ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রোমেলু লুকাকু নাকি এ্যান্টনি গ্রিজম্যান

কার আলোয় জ্বলবে আজ পিটার্সবার্গ?

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১০ জুলাই ২০১৮

কার আলোয় জ্বলবে আজ পিটার্সবার্গ?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ তিন দশকেরও বেশি সময় পর আবারও বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে বেলজিয়াম। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স উপহার দিয়েই রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে বেলজিকরা। এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন কেভিন ডি ব্রুইন, এডেন হ্যাজার্ড, রোমেলু লুকাকু কিংবা থিবাউ কুর্তোয়ার মতো খেলোয়াড়রা। তবে চার গোল করে বেলজিয়ামকে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের শেষ চারের টিকেট কাটাতে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন রোমেলু লুকাকু। আজও কী জ্বলে ওঠবেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই তারকা ফুটবলার? ফুটবলপ্রেমীদের অপেক্ষা এখন সেটাই দেখার। এদিকে, ২০০৬ সালের পর আবারও বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলছে ফ্রান্স। যার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন দলের একঝাক নতুন তারকা। কিলিয়ান এমবাপে, এ্যান্টনি গ্রিজম্যান, রাফায়েল ভারানে, পল পোগবাদের নজরকাড়া পারফর্মেন্সে সৌজন্যেই রাশিয়ায় ফরাসী সৌরভ ছড়াচ্ছে দিদিয়ের দেশমের দল। তবে আজ বেলজিয়ামের বিপক্ষে ফরাসী ফুটবলপ্রেমীদের বাজি এ্যান্টনি গ্রিজম্যান। উরুগুয়ের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও যে তার গোলেই ২-০ ব্যবধানের জয় নিশ্চিত করেছিল ফ্রান্স। বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই ফেবারিটের তকমাটা গায়ে মাখানো ছিল বেলজিয়ামের। দলের সেরা তারকা রোমেলু লুকাকুর উপরও আলাদা করে নজর রেখেছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা। সমর্থকদের মোটেও হতাশ করেননি লুকাকু। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচেই চার গোল করেন তিনি। যদিওবা শেষ ষোলো আর কোয়ার্টার ফাইনালে গোলবিহীন বেলজিয়ামের এই তারকা ফুটবলার। তবে সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়েছেন ঠিকই। শেষ দুই ম্যাচে গোল না পেলেও ফ্রান্সের বিপক্ষে ম্যাচেই গোলের দেখা পাবেন বলে আশাবাদী ম্যানইউ তারকা। এ বিষয়ে লুকাকু বলেন, ‘শেষ দুই ম্যাচে গোল করতে পারিনি। তবে সতীর্থদের দিয়ে গোল তো করিয়েছি। ফ্রান্সের বিপক্ষে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। এ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেই গোল করব আমি।’ চার গোল করে এখন পর্যন্ত সোনার বুট জয়ের দৌড়েও এগিয়ে রয়েছেন লুকাকু। কেননা তার সামনে যে কেবল হ্যারি কেন। ইংলিশ দল নায়কের গোলসংখ্যা ছয়। তবে নিজের গোলসংখ্যাটা আজই বাড়িয়ে নিতে মরিয়া লুকাকু। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথম দুই’ ম্যাচে গোল করেছিলাম। কিন্তু শেষ দু’ম্যাচে গোল করতে পারিনি। এজন্য আমি চিন্তিত নই। কারণ শেষ দুই ম্যাচে আমার ভুলেই গোল করতে পারিনি। এমন ভুল না করার চেষ্টা করব। ফ্রান্সের বিপক্ষে ম্যাচেই গোল পেয়ে যাব বলে আশা করি। আমার লক্ষ্যই থাকবে, যেকোন উপায়ে গোল করা।’ বেলজিয়ামের মতো ফরাসী দলেও তারকা ফুটবলারের ছড়াছড়ি। তবে এ্যান্টনি গ্রিজম্যান সবার চেয়ে এগিয়ে। দুর্দান্ত স্কিল, ক্ষিপ্রগতি। অসাধারণ ড্রিবলিং করে প্রতিপক্ষের ফুটবলারদের বোকা বানাতেও সিদ্ধহস্ত তিনি। ‘বুলেট’ গতির শটের জন্যও বিখ্যাত। তার পায়ের জাদুতেই সব বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছেছে ফ্রান্স। এই গ্রিজম্যানকেই বলা হচ্ছে ফ্রান্সের নতুন জিদান। এবারের বিশ্বকাপে জিদানের মতো একই ভূমিকা পালন করছেন গ্রিজম্যান। স্ট্রাইকারকে দুর্দান্তভাবে বল তৈরি করে দিতে যেমন দারুণ অভিজ্ঞ তেমনি নিজে গোল করার ক্ষেত্রেও অন্যদের চেয়ে এগিয়ে। রাশিয়া বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচে তিন গোল করেছেন তিনি। সতীর্থদের দিয়ে একটি গোল করাতেও ভূমিকা রেখেছেন এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের এই ফরাসী তারকা। উরুগুয়ের বিপক্ষে ৩০ গজ দূর থেকে অসাধারণ এক গোল করে এবারের আসরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছেন তিনি। সেমিফাইনালে আজ ফ্রান্সের বিপক্ষেও গ্রিজম্যানের ওপর প্রত্যাশা বেশি। উরুগুয়ের বিপক্ষে সেই গোলের পর গ্রিজম্যান উল্লাস উদযাপন করেননি। তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন এই ফরাসী তারকা, ‘আমি উল্লাস উদযাপন করিনি। কারণ এক উরুগুইয়ান লোকের হাত ধরেই আমি আমার ফুটবল-ক্যারিয়ার শুরু করি, যে আমাকে ফুটবলের ভাল-মন্দ শিখিয়েছে। তাই উরুগুয়েকে আমি অনেক সম্মান করি। আমি আমার বন্ধুদের বিপক্ষেও খেলছিলাম, তাই আমার কাছে উদযাপন করাটা ঠিক মনে হয়নি।’ তবে রেড ডেভিলসদের সতর্ক করে গ্রিজম্যান বলেন, ‘আমরা যেকোন দলের ডিফেন্স ভাঙতে সক্ষম। আমাদের আরও পরিশ্রম করতে হবে। যখন আমরা আমাদের ছন্দের ওপর লক্ষ্য করে খেলতে থাকি, তখন আমাদের জেতার খুব ভাল সুযোগ থাকে।’
×