ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ধনপোতা ও মাসকাটা খালে বাঁধ

বাগেরহাটে ১০ গ্রামের চাষীরা বিপাকে

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১৩ জুলাই ২০১৮

বাগেরহাটে ১০ গ্রামের চাষীরা বিপাকে

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ ফকিরহাট উপজেলার ধনপোতা-মাসকাটা সাবপ্রজেক্টের একটি সরকারী খালে বেড়িবাঁধ, জালপাটা, ভেশাল ও নাগানি দিয়ে স্বাভাবিক পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় ৫টি বিলের পানি সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কমপক্ষে ১০ গ্রামের কৃষক ও কয়েক হাজার মৎস্য চাষী বিপাকে পড়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তরা দ্রুত খালের অবৈধ বাঁধসহ সব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন। জানা গেছে, উপজেলার লখপুর ইউনিয়নের খাজুরা ৬গেটের ওপর দিয়ে প্রবাহিত প্রায় ২০কিলোমিটার লম্বা খালটি ভবনা ভট্টেখামার হয়ে বেতাগা ইউনিয়নের ধনপোতা-মাসকাটা হয়ে পিলজংগ ইউনিয়নের ভেড়বাড়ী শ্যামবাগাত ও টাউন নওয়াপাড়ার বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে প্রবেশ করেছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে এই তিনটি ইউনিয়নের সকল পানি ধনপোতা-মাসকাটা সাব-প্রজেক্টের এই গুরুত্বপূর্ণ খাল দিয়েই প্রবাহিত হয়। কিন্তু প্রবহমান খালটির প্রায় ১০কিলোমিটার অর্থাৎ ধনপোতা-মাসকাটা ভবনা ও খড়িবুনিয়া অংশে কতিপয় ব্যক্তি বেড়িবাঁধ, জালপাটা, ভেশাল ও নাগানি দিয়ে মাছ চাষ করছে। যে কারণে উপরে ওঠা জোয়ারের পানি বিলগুলোতে প্রবেশ করতে পারছে না। শুধু তাই নয়, বৃষ্টির পানিও উপরে বা নিচে প্রবাহিত হচ্ছে না। এ কারণে কৃষক ও মৎস্য চাষীরা মহাদুর্ভোগে পড়েছেন। কেউ কেউ পথে বসার উপক্রম হয়েছেন। স্থানীয় মৎস্য চাষী বাবুল শেখ, রুহুল আমীন, ইব্রাহিম গাজী, সুনীল দাস, মুজিবুর রহমান, কামরুল ইসলাম, মইন উদ্দিন ও জলিল শেখসহ অনেক চাষী অভিযোগ করে বলেন, মাসকাটা-ধনপোতা সাবপ্রজেক্টের অধীন খালের অধিকাংশ স্থানীয় আজগার হোসেন, আব্দুল গফ্ফার শেখ, তাজামুল ইসলাম, আজিজুল ইসলাম, আকবার মল্লিক, বিল্লাল হোসেন, মোঃ মিঠু, আবদুল শেখ, আজমল হোসেনসহ কিছু ব্যক্তি দখল করে সেখানে জালপাটা, ভেশাল ও নাগানি দিয়ে পানি সরবরাহ প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে জোয়ারের পানি বা বৃষ্টির পানি উপরে বা নিচে ওঠানামা করতে পারছে না। যে কারণে মৎস্য চাষ ও কৃষকদের ক্ষতি হচ্ছে। তারা আরও অভিযোগ করেন, ধনপোতা সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম পাশে ১০/১২ ব্যক্তি খালের দক্ষিণপাড়ে বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি সরবরাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন। সরকারী খালে বেড়িবাঁধ দেয়া বেআইনী হলেও তাদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন দীর্ঘদিনেও কোন আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছে না। উল্টো দখলকারীদের কিছু বলতে গেলে তারা চাষীদের নানা প্রকার হুমকি দিচ্ছে। লখপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য আরিদ হোসেন ও ৮নং ওয়ার্ড সদস্য বিল্লাল হোসেন মিলন বলেন, এই ৫টি বিল এলাকায় যাদের জমি আছে তারা অধিকাংশ কৃষক ও মৎস্য চাষী। তাদের জমিতে ঠিকমতো পানি ওঠানামা করতে না পারায় ধান রোপণ করা বা ঘেরে মাছ চাষ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। পানি ওঠানামা করতে না পারলে যেমন ফসলের ক্ষতি হচ্ছে তেমনি মাছের ক্ষতি হচ্ছে। এ ব্যাপারে লখপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদের আগামী মাসিক সভায় বিষয়টি আবারও উত্থাপন করা হবে।
×