ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিনেমা নির্মাণ কঠিনতম কাজ বাংলাদেশে : মাবরুর রশিদ বান্নাহ

প্রকাশিত: ০৭:৩০, ১২ জুলাই ২০১৮

সিনেমা নির্মাণ কঠিনতম কাজ বাংলাদেশে : মাবরুর রশিদ বান্নাহ

তরুণ নাট্যনির্মাতা মাবরুর রশিদ বান্নাহ। নির্মাণের মুন্সিয়ানা দেখিয়ে এরই মধ্যে এসেছেন আলোচনায়। তার নির্মিত নাটকগুলো পেয়েছে জনপ্রিয়তা। বর্তমানে সব শ্রেণীর দর্শকদের কাছে বান্নাহর নাটক মানেই অন্যরকম ভাল লাগা। সমসাময়িক প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাতকার নিয়েছেনÑ রুহুল আমিন ভূঁইয়া আনন্দকণ্ঠ : ঈদ নাটকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন? মাবরুর রশিদ বান্নাহ : এই ঈদে আমার পরিচালিত ১৩টি নাটক প্রচার হয়েছে। হোম টিউটর, বোন, চশমায় লেগে থাকা ভালবাসা, নিয়তি, ছাত্র, গল্পটা, ব্রাজিল ভার্সেস আর্জেন্টিনা, ভাই কিছু বলতে চায়, সুখ, সাংসারিক ভালবাসা, আর্জেন্টিনা ভার্সেস ব্রাজিল, মানুষ ও মেয়েটার রাগ বেশি। ঈদে নাটকে আলহামদুলিল্লাহ্ খুবই ভাল সাড়া পাচ্ছি। ভাবনার চেয়েও বেশি সাড়া পাচ্ছি। হোম টিউটর নম্বর অনে রয়েছে। প্রতিটি নাটকই দারুণ আলোচিত হয়েছে। এ ছাড়া ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে একাধিক নাটক প্রচার হয়েছে। সেগুলোও বেশ ভাল সাড়া ফেলেছে। ঈদে আমি আমার সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করি। চেষ্টা করেছি নাটকের গল্পগুলোকে নায়ক করতে। গল্পকেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় আমার ১৩টি নাটকের গল্পই ছিল ১৩ ধরনের। ভিন্নতা ছিল একটি থেকে অন্যটির। নাটক প্রচার হওয়ার পর আমি বেশ সাড়া পেয়েছি। দর্শকরা ভালই বলছে। আমার নাটকে তারা খুশি। আনন্দকণ্ঠ : সিনেমা নিয়ে ভাবনা- মাবরুর রশিদ বান্নাহ : আমি অবশ্যই সিনেমা নির্মাণ করব। এটার জন্য তাড়াহুড়ো করছি না। কারণ এই বছরটা নির্বাচনের বছর। সুতরাং পারিপার্শ্বিক অবস্থা অনুকূলে নাও থাকতে পারে। ভেবেচিন্তে আস্তে আস্তে নামতে চাই। এ বছর করার প্ল্যান ছিল। কিন্তু সামনে জাতীয় নির্বাচন তাই রিস্কে যেতে চাই না। বাংলাদেশের সিনেমা খুব রিস্কের জায়গা। মানসিকভাবে প্রস্তুতির দরকার আছে। বাংলাদেশে ছবি নির্মাণ সহজ নয়। দুনিয়ার কঠিনতম কাজের মধ্য এটি একটা। এতে শত বাধা বিপওি আছে। একটু সময় লাগবে। পারিপার্শ্বিক অবস্থা, দেশের অবস্থা, মানুষের অবস্থা ভাল থাকলে দেখা যাবে। আগামী বছর চেষ্টা করব করার। তবে ফিল্ম নিয়ে তারাহুড়ো করতে চাই না। আনন্দকণ্ঠ : বর্তমানে অধিকাংশ সিনেমাই ব্যবসায়িকভাবে ব্যর্থ হচ্ছে, তবুও সিনেমা বানানোর চিন্তা করছেন কেন? মাবরুর রশিদ বান্নাহ : আসলে হতাশার জায়গা থেকেই উত্তরণের পথ তৈরি হয়। এখন সিনেমার বাজার খারাপ, তাই বলে আমি যদি হতাশা নিয়ে বসে থাকি, তা হলে তো বাজার কখনও পরিবর্তন হবে না। সুতরাং আমাদের মতো তরুণ যারা আছেন, যারা নিজেদের প্রস্তুত করছেন এত দিন ধরে, তাদের এবার সিনেমায় যাওয়া জরুরী কারণ আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে আমাদেরই এগিয়ে নিতে হবে। তা ছাড়া আমাদের সিনেমার মান কিন্তু দিন দিন বাড়ছে। গত বছর অনেক ভাল ভাল সিনেমা হয়েছে। এই বছরও বেশ কয়েকটা ভাল সিনেমা আসবে। পৃথিবীর সব ইন্ডাস্ট্রির অধিকাংশ সিনেমাই ফ্লপ হয়। এটা মেনে নিতেই হবে। ব্যবসা সফল হয় গুটিকয়েক সিনেমা। আনুপাতিক হারে তিন ভাগের এক ভাগ সিনেমা সফল হয়। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিও সেই জায়গায় গিয়ে পৌঁছাবে। এটার জন্য একটু সময় দিতে হবে এই আরকি। বেশি ভাগ ছবিই ফ্লপ করছে তাই যেনে শুনে কেন বিষ পান করতে যাব। সেটারও একটা ব্যাপার আছে। কেউ কি গ্যারান্টি দিতে পারবে আমার সিনেমা যতই ভাল হোক না কেন ব্যবসা করে আসবে। আসলে এটার গ্যারান্টি নেই বাংলাদেশে। ভাল ছবি বাংলাদেশে ব্যবসা করতে পারেনি। এটার অনেক ভূরি ভূরি উদাহরণ রয়েছে। এগুলো অনেক ভাল ছবি। সবাই বলছে সুন্দর ছবি প্রশংসা করছেন। কিন্তু ব্যবসা করেনি। তাই যেনে শুনে বিষ পান করতে এখনও রেডি না আমি। একটু সময় লাগবে। আনন্দকণ্ঠ : আপনার সিনেমার গল্পটা কেমন হবে? প্রচলিত বাণিজ্যিক ঘরানার নাকি বিকল্প ধারার? মাবরুর রশিদ বান্নাহ : আমি সিনেমা বানালে বাণিজ্যিক সিনেমাই বানাব। আমার গল্পটা একেবারে ভিন্ন ধারার নতুনত্ব গল্প খুঁজে পাবে দর্শক। বিকল্প ধারার সিনেমা হবে। আনন্দকণ্ঠ : তরুণ নাট্যনির্মাতা হিসেবে বর্তমান সময়ের নাটক নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী? মাবরুর রশিদ বান্নাহ : সত্যি কথা বলতে বর্তমানে নাটকের ভাল সময় চলছে। একটি বছর আগেও নাটক নিয়ে নেগেটিভ কথা হতো। নাটক হচ্ছে না মানুষ সমালোচনা করত। তবে আমার কাছে এখন যেটা মনে হয় নাটক নিয়ে সব চেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। ঈদ, ভালবাসা দিবস, পহেলা বৈশাখ কিংবা বিশেষ দিবসের নাটক দেখলে বোঝা যায়। মানুষ এখন নাটক দেখছে, আলোচনা হচ্ছে। ছোট্ট একটি উদাহরণ দেই এই যে কোটি কোটি ভিউ হচ্ছে দর্শক না দেখলে তো হচ্ছে না। এটা কোন মেশিন দিচ্ছে না। মানুষই দেখছে তারাই দিচ্ছে। ইউটিউবের দিকে তাকালে আমরা বলতে পারি কত কোটি কোটি মানুষ এখন নাটক দেখছে।
×