ইয়াবা ঢুকিয়ে দিয়ে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দেয়। এই ঘটনায় উপস্থিত এলাকাবাসী তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করতে থাকে। এক পর্যায়ে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে ঘেরাও করে দুই ঘণ্টা রাখে। উত্তেজিত এলাকাবাসী তাদের মারধর করতে উদ্যত হলে স্থানীয় বলধরা ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য ইদ্রিস আলীসহ কয়েকজন বাধা দেয়। খবর পয়ে সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খোন্দকার ইমাম হোসেন দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। এলাকাবাসীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলোচনার করে দুই পুলিশ সদস্যকে এলাকাবাসীর হাত থেকে মুক্ত করে থানায় নিয়ে যান। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এলাকার কতিপয় পুলিশের সোর্স তাদের যোগসাজশে নিরীহ লোকদের মাদকের মামলায় আটক করে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। আর এই টাকার ভাগ পায় ওই পুলিশের সোর্স।
দিনমজুর হাসেম আলী জানান, সন্ধ্যায় ওই বাজারে গিয়েছিলেন ওষুধ কেনার জন্য। ওষুধ কিনে বাড়ি ফেরার পথে পরিচিত কয়েকজনের সঙ্গে গল্প করছিলাম। হঠাৎ করে ওই দুই পুলিশ এসে তার লুঙ্গি এবং শার্ট ধরে টানাটানি করে। এক পর্যায়ে তার পকেটে জোর করে কী যেন ঢুকিয়ে দেয়। এরপর তারা বলে পকেটে দুটি ইয়াবা পাওয়া গেছে। তিনি এর প্রতিবাদ করলে এলাকাবাসী যোগ দিয়ে তাদের ঘেরাও করে রাখে।
সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই দুই পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে যায় এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করে। কিন্তু পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আটক ব্যক্তি একজন ভাল মানুষ। তথ্যদাতা পুলিশকে তার সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য প্রদান করায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে হাসেম আলীকে ছেড়ে দিয়ে দুই পুলিশ সদস্যকে থানায় নিয়ে আসা হয়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: