ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে ইজিবাইক ঘিরে বছরে আড়াই কোটি টাকার চাঁদাবাজি

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ১৩ জুলাই ২০১৮

যশোরে ইজিবাইক ঘিরে বছরে আড়াই কোটি টাকার চাঁদাবাজি

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরে সাড়ে ৪ হাজার ইজিবাইক ঘিরে প্রতিমাসে প্রায় ২০ লাখ ২৫ হাজার টাকার চাঁদা বাণিজ্য হচ্ছে। যা বছরে প্রায় আড়াই কোটি টাকা দাঁড়ায়। চালকরা বলছেন, শহরের অনন্ত ১৪টি পয়েন্টে সক্রিয় চাঁদাবাজরা। যাদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দিকেও রয়েছে অভিযোগের তীর। যদিও তা মানতে নারাজ পুলিশ প্রশাসন। তারা বলছেন, চাঁদাবাজি রুখতে সবসময় তৎপর রয়েছেন। যশোর শহরের মনিহার এলাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে মাসুদুর রহমান কাজল নামের এক ব্যক্তি ইজিবাইক, ইঞ্জিনচালিত নসিমন থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে। স্লিপ ছাড়া আবার কখনও বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির নামে ১৫ টাকা করে তোলা হয় চাঁদা। কেবল মনিহার এলাকা নয়, এমন দৃশ্য শহরের চাঁচড়া মোড়, সদর হাসপাতাল মোড়, খাজুরা বাস স্ট্যান্ড, পালবাড়ি মোড়, মুড়লি মোড়, নড়াইল বাস স্ট্যান্ড, বকুলতলাসহ প্রায় ১৪টি পয়েন্টের। চালকরা বলছেন, বাধ্য হয়েই দিতে হয় এই চাঁদা। যশোরে প্রতিদিন ইজিবাইক চলে অন্তত সাড়ে চার হাজার। এ হিসেবে গাড়ি প্রতি ১৫ টাকা প্রতিদিন চাঁদা আদায়ের পরিমাণ ৬৮ হাজার ৫ শ’ টাকা। যা মাস শেষে দাঁড়ায় ২০ লাখ ২৫ হাজার টাকা। আর বছরে ২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। চালকদের দাবি, একদিকে পৌরসভায় টাকা দেয়া হয়, অন্যদিকে অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির নামেও টাকা দিতে হয়। তারা বলেন, নামে শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি হলেও বাস্তবে আমাদের কোন কল্যাণ হয় না। এটাকে পুঁজি করে একটি শ্রেণী লাখ লাখ টাকার মালিক হচ্ছেন। ইজিবাইক চালক হাফিজুর রহমান বলেন, চাঁদার পরিমাণ দিন গেলে বেড়ে যাচ্ছে। প্রথমে ৫ টাকা চাঁদা নিলেও এখন এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকায়। এতে আমরা অসহায় হয়ে পড়ছি। চাঁদার টাকা না দিলে গাড়িতে বাড়ি মারে। চাবি কেড়ে নেয়। আমরা তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছি। শহরের যানজট নিরসন ও ইজিবাইক চালকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়ার জন্য এই টাকা নেয়া হয়। তবে, অনেক জায়গায় স্থানীয়রা চাঁদা তুলছে বলে অভিযোগ করেন বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি যশোর জেলা শাখার সভাপতি নজরুল ইসলাম রনি ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান সুমন। এদিকে চাঁদা আদায়কারী মাসুদুর রহমান কাজলের দাবি, প্রতিদিন ১৫ টাকা চাঁদা করে অফিসে ১০ টাকা দিতে হয়। বাকি ৫ টাকা তার থাকে। এর ভাগ পুলিশসহ অন্যান্যরা পায়। তাই পুলিশের সামনে চাঁদা আদায় করলেও কিছু বলেন না। তবে ট্রাফিক পুলিশের সামনে টাকা আদায় করা হচ্ছে এমন প্রশ্ন করলে যশোর ট্রাফিকের টিএসআই সমর বাবু ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। পরে ছবি দেখালে তিনি বলেন, আমি নতুন এসেছি। ট্রাফিক পুলিশের কেউ টাকা নিচ্ছে না।
×