স্টাফ রিপোর্টার ॥ একক বক্তৃতানুষ্ঠান ও আলোচনার মধ্যদিয়ে বহু ভাষাবিদ, দার্শনিক, জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ১৩৩তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন করা হয় বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে বুধবার বিকেলে। বাংলা একাডেমি আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ‘মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র ভাষানীতি ও ভাষাপরিকল্পনা-ভাবনা’ শীর্ষক একক বক্তৃতা করেন অধ্যাপক জীনাত ইমতিয়াজ আলী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র পৌত্রী কবি শান্তা মারিয়া, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, মানজার চৌধুরী সুইট, আবৃত্তিশিল্পী লায়লা আফরোজ প্রমুখ।
স্বাগত ভাষণে অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, বাঙালিত্বের বীজ রোপণ ও বিকাশে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র আমৃত্যু লড়াই আমাদের অনন্ত প্রেরণার উৎস।
একক বক্তা অধ্যাপক জীনাত ইমতিয়াজ আলী বলেন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র কর্মজীবন ছিল বৈচিত্র্যপূর্ণ। কিন্তু অন্যান্য পেশার চেয়ে শিক্ষকতাকেই তিনি শ্রেয়তম পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন এবং অবশিষ্ট জীবনে সেই পরিচয়কেই মহিমান্বিত করেছেন। বলা যায়, নিরলস শ্রম ও অপার অধ্যবসায়ই তাকে ‘জ্ঞানতাপস’ এবং সমকালীন বিদ্বৎসমাজের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিতে রূপান্তরিত করেছে। তাঁর চিন্তাজগৎ ও সৃষ্টিকর্ম আমাদের সমৃদ্ধ করে, তার রচনা আমাদের আত্ম-আবিষ্কারে প্রণোদিত করে। তিনি বলেন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র রচনাসম্ভার বিষয়-বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ-গবেষণামূলক প্রবন্ধ, সৃষ্টিশীল রচনা, অনুবাদকর্ম, শিশুতোষ রচনা, পাঠ্যবই প্রণয়ন, অভিধান সঙ্কলনÑসর্বত্রই তাঁর সাফল্য ও সার্থকতা অপার। পাকিস্তান আমলে রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে উদ্ভূত বিতর্কে তিনি দ্বিধাহীন চিত্তে বাংলার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছেনÑএটা তাঁর জন্য কেবল আবেগের বিষয় ছিল না বরং ভাষাবিজ্ঞানী হিসেবেও তিনি মনে করতেন মাতৃভাষার মর্যাদা যে কোন নাগরিকের কাছে প্রথম ও প্রধান। তাঁর ভাষাভাবনা ও নানামুখী চিন্তার স্মারক তাঁর অভিভাষণগুচ্ছ। একক বক্তা বলেন, আমরা আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতিসহ জাতীয় জীবনের যে কোন সঙ্কটে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করতে পারি; লাভ করতে পারি অনিবার্য নির্দেশনা।
সভাপতির ভাষণে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ একজন প্রণম্য ভাষাবিদই; একই সঙ্গে তিনি বাংলা ভাষার জন্য সংগ্রামের ক্ষেত্রে অগ্রবর্তীদেরও একজন। বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় মর্যাদা বিষয়ে যেমন তিনি তাঁর জোরালো অবস্থান ব্যক্ত করেছেন তেমনি বাংলা হরফ পরিবর্তনসহ পাকিস্তান সরকারের নানা পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সাহসের সঙ্গে রুখে দাঁড়িয়েছেন।
২১তম নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে ১৪ জুলাই ॥ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে পক্ষকালব্যাপী ‘২১তম নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী ২০১৮’ শুরু হচ্ছে ১৪ জুলাই। একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে এদিন বিকেল ৪টায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ত্ব করবেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি সচিব মোঃ নাসির উদ্দিন আহমেদ ও বরণ্য চিত্রশিল্পী চন্দ্র শেখর দে।
প্রদর্শনী আয়োজন উপলক্ষে একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার সেমিনার কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন হয় বুধবার বিকেলে। এতে উপস্থিত ছিলেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, চারুকলা বিভাগের সিনিয়র ইন্সট্রাক্টর রেজাউল হাশেম ও প্রদ্যুৎ কুমার দাস, সহকারী পরিচালক আফজাল হোসেন, এ এম মোস্তাক আহমেদ, শাহীন রেজা রাসেল প্রমুখ।
