ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বন্যার আশঙ্কায় যমুনা পারের মানুষের ছোটাছুটি

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ১০ জুলাই ২০১৮

বন্যার আশঙ্কায় যমুনা পারের মানুষের ছোটাছুটি

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ যমুনা পারের মানুষের ছোটাছুটি শুরু হয়েছে। বন্যার শঙ্কায় আশ্রয় নিচ্ছে শুকনো ভূমি ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর। দিন কয়েক আগে পানি বেড়ে ছিল বেশি। যমুনার বিপদ সীমা (ডেঞ্জার লেভেল) ১৬ দশমিক ৭০ মিটার। দু’দিনে একটু কমেছে। তারপরও সোমবার বিকেল পর্যন্ত বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পনি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাগণ বলছেন পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলেও এই মুহূর্তে পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে উজানের ঢলের পানি ভাটির দিকে যাওয়ার সময় পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে। এই শঙ্কাতেই নদী তীর ও চরগ্রামের নিচু এলাকার লোকজন নৌকায় ঘর গৃহস্থালির জিনিসপত্র তুলে ঢেউয়ের মধ্যেই রওনা হচ্ছে কাছাকাছি শুকনো ভূমি ও কোন বাঁধের ওপর। যমুনার পূর্ব পাশে চারদিকে পানি। এর মধ্যেই লোকজন নৌকায় সম্বল যা পেয়েছে তাই তুলে রওনা দিয়েছে উঁচু ভূমিতে। সেখানেও পানি টুইটুম্বুর। অস্তিত্বের লড়াই যমুনার সঙ্গে। বগুড়ার যমুনা তীরের সারিয়াকান্দির ঘুঘুমারি এলাকার বসত ভিটায় পানি ছুঁই ছুঁই। প্রায় দুই বছর আগে ধনিরকান্দি থেকে কামালপুর পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ নির্মিত হয়েছে। এই বাঁধ অনেক এলাককে বন্যার থাবা থেকে মুক্ত করেছে। এছাড়াও বন্যা মোকাবেলায় পাউবো সকল প্রস্তুতি নিয়েছে। গোদখালি ও দীঘলকান্দি এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৫শ’ ৮০ মিটার অংশ অনেকটা উঁচু করা হয়েছে। চন্দনবাইশা থেকে রহদহ হয়ে প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। কয়েকটি পয়েন্টের বাঁধ সংস্কার করা হয়েছে। এই বাঁধ নির্মাণে আবাদী ভূমি রক্ষায় বালির বাঁধের ওপর ভূমির মাটি দিয়ে কমপ্যাক্ট করা হয়েছে। তারপরও ‘সিপেজ’ (ইঁদুরের গর্ত দিয়ে পানি চুয়ে পড়া) ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বাঁধের ওপর ছোট ঝুপরি ঘর তুলে আশ্রয় নেয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। তারপরও মানবিক কারণে বন্যার্তরা আশ্রয়ের অনুমতি পেয়েছে। তবে শর্ত আছে- বসতভিটা থেকে পানি নেমে গেলেই ফিরতে হবে। বন্যা ও ভাঙন কবলিত ঘুঘুমারি থেকে নতুন বাঁধে আশ্রয় নেয়া ক’জন বললেন বন্যা না হলে তারা ফিরে যাবেন। আপাতত উন্মুক্ত আকাশের নিচেই কয়েক দিন থাকবেন। তারপর পরিস্থিতি বুঝে বাঁশ খড় কাশবনের কাঠি সংগ্রহ করে ঝুঁপড়ি ঘর বানিয়ে তার ভেতরে শুরু করবেন ঘর গেরস্তালি। এই ঘরেই রান্না, এই ঘরেই থাকা। শৌচাগার উন্মুক্ত স্থানে। এমন দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে টিকতে হচ্ছে তাদের। চন্দনবাইশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বললেন, তার এলাকার লোকজনদের যতটা সহযোগিতা করা যায় তা করছেন। এই এলাকার সংসদ সদস্য মোঃ আব্দুল মান্নান সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নিয়ে সাধ্য অনুযায়ী সহায়তা দিচ্ছেন। সারিয়াকান্দি এলাকার লোকজন বলছেন, গেল তিন বছর ধরে জুলাই ও আগস্ট মাসের দিকে সারিয়াকান্দিতে বন্যা দেখা দেয়।
×