ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

মাদক ব্যবসায়ী ও অর্থ লগ্নিকারীর মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৩ জুলাই ২০১৮

মাদক ব্যবসায়ী ও অর্থ লগ্নিকারীর মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন হচ্ছে

সংসদ রিপোর্টার ॥ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের কার্যক্রম দ্রুত পরিচালনা করার জন্য সরকারের পৃথক আদালত গঠন করার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশব্যাপী ইয়াবা ব্যবসায়ীদের তালিকা হালনাগাদ করে সর্বাত্মক নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ২০০৯ সাল হতে মাদক ব্যবসায়ীদের তাৎক্ষণিকভাবে শাস্তি প্রদানের নিমিত্ত মোবাইল কোর্টের আওতায় আনা হয়েছে। ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। মন্ত্রী জানান, বিদ্যমান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনটি ১৯৯০ সালের। ১৯৯০ সালের আইন দিয়ে বর্তমান প্রেক্ষাপটে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। এজন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ প্রণয়নের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে উক্ত আইনের খসড়া প্রণয়নের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। নতুন আইনে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের জন্য সর্বোচ্চ মৃত্যুদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, নতুন আইনে মাদকাসক্ত সনাক্তের জন্য ডোপ টেস্টের বিধান রাখা হয়েছে। মাদক ব্যবসায় অর্থ লগ্নীকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এ আইনের আওতায় মৃত্যুদ- প্রদানের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। নতুন করে আবির্ভূত কোন মাদকদ্রব্যকে আইনের আওতায় মাদক হিসেবে ঘোষণার জন্য মহাপরিচালক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে ক্ষমতা দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। সিসা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক বিধায় একে মাদকদ্রব্যের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। মন্ত্রী জানান, সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাদক অপরাধ নিয়ন্ত্রণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৭ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, পুলিশ ও র‌্যাব ১ লাখ ৩২ হাজার ৮৩৩ জন মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এক লাখ ৬ হাজার ৬৩৬টি মামলা দায়ের করেছে। এ সময়ে অন্যান্য মাদকদ্রব্যসহ ৪ কোটি ৭৯ হাজার ৪৪৩ পিস ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে। চলমান মাদকবিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১৮ সালের মার্চ পর্যন্ত ২৭ হাজার ৩৪০টি মামলায় ৩৫ হাজার ৩১২ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ অভিযান চলাকালে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১ হাজার ২৮৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল আরও জানান, ইয়াবা পাচার রোধকল্পে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে এ পর্যন্ত ৩টি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি বৈঠকে মিয়ানমার ও ভারতে অবস্থিত মাদক ব্যবসায়ীদের এবং মাদক তৈরির গোপন কারখানার তালিকা উভয় দেশের প্রতিনিধির কাছে হস্তান্তরপূর্বক এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে। মিয়ানমারকে ইয়াবার উৎপাদন ও প্রবাহ বন্ধ করার জন্য এবং মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত ইয়াবা তৈরির কারখানা সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।
×