ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অপেক্ষার অবসান চান বিলিচ

প্রকাশিত: ০৭:০২, ১১ জুলাই ২০১৮

অপেক্ষার অবসান চান বিলিচ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ বছর আগে ১৯৯৮ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপে খেলতে নেমেই সেমিফাইনালে খেলেছে ক্রোয়েশিয়া। এরপর আর সেই সাফল্য দেখা যায়নি। গ্রুপপর্ব থেকেই ছিটকে গেছে। এবারও সেমিফাইনালে উঠেছে ক্রোয়েশিয়া। আজ ইংল্যান্ডকে হারাতে পারলে ফাইনালেও উঠে যাবে। ইতিহাসের সেরা সাফল্য মিলবে। ’৯৮ সালের বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার ফুটবল দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, ডিফেন্ডার ও সাবেক কোচ স্লাভেন বিলিচ তাই চান। ক্রোয়েশিয়ার অপেক্ষার অবসান চান। দলকে প্রথমবারের মতো ফাইনালে দেখতে চান। চান বর্তমান দলটি ’৯৮ সালের বিশ্বকাপের ইতিহাসকেও পেছনে ফেলে দিক। বিলিচ বলেন, ‘এই সময়ের জন্য আমরা ২০ বছর অপেক্ষায় ছিলাম। সর্বসামর্থ্য দিয়েই চেষ্টা চালিয়ে যাব স্বপ্ন পূরণের জন্য।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘ক্রোয়েশিয়ার দিক থেকে দেখলে, চার-পাঁচটি টুর্নামেন্টে তারা কেঁদেছে। তারা ভুগেছে। তবে এখন তারা পরিণত। আবেগে তারা বাঁধ দিতে শিখেছে। শেষ পর্যন্ত তারা এমন একটি অবস্থানে উঠে এসেছে, যেখানে থেকে সবকিছু পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা যায়।’ রাশিয়া বিশ্বকাপ আসর ক্রোয়েশিয়ার ফুটবল ইতিহাসের জন্য পঞ্চম বিশ্বকাপ। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে প্রথমবার তারা অংশ নিয়েই বিশ্বকে চমক দেখিয়ে দিয়ে তৃতীয় স্থান দখল করে নেয়। তারপর চলতি রাশিয়া বিশকাপে আবারও একবার ফুটবল বিশ্বকে দারুণ চমক দেখিয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেল ক্রোয়েশিয়া। ১৯৯৮ সালের পর অবশ্য ক্রোয়েশিয়াকে আর তেমন করে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ২০০২, ২০০৬ বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নেয় তারা। ২০১০ বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে পারেনি। ২০১৪ বিশ্বকাপে আবার গ্রুপপর্ব থেকেই বাদ পড়ে যায়। সেই ক্রোয়েশিয়াই এবার উঠে এসেছে সেমিফাইনালে। ২০ বছর পর আবার বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের মঞ্চে। দাবোর সুকের, জমিনির বোবানদের অতীত সাফল্য যে তাদের অনুপ্রাণিত করে এসেছে, সেকথা বহুবার স্বীকার করে নিয়েছেন লুকা মডরিচরা। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সে তৃতীয় স্থান দখল ক্রোয়েশিয়া ফুটবল ইতিহাসের সোনালী অধ্যায়। তবে এই দলটা দু’দশক আগের সেই সাফল্যে রাশিয়ায় ছাপিয়ে যেতে মরিয়া। কোয়ার্টার ফাইনালে আয়োজক রাশিয়াকে টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়ে শেষ চারের টিকেট আদায় করে নিয়েছে ক্রোয়েটরা। মডরিচদের বিশ্বাস, তারা নতুন ইতিহাস লিখবেন। মডরিচ সেকথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘২০ বছর পর আমরা আবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। এই সাফল্যে প্রত্যেকেই আনন্দিত এবং গর্বিত।’ পরক্ষণেই বিলিচকে সাহস যুগিয়েছেন মডরিচ, ‘এখানে আমাদের লক্ষ্য আলাদা। গত কয়েকটা টুর্নামেন্টে ভাল যায়নি। এখানে সেগুলো সুদে-আসলে পুষিয়ে নিতে চাই। এই দলটা যথেষ্টই দক্ষ। কোচ থেকে সাপোর্ট স্টাফরা প্রত্যেকেই দুর্দান্ত। আশা করছি ’৯৮ বিশ্বকাপের থেকেও একধাপ এগিয়ে যেতে পারব।’ বিগত দশ বছর ধরে ব্যালন ডি’ওর মঞ্চে একছত্র রাজত্ব চলছে দুই মহাতারকার। লিওনেল মেসি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। রিয়ালে রোনাল্ডোর সঙ্গেই খেলেন মডরিচ। বিশ্বকাপে যার দাপটটা দেখে অনেকেই মনে করছেন এবার মেসি, রোনাল্ডোকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবেন মডরিচ। যদিও এই ক্রোট তারকার পাখির চোখ বিশ্বকাপ ট্রফি। বলেন, ‘আমার কাছে এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জাতীয় দলের সাফল্য। এই কৃতিত্ব অনেক বড়। ব্যক্তিগত সাফল্যের পুরস্কার আমার কাছে ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। হ্যাঁ, এটা ঠিক সাফল্যের স্বীকৃতি আরও ভাল পারফর্ম করার অনুপ্রেরণা জোগায়। তবে সত্যি বলছি, এখন ওসব নিয়ে ভাবছি না। দেশের জার্সিতে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলতে নামব এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। এখন পদক নিয়েই ঘরে ফিরতে চাই।’
×