ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কবিতা

প্রকাশিত: ০৮:০৮, ১৩ জুলাই ২০১৮

কবিতা

চিহ্ন ফারুক মাহমুদ এসেছি তোমার কাছে ভিক্ষাপাত্র অমূলক তাই দেব আর নেব বলে মজেছি অমর প্রতিজ্ঞায় বস্তুসুখ হয় যদি জন্মপঙ্গু অনঙ্গের ভাই ক্ষতিবৃদ্ধি কিছু নেই- ফিরে যাব যৌথ ঘটনায় শুনেছি প্রাপ্তির গান- একঘেয়ে বড় বেশি মেকি ভিখারির খঞ্জগলা শাখামূলে ব্যর্থ জড়াজড়ি তার চেয়ে এই ভালো- জান্লাখোলা তোমাকে দেখি কত ঘন কত নীল, ঘুমোকনা সময়ের ঘড়ি অতলের যাত্রী হই করিৎকুশলী স্বস্তিজল আমাদের আচ্ছাদন; দেহলগ্নতায় হব স্থির ধ্বংসের কাছাকাছি, সৃষ্টিতেও স্তব্ধ কোলাহল আমরা দুজন বটে শেষচিহ্ন এই পৃথিবীর ** কানাকড়ি আলমগীর রেজা চৌধুরী ব্রহ্মপুত্রের জলে পা রাখতেই মনে হলো ধবল বালির চরে কাশফুল নেই- তসলিমা নেই, রুদ্র নেই, মাসুদ নেই; শুধু শাকিল বসে থাকতে চায় গুদারা ঘাটে। তারপর একদিন শাকিল অপেক্ষার তীরে ভিড়ে ফিরে যায় অচীন গাঙে- আমাদের অপেক্ষাও করে না। হাঁটু অবধি জল! সহস্র জলকেলি দুপুর, ঝিলিকমারা রোদের সোহাগ মেখে ঢেউ ভাঙে। পাপ ও মনস্তাপ ঘিরে থাকে একটি জনম আমি যাকে যতনে গড়ে তুলি কোটি সেকেন্ডের প্রেমান্ধ মগ্নতায়, সেও আমার কেউ না! শুধু একটি ধ্যানস্থ কানিবক বিষকাটালির ঝোঁপে কতকাল অপেক্ষা করে! কার জন্য? ও আমার কেউ না প্রকৃতির সন্তান তাই তাকে প্রিয়তর ভাবি। ব্রহ্মপুত্র, কাশফুল, জয়নুল- আমি কি গচ্ছিত রাখেনি চন্দ্রাবতীর বিরহযাপন! এটুকুই শেষ কানাকড়ি কাল-সন্ধ্যায় অপসৃয়মান মুখ। ** মূর্তি হাসান নাজমুল আশ্চর্যজনক ভাবে তাদের হাসির শব্দ শত বছর অবধি থেমে যায়; কোলাহল সহসাই- পরিণত হয় বেদনার সঙ্গীতে, ঝর্ণার সুরের মতো শব্দ করে- ধীরে ধীরে গড়িয়ে পড়ে কান্নার সুর, আনন্দের আলোঘর- অন্ধকারে ভরে গিয়ে থমথমে হয় পরিবেশ, যেন চারপাশ ভয়াতুর! যেন মৃত কেউ মূর্তি হয়ে হাঁটছে এখানে! তার দর্শনে কাঁপছে মানুষের বুক, অথচ সামনে দাঁড়ানোর জোর নেই কারও। ** গণায়ন সৌম্য সালেক ১. নিষেধের ভীম গর্জেছে তবু রণে উঠে গণহাত জানে ওরা জানে প্রতিরোধ হলে উবে যায় কালোরাত কালে কালে চলে কঠোর পীড়ন শোষিতের নেই দেশ শোষিত-সকল ঝাঁকবেঁধে এলে কুমিরের-কাল শেষ! ২. রক্ত জেগেছে আজ বিভেদের- পাষাণ রোধিতে আগুন লেগেছে তাই প্রাঙ্গণের উদাম বেদিতে! আমার ভায়েরা আছে রাজপথে ঈশানে নিশানে তাদের বোনেরা হাঁকে উদ্দাম রুদ্র বিষাণে... ৩. ভগিনীর চোখে ছিল ক্লেশ-জ্বালা, অগ্নি-অজর ভাইটির মুখপটে ফোটে ক্ষুধিতের তীব্র-আখর ওরা জেনেছিল, ভয় ডুবে যাবে দিন এসে নতুনের আলোকের পথে বিজয় হবেই মানবিক যাপনের। ৪. পাতকেরা হানে ভীতি ও নিষেধ, রুগ্ন-আকাল নতুনেরা দেখে উদার পৃথিবী, মুক্ত-সকাল। মানুষের দিনে পালায় অধম লয় ঘটে পাষাণের সমতার পথে চলো একসাথে, জয় চির-নতুনের। ** চৈতালি ভুল সুমন রায়হান কুয়াশা ঝরালো যে চোখ, সে চোখ লাবণ্যময়, শিউলি তলায় কুড়ায় মাধবীর রঙ! কাল, কাকে ভেবে কী লিখেছে মনের খাতায়... যে বুনেছে প্রেম, সেই জানে ভালো। শীত এলে শান্ত¡নার বুকে সাঁতরায় চাঁদ, ভাটির টানে নাব্য খোঁজে নদী! যদি হারায় চেনা পথ, তুলে নেয় হেমন্তের ফুল। সেতারের তার, না পেলে ত্রিমোহনি সুর... স্মৃতির সাম্রাজ্যে চিরকাল ঝুলে থাকে চৈতালি ভুল। ** প্রাক্তন কথারোদ দ্বীপ সরকার আমার প্রাক্তন কথারা এখন আছড়ে পড়ে যত্রতত্র, ধরো, আমি নিথর বালিয়াড়ির উঠোন এক, আমাতে আছড়ে পড়ে কথারোদ প্রাক্তন কথারোদে পুড়তে থাকে ইমপ্লেমে­রি স্মৃতিসমূহ : নাকডুবো জলে ভেসে আসা সাক্ষীমাছ এবারও গিলে নেবে পোড়া রুটির তাপসমূহ- পোড়া রুটি মানে পাঁজরভাঙ্গার কষ্টের থালা আমি তো কথাদের ভিড়ে ব্যর্থ এক মেঘ, বৃষ্টি নামলে আমিও স্মৃতির নেটে ছেঁকে উঠি এখনও এই উঠোনে কথারা নাচলে কিছু সুপ্ত কথা ঝুনুর ঝুনুর বাজে.... ** নক্ষত্র ইব্রাহীম রাসেল কিছু নক্ষত্র চিরকালই উজ্জ্বল কোনো মেঘ, বাতাসের বেগ কিংবা অশুভ শক্তির তীর বিদ্ধ হয় না তাতে কিছু মানুষও তাই মানুষের ভালোবাসা পেয়ে উজ্জ্বল হয়, উত্তম হয় তেমন ভালোবাসা রেখে গেলাম নিরঙ্কুশ, নির্ভেজাল প্রিয় মানুষ তুমি নক্ষত্র হও
×