ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

খুলনা-কলকাতা মৈত্রী ট্রেনে যাত্রী কমছে

প্রকাশিত: ০৭:০৬, ১২ জুলাই ২০১৮

খুলনা-কলকাতা মৈত্রী ট্রেনে যাত্রী কমছে

আবুল হোসেন, বেনাপোল ॥ খুলনা-বেনাপোল-কলকাতা রুটে সরাসরি চলাচলকারী ট্রেন ‘বন্ধন’ এক্সপ্রেসে যাত্রী বাড়ছে না বরং কমতে শুরু করেছে। ১০টি কোচের এই ট্রেনে ৪৫৬টি আসন থাকলেও যাতায়াত করছে ১০০ থেকে ১২০ জন যাত্রী। অথচ বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন ৪-৫ হাজার পাসপোর্টযাত্রী ভারতসহ বিভিন্ন দেশে যাতায়াত করে থাকে। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, দুদেশে এর তেমন প্রচার নেই। দুদেশের নির্দিষ্ট দুটি স্টেশনে টিকেট বিক্রি করায় যাত্রীদের এর প্রতি অনীহা দেখা দিচ্ছে। কলকাতা থেকে প্রতি বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় ছেড়ে এসে সাড়ে ১২টায় খুলনায় পৌঁছে ট্রেনটি। আবার খুলনা থেকে ১টা ৩০ মিনিটে ছেড়ে এসে সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে কলকাতা পৌঁছে। এদিকে রেল কর্তৃপক্ষের পদ্ধতিগত ভুলই যাত্রী স্বল্পতার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন এ রুটে যাতায়াতকারীরা। যশোর ও বেনাপোল রেলস্টেশনে টিকিট বিক্রি না করা, যশোর ও বেনাপোল রেলস্টেশনে এ অঞ্চলের মানুষের জন্য স্টপেজ না দেয়া, অন্যদিকে সপ্তাহে মাত্র একদিন এ রুটে ট্রেন চলাচল এমন সব কারণ সামনে আসছে যাত্রী কম হওয়ার পেছনে। এছাড়া ভাড়ার পরিমাণও যাত্রীস্বল্পতার আর একটি বড় কারণ। ১২০ কিলোমিটার সড়কে এসি সিটে ভাড়া নেয়া হচ্ছে ভ্রমণকরসহ ২ হাজার টাকা ও এসি চেয়ারে নেয়া হচ্ছে ভ্রমণকরসহ ১ হাজার ৫০০ টাকা। অথচ বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে একজন পাসপোর্ট যাত্রীর কলকাতা যেতে ভ্রমণকরসহ খরচ হয় মাত্র ৬০০ টাকা। যশোর নাগরিক কমিটি যশোর রেলস্টেশনে টিকেট বিক্রি ও যাত্রী ওঠানো-নামানোর দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। তাতেও তেমন একটা সাড়া মেলেনি রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। খুলনা-বেনাপোল-কলকাতা রুটে আন্তঃদেশীয় যাত্রীবাহী ট্রেন ‘বন্ধন’ এক্সপ্রেসের পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু হয় ২০১৭ সালের ১৭ নবেম্বর। গত ৭ মাসে ট্রেনের যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি না পেয়ে ক্রমাগত কমতে শুরু করেছে। ফলে লোকসানের বোঝা টানতে হচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষকে। ভারতীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, নিরাপত্তার স্বার্থে আপাতত খুলনা ও কলকাতা ছাড়া কোথাও স্টপেজ বা টিকেট বিক্রি করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন রেল স্টেশনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার হলে অন্যান্য স্টপেজে যাত্রী ওঠানামা ও টিকেট বিক্রির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। এ রুটে চলাচলকারী বাংলাদেশী পাসপোর্টযাত্রী আসাদুল হক বলেন, ভারতীয় কাস্টমসে যাত্রী হয়রানি বন্ধসহ সম্প্রতি বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রীদের ভারতে গিয়ে কমপক্ষে দুই রাত অবস্থান বাধ্যতামূলক করায় এবং সপ্তাহে একদিন ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ ট্রেন চালু থাকায় ট্রেনে করে কেউ আর যাতায়াত করতে চায় না। সপ্তাহে ২-৩ দিন ট্রেন চলাচল ও ভাড়ার পরিমাণ কমালে যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। বেনাপোল রেলস্টেশন মাস্টার শহিদুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ১৬ নবেম্বর খুলনা-কলকাতার মধ্যে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি চালু হয়। গত ৭ মাসে ৩ হাজার ৪৪৫ যাত্রী কলকাতা থেকে বাংলাদেশে এসেছে এবং বাংলাদেশ থেকে ৪ হাজার ৫৭৯ যাত্রী কলকাতায় গেছে। নিরাপদে ও সুষ্ঠুভাবে যাত্রী চলাচল করার পরও যাত্রী সংখ্যা দিন দিন কমছে।
×