ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইংল্যান্ডের সাফল্যের নেপথ্যে গার্ডিওলার অবদান!

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ১১ জুলাই ২০১৮

ইংল্যান্ডের সাফল্যের নেপথ্যে গার্ডিওলার অবদান!

রুমেল খান ॥ স্পেন জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে খেললেও (জিতেছেন ১৯৯২ অলিম্পিকে স্বর্ণপদক) কখনও কোন জাতীয় দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেননি প্রখ্যাত কোচ পেপ গার্ডিওলা। ৪৭ বছর বয়সী এই কোচের নাম স্বভাবতই চলমান রাশিয়া বিশ্বকাপে আসার কথা নয়। অথচ তারপরও এসেছে। কেন এবং কিভাবে? চলতি বিশ্বকাপে খুব ভাল খেলে ইংল্যান্ড চলে গেছে সেমিফাইনালে। ২৮ বছর পর এমন সাফল্যের পুনরাবৃত্তিতে দলের হেড কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের নামটাই আসা উচিত সবার আগে। অথচ ইংল্যান্ড এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক তারকা ফুটবলার পল স্কোলস্ মনে করেনÑ দলের এই সাফল্যের নেপথ্যে আছে গার্ডিওলার অবদান! বার্সেলোনা, বার্য়ান মিউনিখ ঘুরে গার্ডিওলা ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটির কোচ। বর্তমান ইংলিশ স্কোয়াডে এই ক্লাবের কিছু ফুটবলার আছেন, যারা গার্ডিওলার কোচিং পেয়েছেন। আরও মজার ব্যাপারÑ আগের দুটি বিশ্বকাপে যেসব দেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, সেই দেশগুলোতে তখন ক্লাব পর্যায়ে কোচিং করিয়েছেন গার্ডিওলা। যেমন ২০১০ সালে স্পেন যখন চ্যাম্পিয়ন হয়, তখন গার্ডিওলা ছিলেন বার্সেলোনার কোচ। এই ক্লাবের ৭ জনই বিশ্বকাপে খেলেন স্পেনের হয়ে। এছাড়া ২০১৪ বিশ্বকাপে যখন জার্মানি চ্যাম্পিয়ন হয়, তখন গার্ডিওলা ছিলেন বার্য়ান মিউনিখের কোচ। এই ক্লাবের ৭ জনই বিশ্বকাপে খেলেন জার্মানির হয়ে। এখন গার্ডিওলা আছেন ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার সিটির কোচ হিসেবে। ২০১৮ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড সেমিফাইনালে ওঠে গেছে। ইংল্যান্ড দলের ৪ ফুটবলারই এই ক্লাবের হয়ে (কাইলি ওয়াকার, জন স্টোন্স, রাহিম স্টার্লিং এবং ফাবিয়ান ডেল্ফ)। তাহলে কি এবার ইংল্যান্ডই জিতবে এবারের বিশ্বকাপ, আর এমনটা ভেবেই কি স্কোলস্ এই ধারণায় উপনীত হয়েছেন? ১৯৭১ সালের ১৮ জানুয়ারি স্পেনে জন্ম নেয়া গার্ডিওলা খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারের ইতি টেনে চলে আসেন কোচিংয়ে। ২০০৭-০৮ মৌসুমে দায়িত্ব পালন করেন বার্সিলোনা বি দলের। এরপর ২০০৮ সালে আচমকাই পেয়ে যান বার্সিলোনার মূল দলের দায়িত্ব। সেই থেকে টানা চার বছর কাতালানদের হয়ে পেয়েছেন স্বর্ণসাফল্য। মু-িত মস্তক। কেতাদুরস্ত পোশাকে ডাগআউটে চঞ্চল পায়চারী। কখনও কখনও গলা উঁচিয়ে মেসি-জাভিদের প্রয়োজনীয় টিপস। ২০০৮ থেকে ২০১২, বার্সিলোনার ডাগআউটে এমন দৃশ্যের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন গার্ডিওলা। মাত্র চার বছর, এর মধ্যে দলকে জিতেছিলেন ১৪টি শিরোপা (দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লীগ, টানা তিন লা লীগা শিরোপা)। দলকে বানিয়েছিলেন প্রায় ‘অপরাজেয়’। সবচেয়ে বড় কথাÑ মেসি, জাভি, ইনিয়েস্তাদের মতো খেলোয়াড়দের তিনি বেঁধে ছিলেন এক সুতায়। লোকে বলত, বার্সা খেলে ভিনগ্রহের খেলা। তবে পেপের রাজত্বের অবসান হয় ২০১২ সালে। স্বেচ্ছায় ছাড়েন বার্সার চাকরি। লক্ষ্য ছিল একটু বিশ্রাম। তবে তা এক বছরের বেশি হয়নি। পাড়ি জমান জার্মানিতে। জায়ান্ট বেয়ার্ন মিউনিখের কোচ হিসেবে যোগ দেন ২০১৩ সালে। তিন মৌসুমে জেতেন তিনটি বুন্দেসলিগসহ মোট সাতটি শিরোপা। একগেয়েমিতে পেয়ে বসায় এবং নতুন চ্যালেঞ্জের রোমাঞ্চের স্বাদ পেতে ২০১৬ সালে যোগ দেন ম্যানসিটিতে। ইতোমধ্যেই জিতেছেন প্রিমিয়ার লীগ এবং ইপিএল কাপের শিরোপা। এখন দেখার বিষয়, গার্ডিওলা কেন্দ্রিক ২০১০ এবং ২০১৪ বিশ্বকাপের সূত্র মেনে এবার ২০১৮ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হতে পারে কি না ইংল্যান্ড।
×