ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

মহুয়া মুখোপাধ্যায়ের নৃত্যনাট্যে গৌতম বুদ্ধের জীবনী

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১০ জুলাই ২০১৮

মহুয়া মুখোপাধ্যায়ের নৃত্যনাট্যে গৌতম বুদ্ধের জীবনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুদ্রার সঙ্গে অভিব্যক্তির সম্মিলনে এগিয়ে যায় পরিবেশনা। নাচের আশ্রয়ে উঠে আসে এক মহামানবের জীবনের নানা অধ্যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র চেয়ারশিল্পী মহুয়া মুখোপাধ্যায় পরিবেশিত নৃত্যনাট্যটির শিরোনাম ছিল ‘বুদ্ধচরিত’। সংস্কৃত মহাকাব্য বুদ্ধচরিত অবলম্বনে বৃহস্পতিবার জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এই নৃত্যসন্ধ্যা। ভারতীয় হাইকমিশনের তত্ত্বাবধানে নৃত্যানুষ্ঠানটির আয়োজন করে ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (আইজিসিসি)। বিশ্ব সংস্কৃতি দিবস উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গৌড়ীয় নৃত্যধারায় মহুয়া মুখোপাধ্যায় মেলে ধরেন মহামানব গৌতম বুদ্ধের জীবনকে। নৃত্যের আশ্রয়ে শিল্পী গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বেড়ে ওঠাসহ তার মাঝে মানবের মুক্তির চিন্তার উদ্ভব ও শান্তির সন্ধানে গৃহত্যাগ থেকে নির্বাণ পর্যন্ত তুলে এনেছেন। ঘণ্টাব্যাপ্তির একক পারফর্মেন্সে দর্শকদের মাঝে ছড়িয়েছেন ভাললাগার অনুভব। গৌড়ীয় নৃত্য বাঙালী ঐতিহ্যগত শাস্ত্রীয় নৃত্যকলা। প্রাচীন বঙ্গের রাজধানী গৌড়ে এ নৃত্যকলার উৎপত্তি। নৃত্যশিল্পী মহুয়া মুখোপাধ্যায় এই গৌড়ীয় নৃত্যের পুনঃনির্মাণ করেছেন নৃত্যনাট্যটির মাধ্যমে। এ প্রসঙ্গে শিল্পী বলেন, যে কোন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ভিত্তি হচ্ছে সাহিত্য। তাই সংস্কৃতে রেখা এই মাহাকাব্যকে যখন গৌড়ীয় নৃত্যে রূপান্তর করলাম তখন তা এক নতুন রূপে ধরা দিল। নবীন শিল্পীদের সঙ্গীত ও নৃত্যানুষ্ঠান ॥ এক আয়োজনে পরিবেশিত হলো তরুণ শিল্পীদের নৃত্যগীত। এই নবীন শিল্পীরা সবাই শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের। বছরজুড়ে বিভিন্ন দলীয় পরিবেশনায় অংশ নেয়া এসব শিল্পী একক, দ্বৈত ও দলীয় পরিবেশনায় অংশ নিলেন। শিল্পীদের পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনা বিভাগ। সোমবার সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শিরোনাম ছিল ‘সঙ্গীত ও নৃত্যানুষ্ঠান’। পরিবেনার আগে ছিল সংক্ষিপ্ত কথন। এ পর্বে বক্তব্য রাখেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী ও প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক কাজী আসাদুজ্জামান। আয়োজনের শুরুতেই পরিবেশিত হয় সম্মেলক নাচ-গান। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের বর্ষা ঋতুভিত্তিক ‘মন মোর মেঘের সঙ্গী’ গানের সুরে পরিবেশিত হয় নৃত্য। এরপর ছিল দ্বৈত সঙ্গীতের পরিবেশনা। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘মোর ঘুমঘোরে এল মনোহর’ গানটি যুগল কণ্ঠে গেয়ে শোনান আবিদা রহমান সেতু ও হিমাদ্রী রায়। এরপর ‘সোনার বান্ধাইলা নাও’ গানের সুরে পরিবেশিত হয় সমবেত নৃত্য। ‘আমার মতো এত সুখী নয়তো কারো জীবন’ একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী সোহানুর রহমান। ‘হলুদিয়া পাখি সোনার বরন’ গানটি পরিবেশিত হয় সমবেত কণ্ঠে। এরপর আবার নৃত্য। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘কারার ঐ লোহ কপাট’ ও ‘বিদ্রোহী’ কবিতার অবলম্বনে পরিবেশিত হয় সমবেত নৃত্য। এভাবেই নানা আঙ্গিকের নাচ আর গানে এগিয়ে যায় আয়োজনটি। উকিল মুন্সির ‘আষাঢ় মাইসা ভাসা পানিরে’ গানটি গেয়ে শোনান শিল্পী রোকসানা আক্তার রূপসা, লালনগীতি ‘তিন পাগলের হল মেলা’ পরিবেশন শিল্পী হিরক সরদার। রাণী সুত্রধর ও রাফি তালুকদারের দ্বৈত কণ্ঠে গীত হয় ‘খা খা খা বক্ষিলারে খা’। এরপর ছিল কয়েকটি সমবেত নৃত্যের পরিবেশনা। ‘নাও ছাড়িয়া দে’, ‘ধন ধান্য পুষ্প ভরা’ ও ‘সে দিন আর কত দূরে’ গানের সঙ্গে তিনটি নৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পীরা। সবশেষে ‘বুকের ভিতর স্বপ্ন নিয়ে একটাই আছে দেশ’ গানে সমবেত নৃত্য পরিবেশনা দিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠান। পুরো আয়োজনটির পরিচালনায় ছিলেন মোনালিন আজাদ। অনুষ্ঠানে যন্ত্রী হিসেবে ছিলেন শিল্পী মনিরুজ্জমান, চন্দন দত্ত, সৈয়দ মেহের হোসেন, এ এফ এম একরাম হোসেন, নির্মল কুমার, সাবা জান্নাত, নারায়ণ দত্ত লিটন, তুষার ও গোলন্দাজ। উপস্থাপনা করেন তামান্না তিথি। দুই বাংলার কবির কবিতায় বৈকুণ্ঠের আবৃত্তিসন্ধ্যা ॥ কবিতার শিল্পিত উচ্চারণে মুখরিত হলো মিলনায়তন। দুই বাংলার কবিদের রচিত কবিতায় সজ্জিত ছিল আয়োজনটি। সেসব কবিতার সূত্র ধরে উঠে এলো মানব জীবনের নানা অনুভূতি। শেকড়সংলগ্ন আঞ্চলিক জীবনকে সঙ্গী করে কবিতায় উঠে আসে প্রান্তিক মানুষের কথা। সেই সঙ্গে উচ্চারিত হয় প্রেম-বিরহের অনুভবের কথা। দুই পর্বে বিভক্ত ‘৮ জন আবৃত্তি শিল্পীর আবৃত্তি অনুষ্ঠান’ শীর্ষক আবৃত্তিসন্ধ্যাটির আয়োজন করে বৈকুণ্ঠ আবৃত্তি একাডেমি। সামবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় অনুষ্ঠিত হয় এই আবৃত্তিসন্ধ্যা। আয়োজনের প্রথম পর্বে আবৃত্তি করেন মাহমুদুল হাকিম তানভীর, রাজিয়া জামান নাফিসা, রায়হান নাফিস ও দীনা মিত্র। তারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ, সৈয়দ শামসুল হক, শক্তি চট্টপাধ্যায়, জয় গোস্বামী, আবুল হাসান, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, লিটন মোহন্তের কবিতা আবৃত্তি করেন। দ্বিতীয় পর্বে কবিতা আবৃত্তি নিয়ে আসেন আনভির আনজুম, আঞ্জুমান লায়লা নওশীন, অলি আহমদ পল্লব ও ফাহমিদা আজাদা। তারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জীবনানন্দ দাশ, সলিল চৌধুরী, হুমায়ুন আজাদ, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সুবোধ সরকার, তারাপদ রায়, তসলিমা নাসরিনের কবিতা আবৃত্তি করেন। প্রযোজনাটির নির্দেশক আবৃত্তিকার শিমুল মুস্তাফা জানান, প্রযোজনাটির সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলের গুচ্ছ গুচ্ছ প্রচেষ্টা ও অবদানের ফলেই আয়োজনটি সফল হয়েছে। প্রযোজনাটির শিল্প নির্দেশনায় ছিলেন চারু পিন্টু।
×