ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে আরও ছয় বর্ডার হাট চালু হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১০ জুলাই ২০১৮

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে আরও ছয় বর্ডার হাট চালু হচ্ছে

এম শাহজাহান ॥ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে শীঘ্রই আরও ছয়টি বর্ডার হাট চালু করা হবে। এর মধ্যে ত্রিপুরা সীমান্তে চারটি ও পশ্চিম বাংলা সীমান্তে দুটি বর্ডার হাট চালু সংক্রান্ত যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। বর্তমান সীমান্ত এলাকায় চারটি বর্ডার হাট চালু রয়েছে। বর্ডার হাট চালুর মাধ্যমে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের অঙ্গরাজ্য ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য-বিনিয়োগ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী ২২-২৩ জুলাই দুদিনব্যাপী ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় নতুন বর্ডার হাট চালু সংক্রান্ত জরুরী বৈঠক করতে যাচ্ছেন দুদেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশের অতি নিকটে ভারতের এই রাজ্যটির সঙ্গে ছয়টি বর্ডার হাট চালু হলে উভয় দেশ লাভবান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, সীমান্ত এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়ন এবং তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের চারটি বর্ডার হাট চালু রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে হাটের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি। তবে এ বছর নতুন আরও ছয়টি বর্ডার হাট চালু করার ব্যাপারে দুদেশই ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে প্রথম থেকে কাজ শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার কুরমাঘাট, জুড়ি উপজেলার পশ্চিম বিটুলি, সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সায়দাবাদ, দুয়ারাবাজারের বাগানবাড়ি ও ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার ভূঁইয়াপাড়ায় বর্ডার হাট চালুর কার্যক্রম চলছে। এছাড়া বর্তমানে কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলার বালিয়ামারি, সুনামগঞ্জের ডলুরা, ফেনীর ছাগলনাইয়া ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় তারাপুরে বর্ডার হাট চালু আছে। এদিকে বর্ডার হাট চালু এবং এই হাটের কার্যক্রম বাড়াতে গত মে মাসে বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসুর নেতৃত্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় বর্ডার হাট বিষয়ক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকেই বর্ডার হাট চালুর ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছিল। আর এবার আগরতলায় বর্ডার হাট সংক্রান্ত জয়েন্ট কমিশনের জরুরী বৈঠক হতে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, এই বৈঠকের পর সুবিধাজনক সময়ে আরও ছয়টি বর্ডার হাট চালু করে দেয়া হবে। এ প্রসঙ্গে শুভাশীষ বসু জনকণ্ঠকে বলেন, দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্তে আরও ছয়টি বর্ডার হাট চালু হতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে এসব বর্ডার হাট চালুর প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এছাড়া চালু থাকা বর্ডার হাটগুলোতে বাংলাদেশী পণ্য বিক্রি বাড়ানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, দুদেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজার রাখতে বর্ডার হাটের গুরুত্ব রয়েছে। এতে বাণিজ্যেরও উন্নতি হবে। তবে বর্ডার হাটের নিয়ম নীতি মেনে চলতে হবে। আরও যেসব এলাকায় বর্ডার হাট হতে পারে ॥ দুদেশের কাছে বর্ডার হাটের অর্থনৈতিক গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। এ কারণে ভবিষ্যতে নতুন করে যেসব এলাকায় বাংলাদেশ-ভারতের বর্ডার স্থাপিত হতে পারে তা হচ্ছে-কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ঘোলাশালা ইউনিয়নের জগমোহনপুর গ্রাম, কুষ্টিয়া দৌলতপুরের মুন্সীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিষ্ণপুর গ্রামের দক্ষিণ অংশ, রাজশাহীর গোদাগাড়ী চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের সীমানা পিলারের মধ্যবর্তী স্থান, নওগাঁর সাপাহার শিরন্টি মৌজার খঞ্জন সীমান্ত, নওগাঁর ধামইরহাট কালুপাড়া মৌজার কালুপাড়া সীমান্ত, নওগাঁর পতœীতলা উপজেলার শীতলবাজার সীমান্ত, রাধানগর মৌজার সীমান্ত, শাওলি সীমান্ত, তালতলা পাড়া শাওলি সীমান্ত, ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট গাজীর ভিটা ইউনিয়নের উত্তর নলকুড়া সীমান্ত, ঝিনাইদহের মহেশপুর যাদবপুর ইউনিয়নের গোপালপুর মৌজা, নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার পাঁচগাঁও এবং নেত্রকোনার দুর্গাপুর বিজয়পুর সীমান্তে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এসব এলাকায় বর্ডার হাট স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
×