ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তানের পরেই ভারত দ্বিতীয় নিকৃষ্ট দেশ ॥ অমর্ত্য সেন

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১০ জুলাই ২০১৮

পাকিস্তানের পরেই ভারত দ্বিতীয় নিকৃষ্ট দেশ ॥ অমর্ত্য সেন

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ দুজনেই গেরুয়া শিবিরের কাছে ঘোষিত চক্ষুশূল! একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। অন্যজন অর্থনীতিবিদ জঁ দ্রেজ। রবিবার ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লীতে এক অনুষ্ঠানে এসে দুজনেই তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন নরেন্দ্র মোদির জামানাকে। অমর্ত্য সেনের মতে, গত চার বছরে দেশ ‘ভুল দিকে বিরাট লাফ দিয়েছে’! এর জেরে উপমহাদেশে পাকিস্তানের পরেই ভারত এখন দ্বিতীয় নিকৃষ্ট দেশ! আর মোদি সরকারের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ স্বাস্থ্য প্রকল্পকে ‘ধাপ্পাবাজি’ বলে ব্যাখ্যা করে সরকারের বিভিন্ন নীতিকে তুলোধুনা করলেন জঁ দ্রেজ। খবর আনন্দবাজারের রবিবার জঁ দ্রেজের সঙ্গে যৌথভাবে লেখা ‘এ্যান আনসার্টেনগ্লোরি: ইন্ডিয়া এ্যান্ড ইটস কন্ট্রাডিকশন’ বইয়ের হিন্দী অনুবাদ, ‘ভারত অউর উসকে বিরোধাভাস’র আনুষ্ঠানিক প্রকাশ অনুষ্ঠানে অমর্ত্য বলেন, ‘পরিস্থিতি খুব খারাপ হয়েছে। ২০১৪-র পর থেকে ভুল দিকে বিরাট লাফ দিয়েছে। আর্থিক উন্নতিতে দ্রুততম হয়েও আমরা পেছনের দিকে যাচ্ছি।’ বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি জানান, বছর কুড়ি আগেও এই অঞ্চলের ছ’টি দেশের মধ্যে ভারত ছিল দ্বিতীয় সেরা। শ্রীলঙ্কার পরেই। ‘এখন দ্বিতীয় নিকৃষ্ট! আমাদের নিকৃষ্টতম হওয়া থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান!’ বলেন অমর্ত্য। মোদি এবং বিজেপি সম্পর্কে প্রকাশ্যেই বহুবার নিজের বিরুদ্ধ মত তুলে ধরেছেন অমর্ত্য। সে কারণে বিজেপির একাধিক নেতা তাকে বিভিন্নভাবে আক্রমণও করেছেন। কিন্তু তিনি যে তাতে দমতে নারাজ, তা বুঝিয়ে মোদি জামানায় আর্থিক বৈষম্য, জাতপাত, জনজাতিদের বিষয়গুলো নিয়ে এ দিন সরব হন প্রবীণ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। বিজেপি সরকারের হিন্দুত্বের রাজনীতিকে নিশানা করে অমর্ত্য বলেন, ‘এ সব কারণেই সার্বিক বিরোধী ঐক্যের বিষয়টি এই সময়ের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ।’ তার কথায়, ‘বিষয়টি মোদির সঙ্গে রাহুল গান্ধীর লড়াই না। এটা ভারতের বিষয়।’ একই অনুষ্ঠানে জঁ দ্রেজও নিশানা করেন মোদিকে। ইউপিএ জামানায় সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও মোদি জামানায় তিনি কার্যত ব্রাত্য। গত চার বছরে একাধিক ভোটে কার্যত গো-হারার পরে গত এপ্রিলে বিশ্বের বৃহত্তম স্বাস্থ্যবীমা প্রকল্প, ‘আয়ুষ্মান ভারত’ ঘোষণা করেন মোদি। ওই প্রকল্পটিকে নিয়ে বিপুল প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। এ দিন প্রকল্পটিকে স্রেফ ‘ধাপ্পাবাজি’ বলে ব্যাখ্যা করে দ্রেজ বলেন, ‘এই বছরে প্রকল্পটির জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা। যদি সেটা পুরোটা খরচও করা হয়, তা হলেও মাথাপিছু বরাদ্দ আসলে ২০ টাকা!’নোট বাতিলের জন্য আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া অংশই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আগেই মন্তব্য করেছিলেন দ্রেজ। এ দিন ফের সেই মত তুলে ধরে তিনি জানান, গত পাঁচ বছরে দেশের পিছিয়ে পড়া শ্রেণী মোটেই ভাল থাকেনি। মোদি জামানার শিক্ষানীতিকেও এ দিন আক্রমণ করেন দ্রেজ। তার কথায়, ‘দেশের চূড়ান্ত বৈষম্য মেটাতে সকলের জন্য উন্নতমানের শিক্ষাই দরকার এ দেশের। কিন্তু গত প্রায় পাঁচ বছরে প্রাথমিক শিক্ষাক্ষেত্রে কোন বড় পদক্ষেপ করাই হয়নি।’
×