ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

লবণ ও পেঁয়াজের দাম বাড়ছে, সঙ্কটের শঙ্কা

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১৩ জুলাই ২০১৮

লবণ ও পেঁয়াজের দাম বাড়ছে, সঙ্কটের শঙ্কা

এম শাহজাহান ॥ লবণ ও পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। কোরবানি ঈদের দেড় মাস বাকি থাকতে এখনই এই দুটি পণ্যের দাম বাড়ার কোন যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টির অপচেষ্টার মুখে ধীরে ধীরে পেঁয়াজ ও লবণের দাম বেড়ে যাচ্ছে বলে তাদের আশঙ্কা। কাঁচা চামড়া সংগ্রহে কোরবানি ঈদের দিন থেকে লবণের প্রয়োজন হবে। অন্যদিকে কোরবানির মাংস রান্নায় ব্যবহার হবে পেঁয়াজ। ভোক্তাদের এই চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে লবণ ও পেঁয়াজের দাম। গত পনের দিনে ১৫-২০ টাকা দাম বেড়ে এখন প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৪০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়ে এখন লবণ বিক্রি হচ্ছে ২৫-৪০ টাকায়। লবণের দাম বাড়ায় উদ্বিগ্ন চামড়া ব্যবসায়ীরা। আর পেঁয়াজে অস্বস্তি রয়েছে সাধারণ ভোক্তাদের। জানা গেছে, লবণ ও পেঁয়াজের দাম নিয়ে যাতে কোন কারসাজি না হয় সে লক্ষ্যে আগামী সপ্তাহে এ দুটি পণ্যের আমদানিকারক, পাইকার ও খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। শুধু তাই নয়, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পেঁয়াজ ও লবণের আমদানি মূল্য, বাজার মূল্য, এবং চাহিদা নিরূপণ করে একটি পর্যবেক্ষণমূলক প্রতিবেদন তৈরির জন্য ট্যারিফ কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে। এ বছর পেঁয়াজ ও লবণ আমদানিতে বিভিন্ন ধরনের শুল্ক-অশুল্কজনিত ছাড় দিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়া সহজে এলসি খোলা এবং সহজশর্তে ও কম সুদে ঋণ সুবিধা দেয়া হয় আমদানিতে। ভোক্তা স্বার্থে সরকারের পক্ষ থেকে এসব সুবিধা দেয়া হয়ে থাকে। তবে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচা মরিচের পর গত কয়েক দিনে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এরপর ১-২ টাকা করে লবণের দামও বেড়ে যাচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, কাঁচা মরিচের দাম বাড়া ও কমা আতঙ্কের কোন বিষয় নয়। এটা হুট করে বাড়ে আবার কমেও যায়। কিন্তু লবণ ও পেঁয়াজের দাম বাড়া বাজারের জন্য ভাল লক্ষণ নয়। কোরবানি সামনে রেখে এ দুটি পণ্যের দাম বাড়ার পেছনে কৃত্রিম সঙ্কট থাকতে পারে। তিনি বলেন, ট্যারিফ কমিশনের তথ্যমতে, এ বছর ভারতে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে, আমদানিও ভাল। এছাড়া দেশে ফলন ভাল হয়েছে। তবে কোরবানির সময় বাড়তি আড়াই থেকে তিন লাখ টনের পেঁয়াজের প্রয়োজন হবে। সেই পেঁয়াজ দেশে মজুদ রয়েছে। স্বাভাবিক নিয়মে আমদানি হলে পেঁয়াজের ঘাটতি হওয়ার কথা নয়। এছাড়া ভারতে এখন লবণ সবচেয়ে কমদামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি প্যাকেট লবণ বিক্রি হচ্ছে ১৮ রুপি বা ২২ টাকায়। অথচ দেশে খাওয়ার প্যাকেট লবণ ৩৮-৪০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের বাড়তি দাম নেয়ার এই প্রবণতা এখন বন্ধ করার শক্ত উদ্যোগ প্রয়োজন। এদিকে, রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা টিসিবি’র তথ্যমতে, বাজারে প্রতিকেজি আমদানি পেঁয়াজ ৩৫-৪০ এবং দেশীটি ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর লবণ বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩৮ টাকা কেজি। সংস্থাটির তথ্যমতে, গড়ে এক বছরে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় ৫৯ শতাংশ পর্যন্ত।
×