ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধ

চীনের পাল্টা পদক্ষেপ

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ১২ জুলাই ২০১৮

চীনের পাল্টা পদক্ষেপ

যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর চীন বুধবার পাল্টা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে ঘোষণা করেছে। ২শ’ বিলিয়ন ডলার মূল্যের চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়ার পর বেজিং এই হুঁশিয়ারি দেয়। গার্ডিয়ান। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি চীনের বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপ অব্যাহত রাখে তবে চীনেরও পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া বিকল্প কিছু থাকে না। বেজিং বলেছে, তারা কেবল শুল্ক নিয়ে ওয়াশিংটনের সর্বশেষ সিদ্ধান্তের সাধারণ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। ওয়াশিংটন যা করেছে তা সম্পূর্ণ ‘অগ্রহণযোগ্য’। এছাড়া এ ধরনের অযৌক্তিক পদক্ষেপ অজনপ্রিয়, বিষয়টি নিয়ে চীন ডব্লিউটিও’র দারস্থ হবে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত আমদানি শুল্ক বিশ্বের দুটি বৃহৎ বাণিজ্য লড়াই শুরু করতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৬ জুলাই ৩৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেন। শুল্ক নিয়ে পাল্টাপাল্টি ব্যবস্থার হুমকির মুখেও যুক্তরাষ্ট্র ও চীন এ নিয়ে আলোচনায় বসার আগ্রহ দেখায়নি। যেসব চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে তার মধ্যে ওষুধ সামগ্রী ও প্লেনের যন্ত্রাংশ রয়েছে। একই সঙ্গে আরও ১৬ বিলিয়ন ডলার পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে রেখেছে ওয়াশিংটন। চীনও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে সমপরিমাণ মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে। এসব পণ্যের মধ্যে সয়াবিন, শুকর মাংস ও অটোমোবাইলসহ অন্যান্য পণ্যও আছে। মেক্সিকো, কানাডা ও ইইউও যুুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অনুরূপ পদক্ষেপ নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ওই দেশগুলো থেকে ইস্পাত ও এ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ করার পর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে তারা ওই পদক্ষেপ নেয়। ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টারা মনে করেন, বাণিজ্যিক প্রতিদ্বন্দ্ব^ীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা বা কূটনৈতিক প্রক্রিয়া থেকে সামান্যই সুফল এসেছে। তবে কেবল শুল্ক আরোপ করে বাণিজ্যিক প্রতিপক্ষের সঙ্গে পেরে ওঠা সম্ভব হবে ট্রাম্পের সমর্থকরা সে বিষয়ে নিশ্চিত নন। তারা আশঙ্কা করছেন ট্রাম্প সম্ভবত অনিশ্চিত পথে পা বাড়িয়েছেন। সর্বশেষ ২শ’ বিলিয়ন ডলার মূল্যের চীনা পণ্যের ওপর যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সেটি ৩০ আগস্টের পর কার্যকর হতে পারে বলে মার্কিন ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ অফিস জানিয়েছে। যেসব পণ্যের ওপর এবার শুল্ক আরোপ করা হয়েছে তার মধ্যে কাপড়, টেলিভিশন ও ফ্রিজের মতো ভোগ্যপণ্য ছাড়াও অন্যান্য হাইটেক আইটেম রয়েছে। ওয়াশিংটন বলেছে, তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও বেজিং তা আমলে নেয়নি। তাই শুল্ক আরোপ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সামনে আর কোন পথ খোলা নেই। চলতি বছর মার্চের শুরুর দিকে ট্রাম্প তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি অনুসারে শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। ইস্পাত ও এ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর প্রাথমিকভাবে এই শুল্ক আরোপ করা হবে। কংগ্রেসের রিপাবলিকান নেতৃবৃন্দের আপত্তি অগ্রাহ্য করেই তিনি ওই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ইস্পাতের তৈরি বিদেশী জিনিস আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ এবং এ্যালুমিনিয়ামের তৈরি সামগ্রীর ওপর তিনি ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করা হবে। চীনের সহকারী বাণিজ্যমন্ত্রী লি চেংগাং বুধবার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গৃহীত সর্বশেষ এই পদক্ষেপ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম ক্ষতিগ্রস্ত করার পাশাপাশি বিশ্বায়নকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তিনি আরও বলেন চলতি বছর শুরু থেকে মার্কিন শুল্কের জন্য চীনের রফতানি যেমন কিছুটা কমেছে তেমনি যুক্তরাষ্ট্রেও বাইরের বিনিয়োগ কমে গেছে।
×