ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নীলফামারীতে পাটের ভাল ফলনের সম্ভাবনা

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ১১ জুলাই ২০১৮

নীলফামারীতে পাটের ভাল ফলনের সম্ভাবনা

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ এক সময়ের অর্থকড়ি ফসল পাট পুনরায় পূর্বের স্থানে ফিরে আসতে শুরু করেছে। কৃষকরা দুই বছর ধরে পাটের ভাল দাম পাওয়ায় জেলায় এবার পাটের আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ১৫৯ হেক্টর জমিতে। এতে পাটের উপাৎদন হবে প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন । পাটের নানাবিধ ব্যবহার বাড়ায় দিন দিন কৃষক আগ্রহী হচ্ছে পাট চাষে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ সূত্র জানায়, জেলায় এবার পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে। সেখানে অর্জিত হয়েছে ৯ হাজার ১৫৯ হেক্টর জমি। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০ হাজার ৫৩১ মেট্রিকটন বেল। আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কিছুটা ঘাটতি থাকলেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রার সমপরিমাণ পাট উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্র মতে, গত বছর পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে। অর্জিত হয় ৯ হাজার ১৬০ হেক্টর । আবাদের ওই পরিমাণ জমিতে ২০ হাজার ৬২৯ মেট্রিকটন পাট উৎপাদন হয়েছিল। সে তুলনায় এবারও প্রায় সমপরিমাণ জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। জেলা সদরের টুপামারি ইউনিয়নের দোগাছি গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন (৫৫) বলেন, বিএনপি সরকারের সময় আমরা পাটের আবাদ করে লোকসান গুনেছি। পাট সে সময় আমাদের গলার ফাঁসে পরিণত হয়েছিল। ফলে আমরা পাট চাষ হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলাম। এই কৃষক জানায়, আমরা জানতে পেরেছি বর্তমান সরকার পাট শিল্পকে চাঙ্গা করে তুলেছে। প্লাস্টিক বস্তা ও ব্যাগের পরিবর্তে এখন চটের বস্তা ব্যবহার বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে পাটের চাহিদা বেড়ে গেছে। পাটের নায্য দাম পাচ্ছে কৃষক। এ কারণে পাট আবাদে আগ্রহ তৈরি হয়েছে কৃষকের। জলঢাকা উপজেলার দেশীবাড়ি গ্রামের কৃষক পলাশ রায় (৪৫) বলেন,পাট এক সময়ে কৃষকের অর্থকরী ফসল ছিল। কিন্তু বিএনপি সরকারে সময় জুটমিলগুলো বন্ধ করে দেয়ায় পলিথিনের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে। ফলে পাটের ব্যবহার কমে যাওয়ায় হারিয়ে যায় কৃষকের সেই অর্থকরী ফসল। বর্তমান সরকার পাট উৎপাদন ও পাটের তৈরি পণ্যের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। তাই এখন আবারও পাটের ব্যবহার ও চাহিদা বেড়েছে। ফলে কৃষক পাট আবাদের দিকে মনোনিবেশ করেছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার খাদ্যদ্রব্যসহ বিভিন্ন পণ্য বাজারজাতকরণে পরিবেশ বান্ধব পাটের বস্তা ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি সচেতন মানুষের মধ্যে পাটের ব্যবহার বেড়েছে। পাটের চাহিদা বাড়ায় বাজারদর বেড়েছে। ফলে পাট চাষে আগ্রহী হচ্ছে কৃষক। আগামীতে নীলফামারী জেলায় পাটের আবাদ ও উৎপাদন দ্বিগুণ হবে বলে তিনি আশা করেন।
×