সংসদ রিপোর্টার ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানিয়েছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর খুনী মৃত্যুদ-প্রাপ্ত পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশেই আমরা আইনী পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছি। খুনী নূর চৌধুরীর বিষয়ে ইতোমধ্যে কানাডার ফেডারেল কোর্টে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, জাতির জনককে সপরিবারে হত্যার পর দায়ীদের বিচার প্রক্রিয়া থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। দীর্ঘ একুশ বছর পর ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব প্রাপ্তির পর উক্ত কালো আইন বাতিল করা হয় এবং খুনীদের বিচারের সম্মুখীন করা হয়। বিভিন্ন পর্যায়ে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর ১২ জন আসামিকে মৃত্যুদ- প্রদান করা হয়।
তিনি জানান, ২০১০ সালের ১৮ জানুয়ারি মৃত্যুদ- প্রাপ্ত ১২ আসামির মধ্যে ৫ আসামির মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়। আসামি আবদুল আজিজ পাশা জিম্বাবুয়েতে মৃত্যুবরণ করে। বাকি ৬ দ-প্রাপ্ত আসামি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশে পালিয়ে আছে। এদের মধ্যে নূর চৌধুরী কানাডায় ও রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে আছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অপর পলাতক আসামিদের মধ্যে খন্দকার আবদুর রশিদ পাকিস্তানে, শরিফুল হক ডালিম লিবিয়া অথবা জিম্বাবুয়ে এবং আবুল মাজেদ সেনেগাল অবস্থান করছে বলে ধারণা করা হয়। রিসালদার (অব) মোসলেহ উদ্দিন জার্মানিতে অবস্থান করছে বলে ধারণা করা হলেও এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। পলাতক এ সকল খুনীদের অবস্থান নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে কূটনৈতিকসহ সকল তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামিদের ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে আমরা জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এক্ষেত্রে বেশ কিছু আইনী জটিলতা রয়েছে। যেমন কানাডাসহ বেশ কিছু পশ্চিমা দেশ মৃত্যুদ- বিলোপ করেছে। বিশেষত কানাডার আইনে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামিদের প্রত্যাবসনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ কারণেই কানাডার ফেডারেল কোর্ট কর্তৃক নূর চৌধুরীর রিফিউজি স্ট্যাটাস আবেদন প্রত্যাখ্যান এবং তার বিরুদ্ধে ডিপোর্টেশন আদেশ জারি হওয়া সত্ত্বেও কানাডা সরকার নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে দিতে অপরাগতা প্রকাশ করছে। জটিলতা সত্ত্বেও দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজে বের করার জন্য আমরা কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: