ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রেক্সিটমন্ত্রী পদত্যাগ করায় নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে এগোনো কঠিন হতে পারে

চ্যালেঞ্জের মুখে মে

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ১০ জুলাই ২০১৮

চ্যালেঞ্জের মুখে মে

ব্র্রেক্সিটমন্ত্রী ডেভিড ডেভিস পদত্যাগের পর সঙ্কটে পড়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। ব্রেক্সিট বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসার যে নতুন পরিকল্পনা তিনি তৈরি করেছেন তার প্রতি দল ও ব্যবসায়ীদের সমর্থন আদায় করতে তিনি ব্যর্থ হওয়ার পর ডেভিস পদত্যাগ করেন। ওই পরিকল্পনায় ইইউ ছাড়ার পরও জোটের সঙ্গে দৃঢ় অর্থনৈতিক সম্পর্ক রাখার কথা বলা হয়েছে।- ইন্ডেপেন্ডেন্ট। মের মন্ত্রিসভার সদস্যরা একটি পরিচ্ছন্ন ব্রেক্সিট চাইছেন। তিনি সোমবার নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে পার্লামেন্টে বক্তৃতা করেন। ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে মন্ত্রিরা তার সঙ্গে একমত হতে পারছেন না। মের নতুন পরিকল্পনাটি কাজে আসবে না বলে নিজ দলের এমপি ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তারা তাকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ইইউবিরোধী রক্ষণশীল এমপিরা এই বলে তাকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন যে এ ধরনের নীল নক্সার চেয়ে কোন চুক্তি না করাও ভাল। মের উদ্দেশে লেখা পদত্যাগ পত্রে ডেভিস বলেন, তিনি যে ব্রেক্সিট পরিকল্পনা দিয়েছেন তা বাস্তবায়ন করা হলে ব্রিটেনের দর কষাকষির জায়গটি সঙ্কুচিত হয়ে পড়বে। এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হতে পারে যেখান থেকে বেরিয়ে আসার কোন সুযোগ থাকবে না। জুনিয়র ব্রেক্সিটমন্ত্রী স্টিভ বেকার ও সুয়েলা ব্রেভারম্যান ইতোমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন বলে ব্রিটিশ গণমাধ্যম খবর দিয়েছে। মে শুক্রবার যে পরিকল্পনা দেন যুক্তরাজ্য ইইউর সাধরণ আইন (কমন রুলবুক) মেনে চলবে। চিঠিতে ডেভিস লেখেন এটি করা হলে ব্রিটেনের অর্থনীতির একটি বড় অংশ ইউরোপের আইন নিয়ন্ত্রণ করবে। এসব কথার জবাবে মে লিখেছেন, ইউরোপীয় একক বাজার ও কাস্টম ইউনিয়ন ছাড়ার যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন তার ভিত্তিতে পরিকল্পনাটি করা হয়েছে। এর ফলে ক্ষমতা ব্রাসেলস থেকে যুক্তরাজ্যে ফেরত আসবে বলে মে মনে করেন। দু বছর ব্রেক্সিটমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য ডেভিসকে ধন্যবাদ জানান মে। ডেভিস এর আগেও বিভিন্ন সময় এই ইস্যুতে ভিন্ন মত প্রকাশ করে বলেছেন ব্রিটেনের প্রভাব খর্ব হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে যাচ্ছে। টোরি এমপি ও ইউরোপিয়ান রিসার্চ গ্রুপের (ইআারজি) প্রধান জ্যাকব রিস মগ প্রশ্ন তুলেছেন ব্রেক্সিটমন্ত্রী যেখানে পদত্যাগ করেছেন সেখানে বুঝতে হবে পরিকল্পনাটি আসলেই ত্রুটি পূর্ণ। ডেভিসের বিদায় মের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। টোরি দলের এমপিরা বলতে শুরু করেছেন, ‘এখন সময় এসেছে নতুন একজন নেতা নির্ধারণ করার। দলের ৪৮ জন মন্ত্রী এমপি মের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলে সরকারের পতন ঘটবে। তবে সরকারের পতন ঘটলে নতুন নির্বাচন দেয়া তখন অত্যাবশ্যক হয়ে পড়বে। পরিকল্পনাটি ব্রাসেলসে উপস্থাপন করার আগে সেটি পার্লামেন্টে পাস করিয়ে নিতে হবে। এই পরিকল্পনায় ব্রেক্সিটের পরও ইউরোপীয় কোর্ট অব জাস্টিসকে ব্রিটিশ আইন ব্যবস্থার ওপর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার সুযোগ দেয়া হয়েছে। অনেক ব্রেক্সিট সমর্থনকারীই এ বিষয়টিতে আপত্তি জানিয়েছেন। তারা বলছেন একক ইউরোপীয় বাজার থেকে ব্রিটেনকে বের করে আনার যে প্রতিশ্রুতি আগে দিয়েছিলেন সেটি তিনি ভঙ্গ করতে যাচ্ছেন। অনেকে এ বিষযে বিস্তারিত জানার অপেক্ষা করছেন। চলতি সপ্তাহেই চেকার্স প্ল্যান নামে পরিচিত ওই পরিকল্পনার বিষয়ে সরকারের শ্বেতপত্র প্রকাশের কথা রয়েছে। টোরি দলের এমপিরা এটাও মনে করেন যে নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেও মের পুনরায় ফিরে আসার ক্ষমতা রয়েছে।
×